• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
দাবি শেখ হাসিনার

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার নেপথ্যে আমেরিকা


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১১, ২০২৪, ১১:৪৪ এএম
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার নেপথ্যে আমেরিকা

ঢাকা : গত সোমবার (৫ আগস্ট) ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতে যাওয়ার পর থেকে একাধিক বার দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা হয়েছে শেখ হাসিনার। এছাড়া ভারতীয় নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁর পরবর্তী আশ্রয়ের ঠিকানা নির্ধারিত হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত নয়াদিল্লিতেই থাকবেন শেখ হাসিনা।

এদিকে কাছের কিছু মানুষের কাছে, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত এবং তার পদত্যাগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন শেখ হাসিনা।

রোববার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার।

এমনকি দেশত্যাগের আগে সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে যে বক্তব্য রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন, তাতেও একই দাবি জানাতে চেয়েছিলেন তিনি, বলছে আনন্দবাজার।  

শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কথা মতো বঙ্গোপসাগরে আধিপত্য বাড়াতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তাদের হাতে তুলে না দেওয়ার মাসুল হিসাবেই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশিদের সতর্ক করেছেন, তাঁরা যেন মৌলবাদীদের হাতে পরিচালিত না হন।

ভারতে পৌঁছানোর পর শেখ হাসিনার সঙ্গে যাঁদের কথা হয়েছে, তাদের সূত্রে আনন্দবাজার জানিয়েছে, 'লাশের মিছিল' যেনো দেখতে না হয়, সেজন্য পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। ছাত্রদের মৃতদেহের উপর ক্ষমতা হস্তান্তর হোক তা চাননি তিনি।

শেখ হাসিনার মতে, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সার্বভৌমত্ব আমেরিকার হাতে তুলে দিয়ে বঙ্গোপসাগরে সে দেশকে ছড়ি ঘোরাতে দিলে হয় তো তিনি ক্ষমতায় থেকে যেতে পারতেন। তবে এটি না করে দেশ ছাড়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আনন্দবাজার আরও জানিয়েছে, পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে আসার আশা প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি মনে করেন, তার দল আওয়ামী লীগ বার বার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আবারও দাঁড়াবে।

প্রতিবেওদনে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে মেরে ফেলা, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো খবরে অত্যন্ত ব্যথিত শেখ হাসিনা।

আনন্দবাজার জানায়, কোটা সংস্কারের প্রশ্নে ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য, বাংলাদেশের ছাত্রদের তিনি আবার জানাতে চান, তাঁদের কাউকে রাজাকার বলেননি তিনি। বরং তাঁর মন্তব্যকে বিকৃত করে ছাত্রদের উত্তেজিত করা হয়েছে। সে দিনের পুর্ণ ভিডিওটি আবার দেখতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

‘ছাত্রদের নিষ্পাপ মনোভাবের সুযোগ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশকে অস্থির করেছে’ বলে অভিযোগ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অভিযোগ, গত মে মাসে আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহ-সচিব ডোনাল্ড লু-এর ঢাকা সফরের সঙ্গে এই ক্ষমতা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের আরও অভিযোগ, ডোনাল্ড লু চিন-বিরোধী কিছু পদক্ষেপ নিতে শেখ হাসিনার উপর চাপ দিচ্ছিলেন।

আওয়ামী লীগের অভিযোগ, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের দখলদারি নিতেই আমেরিকা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে ‘ভিসা নীতি’ চাপিয়েছে। চিনের কৌশলগত মোকাবিলায় আমেরিকা সেন্ট মার্টিন লিজ নিতে আগ্রহী। আয়তনে খুব ছোট হলেও সেখানে আমেরিকা সামরিক ঘাঁটি তৈরি করতে চায়।

আর ক্ষমতায় ফিরতে দ্বীপের লিজ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে বিএনপি-র গোপন বোঝাপড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল, দেখা দিয়েছিল বিতর্ক। দেশত্যাগ করার পর সেই বিষয়টিই নয়াদিল্লিতে কাছের কিছু মানুষদের সঙ্গে কথাবার্তায় জানিয়েছেন শেখ হাসিনা, বলছে আনন্দবাজার।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!