ঢাকা : সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল কবে নাগাদ চালু করা যাবে সেটি বলতে পারছে না এটি পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড- ডিএমটিসিএল।
হামলার এক সপ্তাহ পর বুধবার (২৪ জুলাই) সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএএন সিদ্দিক বলেন, কবে নাগাদ চালু করতে পারব, তা এখনই বলা যাবে না, বলার মত সময়ও এখনো আসেনি।
গত ১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে মেট্রোর লাইনের নিচে মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ফুটব্রিজে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনের মধ্য দিয়েই একটি ট্রেন ছুটে যায়। পরে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরদিন সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় একদল মানুষ। তারা টিকেট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয় একই দিন। সেখানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষতি হয়েছে।
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন মেরামতে এক বছর সময় লেগে যাবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল প্রধান। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক যন্ত্রপাতিই মেরামতযোগ্য অবস্থায় নেই। এগুলো নতুন করে আমদানি করতে হবে।
এই যন্ত্রগুলো তৈরি করা থাকে না এবং অর্ডার দেওয়ার পর সরবারহকারী প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, সব মিলিয়ে একটা দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়।
সেই সংঘাতের মধ্যে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে জারি হওয়া কারফিউ শিথিলের মেয়াদ ধীরে ধীরে বাড়ার পর নগরে বাস, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার চলাচল শুরু হয়েছে, সীমিত পরিসরে শুরু খুলেছে ব্যাংক-বীমা, পুঁজিবাজার।
ছয় ঘণ্টায় আসা যাওয়া করা সম্ভব, এমন দূরত্বে ট্রেন চালু হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে। আন্তঃনগর ট্রেনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে সেদিন। তবে মেট্রোরেল সীমিত পরিসরে হলেও আবার চালু হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো বক্তব্যই আসেনি।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে ডিএমটিসিএল এমডি এমএন সিদ্দিক বলেন, কবে চালু হবে সেই ভাবনার মধ্যেই আমরা নেই। কারণ, ক্ষতির পরিমাণটা অনেক বেশি।
এই হামলায় আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণে রোববার ডিএমটিসিএল আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়াকে, সদস্যসচিব করা হয়েছে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতেখার হোসেনকে। কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
১৮ জুলাই হামলা হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিটিভি ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, সেতু ভবন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও। হামলাকারীরা এসব স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসকে আসতেও বাধা দেয়।
১৮ জুলাই শুরু হওয়া সহিংসতায় ছাত্রসহ প্রায় দুইশ মানুষের মৃত্যুর তথ্য এসেছে গণমাধ্যমে। আহত মানুষের সংখ্যা কয়েকশ।
কয়েকদিন যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, উত্তরা, মোহাম্মদপুরের পরিস্থিতি ছিল শোচনীয়। শুক্রবার মধ্যরাতে কারফিউ জারির পরেও সংঘর্ষ হয়েছে যাত্রাবাড়ী, রামপুরায়। তবে সোমবার থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল হয় ঢাকায়।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :