ঢাকা : গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে এখন ভারতে অবস্থান করছেন। এতে নানা কারণে প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে ভারতের উপর। ভারতও চাইছে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে অন্য কোনো দেশে সরিয়ে দিতে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় কয়েকটি দেশে শেখ হাসিনার বসবাসের জন্য চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
জানা গেছে, আর মাত্র কয়েকদিন পর বিনা ভিসায় ভারতে অবস্থানের সময় শেষ হচ্ছে শেখ হাসিনার। এর মধ্যে তাকে অন্যদেশে পাঠাতে হবে নয়তো তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে ভারতে রাখতে হবে। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে রয়েছে যে, ভারতে শেখ হাসিনা অবস্থান করলে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আপাতত এমন কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চাইছে না ভারত। তাই শোনা যাচ্ছে, খুব শিগগিরই শেখ হাসিনার পরবর্তী ঠিকানা ঠিক করা হচ্ছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রশ্ন উঠেছে, ভারত ছাড়লে কোথায় যাবেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী?
এ বিষয়ে ভারত সরকার প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তারা যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তার খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো। খবর প্রকাশ হয়েছে, শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তবে এটা নিয়েও এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যায়নি।
জানা যায়, শেখ হাসিনা এখনও অন্তত চারটি দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব অথবা ফিনল্যান্ডে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল দ্য কনভারসেশনের প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে।
তবে এমন কথা আগেও ছড়িয়েছিল বিভিন্ন মাধ্যমে। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানান, তার মা আপাতত কোথাও যাচ্ছেন না। কোথাও যাবার জন্য আবেদনও করেননি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে তিনি দেশে ফিরবেন বলেও জানান জয়।
ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে ফেরত পাঠানোর সমীকরণটা কেমন হবে? প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত যদি শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর মর্যাদা দেয়, সে ক্ষেত্রে হাসিনাকে ফেরানো কঠিন হবে। তার কারণ কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তবে ঢাকা-দিল্লির মধ্যকার নতুন সম্পর্ক জোরদার করতে হাসিনা ইস্যু ভারতের জন্য অস্বস্তির হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, ভারতীয় সংবাদ সংস্থার পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপি। টিউলিপ যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি মিনিস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি শেখ রেহানার মেয়ে। শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কর্মসূত্রে দিল্লিতে বসবাস করেন।
এমটিআই