ঢাকা : রাজধানীবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে ধানমন্ডি লেক থেকে নতুন নৌপথ চালুর উদ্যোগ নিয়েছিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, ধানমন্ডি লেক থেকে পান্থপথের বিদ্যমান রাস্তায় দখল হওয়া খাল পুনরুদ্ধার করে নৌপথ যুক্ত হবে হাতিরঝিলের সঙ্গে।
হাতিরঝিল থেকে গুলশান হয়ে বারিধারা পর্যন্ত বর্ধিত হবে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নৌপথ। আর এই প্রকল্পটির অর্থায়ন করবে রাজউক। যানজটে নাকাল নগরবাসীকে এমন এক স্বপ্ন দেখিয়েই থেমে আছে রাজউক। দীর্ঘ নৌপথ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে তাদের কার্যক্রমে আর কোনো অগ্রগতি নেই।
কয়েকমাস আগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বোর্ড সভায় ধানমন্ডি লেক থেকে পান্থপথের বিদ্যমান রাস্তায় দখল হওয়া খাল পুনরুদ্ধার করে নৌপথ তৈরি করে হাতিরঝিল দিয়ে বারিধারা পর্যন্ত করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। ওই সময় রাজউকও ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ নৌপথ তৈরির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড শুরু করে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও করে রাজউক। সেইসঙ্গে বুয়েটও এই প্রকল্পের ফিজিবিলিটি টেস্ট করতে উদ্যোগী হয়। কিন্তু রাজধানীর বুকে এই নৌপথ তৈরির কার্যক্রম এ পর্যন্তই থেমে আছে।
এই নৌপথের বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করছিলেন রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ এবং ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিচালক আশরাফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ধানমন্ডি লেক থেকে পান্থপথের বিদ্যমান রাস্তায় দখল হওয়া খাল পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নৌপথটি হাতিরঝিলের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছিলাম। এই নৌপথটি আবার হাতিরঝিল থেকে গুলশান হয়ে বারিধারা পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য পরিকল্পনা আমাদের অব্যাহত আছে। এর সার্বিক বিষয় নিয়ে বুয়েটের সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছে। তারা আমাদের ফিডব্যাক জানাবে। কিন্তু করোনাকালে বুয়েট এখন বন্ধ, তাই এটির কোনো অগ্রগতি এখন নেই।
এদিকে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে ২৬টি খাল দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর বাইরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে থাকা রাজধানীর ১৭টি খাল, জলাশয় রয়েছে। এই খাল ও জলাশয়গুলোও দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ মে জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা মহানগরীর খাল ও প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সেই সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে আহ্বায়ক করে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ, সংস্থা ও দফতরের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি একটি রিপোর্ট প্রদান করবে। রিপোর্ট অনুযায়ী হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এসব খাল, জলাশয়ের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মালিকানা যদি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাছে চলে যায় তাহলে নৌপথের এই কাজ আর করতে পারবে না রাজউক।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :