ঢাকা: ছয় দফাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বাক পরিবর্তন করেছিল বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৭ জুন ইতিহাসের বাঁকবদলে মাহেন্দ্রক্ষণ ছিল। ৭৫ এর খুনিরা বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি এসব দিবস এবং ইতিহাসকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীরাই ৭৫ পরবর্তী সময়ে ৭ মার্চ ও ৭ জুন পালন করতে দেয়নি।
ছয় দফা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (০৭ জুন) সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
৬ দফার গুরুত্ব তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৬ দফা হচ্ছে স্বাধীনতার পথে স্বাধিকার-সংগ্রামের ঐতিহাসিক মাইলফলক। এই ৬ দফা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর যে আহ্বান, তার সঙ্গে সারাদেশে ৭ জুন হরতাল আহ্বান করা হয়। সেই হরতালে তেজগাঁওয়ের শ্রমিকনেতা মনু মিয়াসহ বেশ কয়েকজন হরতাল পালনকারী শ্রমিক নিহত হন। এ কথা স্পষ্টভাবে বলা যায়, ৬ দফার ভিত্তিতে ১১ দফা থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছে। এ কারণে ছয় দফার গুরুত্ব অনেক।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে আমাদের ইতিহাসে বাঁক পরিবর্তনকালে, স্বাধীকার-সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে এই শোক দিবস ৭৫ এর পর নিষিদ্ধ করে দেয়। যারা নিষিদ্ধ করে দেয় তারা ৭৫ এর খুনের সঙ্গী। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি, তারা হত্যা করতে চেয়েছিল স্বাধীনতার ইতিহাসকে।
এর আগে, সকাল ৭টায় ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতার স্থপতির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগ এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ১৯৬৬ সালের এই দিনে বাঙালির ম্যাগনা কার্টা ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানিদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৬৬ সালের ৭ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকারের শোষণ, বঞ্চনা, পরাধীনতা ও স্বৈরাচারের অবসান ঘটাতে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে দিনব্যাপী হরতালের ডাক দেয়।
হরতাল চলাকালে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জে সেদিন বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ ও আধা সামরিক ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) গুলি চালালে শ্রমিকনেতা মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হকসহ ১০ জন নিহত হন।
এমএস