ঢাকা : মানব জীবনে পেশা হচ্ছে চলমান সমাজে একটি আলোচিত বিষয়। সমাজে বিভিন্ন ব্যক্তি নিজ নিজ যোগ্যতা, চিন্তাশক্তি ও ব্যক্তিগত দক্ষতা ও পারদর্শিতার ভিত্তিতে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছেন। পেশাজীবীদের জন্য আজ পৃথিবীর চাকা সচল। তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো পেশার ধরন, পেশার নিয়ম-কানুন, পেশার প্রকারভেদ, পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়সহ ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল করা। সমাজের ফলপ্রসূ ও প্রয়োজনীয় পেশায় আত্মনিয়োগ করা। নিয়োজিত পেশা দ্বারা যেন সমাজের অপরাপর মানুষেরা উপকৃত হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।
একটি হালাল পেশা একজন মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতের মুক্তির পথ নির্ধারণ করে দেয়। সে হিসেবে কাজ ও পেশা ইসলামের দৃষ্টিতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। তাছাড়া দুনিয়া ও আখেরাতের কাজে লিপ্ত থাকা মানুষকে আল্লাহর পথে জিহাদকারী মুজাহিদের মর্যাদা দান করা হয়েছে। এ বিষয়ে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য চেষ্টা করে, তার উদাহরণ সেই ব্যক্তির মতো, যে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে।’ এছাড়া পেশা ব্যক্তিগত জীবনের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করার পাশাপাশি হালাল পন্থায় অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে নিজের ও নিজের পরিবারের সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনের গতি ঠিক রাখে। সেই সঙ্গে ওই পেশা তাকে সমাজের অর্থনৈতিক, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক দরিদ্রতা মোচনেও পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। ফলে সমাজে বসবাসকারী অপরাপর নাগরিকের সঙ্গে স্থাপিত হয় সুসম্পর্ক। পক্ষান্তরে অলস ও বেকার ব্যক্তিরা সর্বদা মানসিক অশান্তি, বিষণœতা এবং বিবেকের তাড়নায় জ্বালাময় আজাবে দিন অতিবাহিত করতে থাকে।
একটি সুন্দর পেশা নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সৃজনশীল মানসিকতাকে জাগ্রত করে তোলে। নিজের পছন্দনীয় কাজে নিযুক্ত থাকা, মানুষের কৃতিত্ব ও সৃজনশীলতার মনমানসিকতাকে জীবিত করে। তাদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা যোগ্যতা ও সম্ভাবনাকে প্রস্ফুটিত করে এবং মানুষকে তার অভ্যন্তরে লুক্কায়িত শক্তি সম্পর্কে অবহিত করে। আর এভাবেই সে নিজেকে একজন উপকারী ও কার্যকরী শক্তি হিসেবে বিশ্বাস করতে শেখে এবং তার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। নিজেকে একটি উপকারী ও প্রয়োজনীয় পেশায় নিয়োজিত রাখার মাধ্যমে একজন মুসলমান নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
এমটিআই