ঢাকা: আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্র হতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। এ সময় তিনি 'বিএনপি-জামায়াতের মৌলবাদী কার্যক্রম' থেকে তরুণদের সাবধান থাকার আহ্বান জানান।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত লেটস টক অনুষ্ঠানের ৫১তম পর্বে তিনি এক তরুণের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
সজিব ওয়াজেদ জয় বলেন, আওয়ামী লীগ সেক্যুলারিজমে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হতে দেবে না।
'বর্তমানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও টলারেন্স লেভেল কমে যাচ্ছে কিনা'- তরুণদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর (ধর্মীয়) টলারেন্স লেভেল বাড়াতে পেরেছি। এর আগে রিলিজিয়াস টলারেন্স বলে কিছু ছিল না। বাংলাদেশ উল্টো পথে যাচ্ছিল। সেক্যুলারিজম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। মৌলবাদী দেশ হওয়ার পথে হাঁটছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আওয়ামী লীগ সেক্যুলারিজমে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে মৌলবাদী দেশে পরিণত হতে দেবে না। বাংলাদেশকে সেক্যুলার হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন ছিলো জাতির পিতার। সেটি বাস্তবায়নেই কাজ করছি আমরা।
তবে বাংলাদেশকে বিএনপি-জামায়াত মৌলবাদের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করে গেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে সিআরআই চেয়ারপারসন বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেননা বিএনপি-জামায়াত আজকে যেই হামলা চালাচ্ছে, তারা বাংলাদেশকে সেক্যুলার দেশ হিসেবে দেখতে চায় না। তারা শান্তি চায় না। দেশকে তারা মৌলবাদী দেশের যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। আন্দোলনের নামে তারা সন্ত্রাস চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপর। বিশ্বের যেকোনো দেশে একটি রাজনৈতিক দল এভাবে রাস্তায় সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারলে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা করে তাদের রাজনীতি বাতিল করে দেওয়া হতো। জামায়াতকে তো আমি কোনো রাজনৈতিক দল মনে করি না। তারা যুদ্ধাপরাধীদের দল। জামায়াত হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী ও জঙ্গি দল। কিন্তু এখন বিএনপিও সন্ত্রাসী ও জঙ্গি দলে পরিণত হয়েছে।
এ সময় বিগত তিন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের সহিংস কার্যক্রমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত তিন নির্বাচনে পর্যালোচনা করে দেখেছি। এদেরকে এভাবে যানবাহনে আগুন দিতে একটি শ্রেণী উৎসাহ দিচ্ছে। বিদেশি বিশেষত পশ্চিমা কিছু রাষ্ট্রদূত। ঠিক নির্বাচনের আগে তারা অতিরিক্ত কথা বলা শুরু করে। এই যে জামায়াত একটি যুদ্ধাপরাধীদের দল, জঙ্গি দল। তাদেরকে জঙ্গি সন্ত্রাসী বলবে না। এ ক্ষেত্রে মানবাধিকারের কোনো চিহ্ন নেই। বিএনপি আগুন জ্বালাচ্ছে, মানুষ পোড়াচ্ছে। কিন্তু বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল তারা বলবে না। উল্টো আরও স্পেস দিতে হবে, জায়গা দিতে হবে। আরও মানুষ পোড়াও, আরও মানুষ মারো! আমি তরুণদের বলব, তারা যেনো বিদেশিদের থেকে সাবধান থাকে। তারা চায় বাংলাদেশ যেনো গরীব দেশ হয়ে থাকে। তাদের হুকুম মতো চলে।
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে চাইলে বিএনপি-জামায়াতকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সজীব ওয়াজেদ।
তিনি বলেন, কিন্তু তাদের নিষিদ্ধ করা যেহেতু সম্ভব নয়, তাই আরেকটা উপায় আছে। সেটা হলো- নৌকাকে ভোট দিন। জামায়াতের ভোটার যত কমতে থাকবে, আমাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস তত কমতে থাকবে। আপনারা যদি প্রতি নির্বাচনে নৌকাকে ভোট দেন তাহলে এখন যেমন জামায়াত বলে কিছু নাই, ভবিষ্যতে বিএনপি বলেও কিছু থাকবে না। আর সেইদি বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।
দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে তরুণদের সেতুবন্ধন গড়ে দিতে ২০১৪ সাল থেকে ইয়াং বাংলা ‘লেটস টক’ শিরোনামে এ আয়োজন করছে। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও আয়োজন করা হয় লেটস টক। যেখানে দেশ নিয়ে তরুণদের ভাবনার কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে তরুণদের নিয়ে তার ভাবনার কথাও জানান এই অনুষ্ঠানে।
এমএস