ঢাকা : টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত শেষে পায়ে হেঁটে ফিরতি পথ ধরেছে মানুষের স্রোত। দুর্ঘটনা এড়াতে রাজধানী থেকে উত্তরামুখী সড়কগুলোর দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মানুষ তাতে অংশ নেয়।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার দুপুর থেকেই বাস, ট্রাক, কার, মাইক্রোবাস, ট্রেন, লঞ্চে করে টঙ্গীর পথে মানুষের ঢল নামে।
তাদের যাতায়াত সহজ করতে শনিবার রাত ১০টা থেকে গাজীপুরের তিনটি সড়কে ইজতেমাগামী যাত্রীদের যানবাহন ছাড়া সাধারণ যান চলাচল বন্ধ করে দেয় গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশ।
সারা রাত ধরেই ইজতেমা ময়দানের পথে মানুষের স্রোত চলে। অনেকে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে ইজতেমা মাঠের কাছাকাছি পৌঁছান।
সকাল সাড়ে ৯টায় আখেরি মোনাজাত শেষে সবাই ফিরতি পথ ধরেন। রাস্তা বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটেই তাদের রওনা হতে হয়।
পুলিশের ট্রাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার হাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকামুখী রাস্তাগুলোতে স্রোতের মত মানুষ হাঁটছে। তাই আমরা এসব সড়কে যাত্রীবাহী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছি। এর মধ্যেই কিছু ছোট যানবাহন ছাড়া হচ্ছে। বড় যানবাহন ছাড়তে আরো কিছুক্ষণ সময় লাগবে।
একটি রেন্ট এ কার কোম্পানির গাড়িচালক মো. শাকিল বলেন, তার গাড়ি ব্যবহারকারী গুলশান ১ নাম্বারে যাবেন। কিন্তু তিনি গাড়ি নিয়ে জাহাঙ্গীর গেটে এসে আটকা পড়েন। পরে তার গাড়ি ব্যবহারকারী নেমে হাটা দিয়েছেন। তিনি গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।
ফেইসবুকের ট্রাফিক অ্যালার্ট গ্রুপে পোস্ট দিয়ে রাস্তার যানজটে অনেকক্ষণ আটকে থাকার কথা জানিয়েছেন অনেক মানুষ।
বুশরা তাবাসসুম নামে একজন লিখেছেন, আপনি ভাগ্যবান হলে কাকলী বনানী পর্যন্ত গাড়িতে আসতে পারবেন। আর না হলে জাহাঙ্গীর গেটই আপনার লাস্ট স্টপেজ।
এ এস এম লিথুন লিখেছেন, মেরুল বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক ইউনিভারসিটির সামনে রাস্তা আটকে দিয়েছে পুলিশ।
গুলশান বনানী এলাকার জ্যাম ছড়িয়েছে হাতিরঝিলেও। হাতিরঝিলে অনেকক্ষণ ধরে আটকে থাকা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ মশিউর রহমান বলেন, মোটরসাইকেল নিয়েও কোনো দিকেই যেতে পারছি না। ইজতেমার বিষয়টা মাথায় ছিল না, তাহলে এ সময় অন্যদিকে যেতাম।
ইজতেমার কারণে ময়মনসিংহ ও গাজীপুর রোডের বাসগুলো ছেড়ে যায়নি। সেগুলো মহাখালীতে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখায় ভোগান্তি বেড়েছে।
ফেইসবুকের ট্রাফিক অ্যালার্ট গ্রুপে সুদীপ্ত টি অর্ণব লিখেছেন, সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটে মহাখালী রাস্তার উপর তিন সারিতে পার্ক করে রাখা হয়েছে বাসগুলো। কি একটা অবস্থা!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌখিন পরিবহন বাসের মালিক (অংশীদার) শেখ নুরুদ্দিন বলেন, টঙ্গীতে ইজতেমার কারণে তারা গাড়ি ছাড়তে পারেননি। তবে তাদের কোম্পানির অনেক গাড়ি টঙ্গীতেই রয়েছে, যেগুলো ইজতেমায় আগতদের পরিবহনের জন্য ভাড়া করা হয়েছে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :