ঢাকা : ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত জাতীয় পার্টি এরই মধ্যে গুরুত্ব হারিয়েছে। ডাক পাচ্ছে না সরকারের সংলাপেও। কাছে টানছে না কোনো রাজনৈতিক দল। সব মিলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভবিষ্যৎ কী, এমন প্রশ্নে জাতীয় পার্টি বলছে, জনগণই তা ঠিক করবে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর সেনাসদর ও বঙ্গভবনে ডাক পেয়েছিল জাপা। কিন্তু স্বৈরশাসনের সহায়ক ভূমিকার জন্য কোণঠাসা দলটি। সবশেষ সরকারের রাজনৈতিক সংলাপেও আমন্ত্রণ পায়নি। এ অবস্থায় রাজনীতির মাঠে গুরুত্ব পাচ্ছে না জাতীয় পার্টি।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বা সমঝোতা করে ক্ষমতার স্বাদ নিয়েছে জাতীয় পার্টি। ২০০৯ থেকেই সুবিধাভোগী হিসেবে অভিযুক্ত দলটি। ভোটারবিহীন নির্বাচনে অংশ নেওয়া ও প্রধান বিরোধীদলে হয়েও মন্ত্রিপরিষদে থাকা দলটির নীতি-আদর্শ পড়ে প্রশ্নের মুখে।
দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কে ডাকল আর ডাকল না এর সাথে তো রাজনীতির সম্পর্ক নেই, সংগঠনের সম্পর্ক নেই। ওনারা ডাকবেন প্রয়োজনে, আমাদের ডাকতে হবে এমনও কোনো কথা নেই। জাতীয় পার্টির অস্তিত্বের প্রশ্ন জনগণের কাছে।
১৪ অক্টোবর ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেও মাঠে ছিলো না জাতীয় পার্টি। ২৮ অক্টোবর রাতে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি ভাঙচুর করলেও নিশ্চুপ দলটি।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে সরকারের তরফ থেকে কোনো বাঁধা আমরা এখনও দেখিনি। ব্যক্তিগত বা দলীয়ভাবে যদি কোনো বাঁধা আসে, তাহলে রাজনৈতিকভাবে তা মোকাবিলা করা হবে। দেশে আইন আছে, আমরা আইনের আশ্রয় নেব।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় পার্টি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তাদের কঠিন সময় পার করতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘শুধু ক্ষমতার কারণে এগিয়ে গেছে জাতীয় পার্টি। এখন সেই সময় নেই। যদি তাঁরা এখন জনগণের সাথে থাকে তাহলে জনগণকে তুষ্ট করে এগিয়ে যেতে পারে।’
নীতি-আদর্শে না থেকে সুবিধাবাদী নতজানু রাজনৈতিক অবস্থানের কারণেই জাতীয় পার্টি সংকটে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এমটিআই