পাবনা: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে জামায়াত নেতারা বলেছেন, ‘সংবিধানের দোহাই দিয়ে অযথা সময়ক্ষেপণ করবেন না। কারণ সংবিধান মেনে আন্দোলন হয় নাই৷ সংবিধান দিয়ে ছাত্র জনতা রক্ত দেয় নাই। তাই অযথা সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’
সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে পাবনার বেড়ায় জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।
শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০০৬ সালের লগি বৈঠার তান্ডবে নারকীয় হত্যাকাণ্ড এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ, আলোকচিত্র প্রদর্শণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী বেড়া উপজেলা ও করমজা ইউনিয়ম শাখা।
বেড়া সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ড মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য ও জেলা জামায়াতের কর্ম পরিষদ সদস্য ডা. আব্দুল বাসেত খান।
বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মো. আতাউর রহমানের সভপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
জামায়াত নেতারা বলেন, শেখ হাসিনার বিচার ছাড়া দেশে সংস্কার হতে পারে না। সবার প্রত্যাশা এই সরকার শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনবে। যারা জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল বাংলার মাটিতে আজ তারাই নিষিদ্ধ। কারণ জামায়াত ইসলামী কোনো ভেসে আসা দল নয়। আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা হবে। এদেশে কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।
বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সমাবেশে বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়েছিল। লগী বৈঠা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ওপর তান্ডব চালিয়েছিল। ছাত্র জনতাকে হত্যাকারী হিসেবে খুনী হাসিনার ফাঁসি দিতে হবে। নিজে কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না।বাংলাদেশকে কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে ক্ষমার দুয়ার খোলা রাখতে হবে।
জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে অতিষ্ঠ অসহায় হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে। মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে। দ্রব্যমূল্য মানুষের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। বর্তমান সরকারকে এই জায়গায় কাজ করতে হবে। জামায়াত ইসলামী ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক যুবককে ১০ লাখ টাকা করে সুদমুক্ত ঋণ দেয়া হবে। এতে ঘরে ঘরে গড়ে ওঠবে শিল্প প্রতিষ্ঠান, খামার। যুবকরা বিপথ থেকে কর্মক্ষম হবে। এর মাধ্যমে দেশ এগিযে যাবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, আমরা ২০ বছর বৃহত্তম জোটের সাথে ছিলাম। একসাথে জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছি। বিএনপিসহ সকলের সাথে মিলে আগস্ট মাসের সফলতা ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। একসাথে কাজ করতে হবে যাতে ফ্যাসিস্ট সরকার আর ফিরে আসতে না পারে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বেড়া পৌর জামায়াতের আমীর জাহাঙ্গীর আলম সেলিম, বেড়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোজাম্মেল হক, আইন সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর ইমরান হোসেন, কৈটোলা ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি সুজন মাহমুদ প্রমুখ।
এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বেড়া পৌর সদরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামদ-নাত পরিবেশন করেন ইসলামী সঙ্গীত শিল্পীরা।
এসএস