ঢাকা : যুক্তরাজ্যের ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙ্গা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে দেশ রূপান্তরকে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘লন্ডনের হাসপাতালে অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে কার্ডিওলজিস্ট ও নেফ্রোলজিস্টসহ লন্ডনের স্বনামধন্য পাঁচ-ছয়জন চিকিৎসকের টিম নিয়মিত তার চিকিৎসা করছে। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল পাওয়ার পর আগামী দু-এক দিনের মধ্যে চিকিৎসকরা পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করতে পারবেন।’
জাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটা চাঙ্গা। কারণ অনেকদিন পর পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়েছেন। তারেক রহমান প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা করে হাসপাতালে সময় দিচ্ছেন। তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান নিয়মিত বাসা থেকে খাবার রান্না করে নিয়ে আসছেন। আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমানও হাসপাতালে যাচ্ছেন। তারেক রহমানের মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানসহ তিন নাতনিও নিয়মিত হাসপাতালে তার দেখভাল করছেন। এভাবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলতে থাকলে এবং তিনি পারিবারিক আবহে থাকলে শিগগির দেশবাসীকে সুনির্দিষ্ট করে ‘ভালো খবর’ দেওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন ডা. জাহিদ।’
এর আগে গত রবিবার ডা. জাহিদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়ে ছিলেন, খালেদা জিয়াকে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হয়েছে। হুইল চেয়ার ছাড়া কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করেছেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনের ‘দ্য ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হয়। ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
শুক্রবারের মধ্যে সব রিপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে : ডা. জাহিদ
আগামী শুক্রবারের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় নিয়মিত ব্রিফিংয়ে লন্ডন দ্য ক্লিনিক হাসপাতালের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা জানান।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, নেফ্রোলজি কনসালট্যান্ট, হেপাটোলজি কনসালট্যান্ট ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টসহ বিভিন্ন বিষয়ে ডাক্তাররা প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। পরীক্ষার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কিছু কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ ছাড়া অতীতে বাংলাদেশে উনার যেসব চিকিৎসা হয়েছে এখন কিছু কিছু চিকিৎসার পরিবর্তন এনেছেন ডাক্তাররা। খালেদা জিয়ার লিভার ডিজিজ এবং হার্টের যে সমস্যা রয়েছে সেগুলোর রিপোর্ট এখনো কমপ্লিট হয়নি।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার সব রিপোর্ট হাতে পেতে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। শুক্রবারের মধ্যে ডাক্তাররা চেষ্টা করবেন যাতে পরবর্তী চিকিৎসা সম্পর্কে একটা প্ল্যান করা যায়। চিকিৎসকরা এখন চিকিৎসায় অতিদ্রুত যেসব পরিবর্তন আনা দরকার তা আনছেন। উনার পরবর্তী চিকিৎসা কতটুকু প্রয়োজন বা কতটুকু দরকার সে বিষয়েই এখন আলোচনা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে দেশবাসী যেমন উদ্বিগ্ন ঠিক তেমনি এখানকার চিকিৎসকরা খুব ভালোভাবে উনার টেককেয়ার করছেন।
এমটিআই