ঢাকা: পবিত্র রমজান মাসে মানুষকে জিম্মি না করে ন্যায্য দামে পণ্য বিক্রির আহ্বান জানানো হয়েছিল। শাহজাহানপুরের খলিল, মিরপুরের উজ্জ্বল বা পুরান ঢাকার নয়ন- ৬০০ টাকার কমে মাংস বিক্রি করে সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে সিন্ডিকেটকারীদের লজ্জা দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরের লালমাটিয়ায় উজ্জ্বল গোশত বিতান পরিদর্শন করে ভোক্তার ডিজি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, যারা রমজানকে পুঁজি করে মানুষকে জিম্মি করে তাদেরও উজ্জ্বলরা লজ্জা দিয়েছেন।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, খলিল-উজ্জ্বল-নয়নরা কোনো কোটিপতি ব্যবসায়ী না। একেকজন সাধারণ ব্যবসায়ী। তারা মানবিক ডাকে সাড়া দিয়ে কেউ ৫৯৫ টাকায় কেউ ৫৭০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করছেন। আমাদের দুর্নাম আছে, রমজান এলেই কিছু মানুষ অতি মুনাফা করে। রমজান উদ্দেশ্যই হলো কৃচ্ছ্রতা সাধন, সিয়াম সাধনা করবো। এসব মানুষ রমজানকে প্রফিটের মাস মনে করে, এটা রমজানের সাথে যায় না। তারা ৬০০ টাকা দরে মাংস বিক্রি করে যদি লোকসান না করে, তাহলে যারা ৮০০ টাকায় বিক্রি করে আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। তাদের লজ্জা হোক যারা প্রতি কেজি মাংসে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা মুনাফার নামে মানুষের পকেট কাটছে, তাদের ধিক্কার জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কথা শুনে জনগণ রোজার শুরুতে বেশি বেশি করে পণ্য কেনেনি। আজকে রোজায় ব্যবহৃত ছোলা, বেগুন, লেবুর মত পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। আর উজ্জ্বল বা খলিলরা সেই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, মানবিক ডাক সাড়া দিয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করছে। এ জন্য খলিলকে আমরা সম্মানিত করেছি। উজ্জ্বল-নয়নকেও আমরা সম্মানিত করতে চাই।
মাংস দোকানি উজ্জ্বলকে কে বা কারা হুমকি দিয়েছিল। ভোক্তার ডিজি সে ব্যাপারে কথা বলেন। তিনি বলেন, উজ্জ্বল যে কাজটি করেছে, সেজন্য তার নিরাপত্তা দরকার। এ কারণে আমি এখানে এসেছি। সরকারের পুলিশ ও গোয়েন্দার বিভাগের লোকজন তার সাথে থাকবে।
এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, পাশের দোকানে যেখানে ৭৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করে সে সময় উজ্জ্বলকে পরোক্ষ-প্রত্যক্ষভাবে ভয় দেখানো হয়। রাজশাহীতে একজনকে হত্যা করা হয়েছে। এগুলো তারা করেছে যারা ১৮ কোটি মানুষকে জিম্মি করেছে। আমরা উজ্জ্বলকে ধন্যবাদে দিতে এসেছি। তারা বিপ্লব ঘটিয়েছে, যা পণ্য বাজারের ওপরে ধাক্কা তৈরি করেছে। আমি আশা করছি কয়েকদিনে মধ্যে গরুর মাংস প্রতিটা দোকানে ৭০০ টাকা নিচে চলে আসবে। খলিল, উজ্জ্বলরা এটা করেছে তাদের কাটতি বেড়েছে। অন্যরাও এটা করতে বাধ্য হবে।
ভোক্তার ডিজি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আরও বলেন, গরুর মাংস ৫০০ টাকা দরেও বিক্রি করা সম্ভব। এর জন্য আমাদের কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। এ কাজগুলো সব আমার নয়। যেমন, চামড়ার যৌক্তিক দাম বাড়াতে হবে। যৌক্তিক দাম নিশ্চিত করা করা গেলে চামড়ার দামেই প্রতি কেজি মাংস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমানো সম্ভব। আমাদের এখনও পরিবহনের সমস্যা আছে। এর করতে হবে। এগুলো বন্ধ করা গেলে আরও কম দামে মাংস বিক্রি করা সম্ভব।
কেজি দরে তরমুজ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডিজি বলেন, যারা বিক্রি করছে তারা কিনেছে শত হিসেবে। সেভাবেই অর্থাৎ পিস হিসেবে বিক্রি করতে হবে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করেছি, আজকেও সারা দেশে কাজ করা হয়েছে।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :