ঢাকা: রাজধানীর ধানমণ্ডির ল্যাব এইড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় কলেজছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। নিহত তাহসিন হোসেন (১৭) হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো।
শুক্রবার দুপুরে ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত তাহসিনের পরিবারের সদস্যরা আহাজারি করছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, পেটের ব্যাথার অপারেশন করার পরে তিন মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অপারেশন করা হলেও সুস্থ হওয়ার বদলে দিন দিন স্বাস্থ্যের অবনতি হয়ে অবশেষে আজ মৃত্যু হয় তাহসিনের।
নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. মনির হোসেন বলেন, আমার ছেলে মার্চ মাসে পেটের ব্যাথায় ভুগছিল। পরে ঢাকা মেডিকেলে গেলে চিকিৎসকরা অপারেশনের পরামর্শ দেয়। পরে মার্চের ২৭ তারিখ হাসপাতালে ভর্তি হয়। ২৮ তারিখ সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার সাইফুল্লাহ প্রথম অপারেশন করেন। কিন্তু অপারেশনের পরেও আমার ছেলের রক্ত বের হচ্ছিল। কিন্তু সেটা বলার পরেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ৬ এপ্রিল সকালে একই চিকিৎসক আবারও অপারেশন করেন। তবুও রক্ত ঝরা বন্ধ হয়নি। এমনকি অপারেশন করে পেট থেকে নাড়ির একটা অংশ কেটে দেয়। এভাবেই গত তিন মাস ধরে চিকিৎসা চলছিলো।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ করে মনির হোসেন আরও বলেন, গত তিন মাসে আমার ছেলে শরীরে ১৫০ ব্যাগের বেশি রক্ত দেওয়া হয়েছে, ৯০ ব্যাগের বেশি প্লাজমা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে তার শারীরিক কোনো উন্নতি হয় নি। বরং ধীরে ধিরে খারাপ হয়েছে। অথচ কোনো রকম জবাবদিহি ছাড়া এখন পর্যন্ত ৩০ লাখ টাকা নিয়েছে।
নিহত শিক্ষার্থীর মা স্কুল শিক্ষক তাজভীন ভূইয়া বলেন, আমার ছেলেটা মেধাবী ছিলো। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিলো। ওরা আমার ছেলের স্বপ্ন শেষ করে দিলো। এটা একটি হত্যা, আমি এর বিচার চাই। ভিটা-বাড়ি বিক্রি করে হাসপাতালে টাকা দিয়েছি কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা আমার ছেলের লাশ ধরিয়ে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ল্যাব এইড হাসপাতালের মিডিয়া কর্মকর্তা মেহের এ খোদা দীপ বলেন, আপনার ভালো একটা ইস্যু পেয়েছেন। এ বিষয় আমি কিছু জানি না। জেনে জানাতে হবে। এরপর একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।
সোনালীনিউজ/এআর