ঢাকা : রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন সংলাপ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি ফের নাকচ করে দিয়েছেন তিনি।
জেল হত্যা দিবসে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের শহীদ ও ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় নেতাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপিসহ ৪৪টি নিবন্ধিত দলের সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিবকে এই চিঠি দিচ্ছে ইসি।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে শনিবার সকালে ও বিকালে দুই ভাগে ২২টি করে দলের সঙ্গে এই সভা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তবে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক কর্মকর্তা ওই চিঠি নিয়ে গেলেও পরে ফেরত যান।
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আবারো প্রমাণ করেছে তারা সন্ত্রাসী দল। ঢাকায় তারা যে রক্তপাত, তাণ্ডব ঘটিয়েছে এটা তারই প্রমাণ। এরপর এই সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা, তারা সংলাপ করলে এটা তাদের বিষয়।
টানা তিন দিনের পর বিএনপির ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সতর্ক পাহারায় আছি। পাহারা জোরদার করা হবে।
এর আগে সকালে দলের নেতাদের নিয়ে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ওবায়দুল কাদের।
পরে তিনি বলেন, বাসে আগুন দেওয়া, ভাঙচুর করার জন্য বিএনপির প্রশিক্ষিত ভাড়াটে লোক আছে।
কাদের বলেন, বিএনপির কিছু ভাড়া করা লোক আছে, তাদের দলের ভেতরে ট্রেনিংপ্রাপ্ত কিছু দুষ্কৃতকারী আছে, যাদেরকে দিয়ে বাস পোড়াবে, বাসে আগুন দিবে, ভাঙচুর করবে। এসব অপকর্ম করার জন্য অবরোধ ডাকা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৮ (অক্টোবর) তারিখ আবারও প্রমাণ হয়েছে সাম্প্রদায়িক শক্তির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। এরাই জাতির প্রধান দুশমন। শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে সারা জাতির কাছে আহ্বান জানাব, এদেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাকে নিরাপদ করতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে, পরাজিত করতে হবে।
গত ২৭ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে তাণ্ডবের প্রসঙ্গ টেনে সেতুমন্ত্রী বলেন, সেদিন বিএনপি ২৪ জন সাংবাদিকের উপর নৃশংসভাবে হামলা করেছিল, কীভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছিল, হাসপাতালে হামলা চালিয়েছিল, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল।
পার্কিং করা বাসে হেলপার শুয়েছিল, ঘুমন্ত হেলপারকে গাড়িসহ পুড়িয়ে দেয়া হয়। এসব অপকর্মে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকে আটক করা কি দমনমূলক? অপরাধ করলে বিচার হবে না? ২৪ জন সাংবাদিকের উপর সেদিন যে অত্যাচার করেছে, তারা কি দায় এড়াতে পারবে? এটার বিচার হবে না? অপরাধ করলে বিচার হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা আরো ৪৮০০ দিন অবরোধ দিক। গতবারের অবরোধ রয়ে গেছে। এখনো প্রত্যাহার করার লক্ষণ নেই। এরা টায়ার্ড হয়ে গেছে। জেলে, না হয় পালিয়ে হিন্দি সিরিয়াল দেখবে। বসে বসে এখন তো আর কষ্ট নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের আজকে প্রশ্ন, এটা জাতির বিবেকেরও প্রশ্ন, বাংলার মাটিতে এই হত্যা, ষড়যন্ত্র, এই রাজনীতির শেষ কোথায়? আমাদের কাছে মনে হয়, পঁচাত্তর থেকে যে হত্যাকাণ্ড, সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে।
সেই পরাজিত শক্তি বারবার জাতির মর্মমূল, জাতির চেতনায় বারবার আঘাত হেনে চলছে। এরা সাম্প্রদাযয়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। আজকে তারা শেল্টার পেয়েছে। এদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। সম্প্রদায়িক অপশক্তি- পঁচাত্তর থেকে যারা জাতীয় জীবনে নৃশংস ট্রাজেডি সংঘটিত করেছে, তাদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :