ঢাকা : রোববার (১৫ অক্টোবর) থেকে ৩ ও ১৫ দিনের ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরদের ১৫ অক্টোবর থেকে ৩ ও ১৫ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
বর্তমানে অপারেটরদের ৯৫ ধরনের প্যাকেজ আছে। তাদেরকে প্যাকেজ সংখ্যা ৪০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করার নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। এখন থেকে মানুষকে অন্তত সাতদিন মেয়াদি প্যাকেজ কিনতে হবে। সাত দিনের প্যাকেজের দাম তিন দিন মেয়াদি প্যাকেজের চেয়ে বেশি। ফলে মানুষের ব্যয় বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের মাই জিপি অ্যাপে রবিবার সকালে দেখা যায়, তিন দিন মেয়াদের এক গিগাবিট (জিবি) ডাটার প্যাকেজ নেই। সাত দিন মেয়াদে তিন জিবি ডাটা কিনতে ব্যয় হবে ৯৮ টাকা এবং একই মেয়াদে ১০ জিবি নিলে দাম পড়বে ১৬৯ টাকা। তবে অ্যাপে এক দিনে ৫১২ মেগাবাইটের ২৮ টাকার প্যাকেজটি সেখানে দেখা গেছে।
টেলিকমিউনিকেশন খাতের বিশেষজ্ঞ ও ভোক্তা অধিকার সংস্থার মতে, এর মাধ্যমে ভোক্তাদের পছন্দের স্বাধীনতা সীমিত করা হলো। এই উদ্যোগটি তৃণমূল, নিম্ন-আয়ের ও তরুণদের ওপর আর্থিক প্রভাব ফেলবে এবং এর কারণে টেলিকম পরিষেবা, বিশেষত ইন্টারনেটের ব্যবহার কমবে।
১৫ অক্টোবর থেকে মোবাইল ব্যবহারকারীরা ৭ বা ৩০ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ কেনার সুযোগ পাবেন। অনির্দিষ্টকাল মেয়াদে ডেটা প্যাকেজ কেনার সুবিধাও থাকছে।
বিটিআরসির ভাষ্য, তারা মোবাইল ব্যবহারকারীদের ওপর জরিপ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, গ্রাহকরাও অফার প্যাকেজ সীমিত করার পক্ষে। তবে, মোবাইল অপারেটররা বলছে, বিটিআরসির জরিপে এমন ধরনের প্রশ্ন ছিল, যা উত্তরদাতাদের উত্তরকে প্রভাবিত করেছে।
গত ৩০ মে বিটিআরসির জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখা অনেক গ্রাহকও বলেন, তারা আরও প্যাকেজ চান, বিশেষ করে ওটিটি ব্যবহার ও শিক্ষার্থীদের জন্য।
মোবাইল অপারেটরদের এত ধরনের প্যাকেজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন টেলিযোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।
বিষয়টি নিয়ে মোস্তফা জব্বার বলেন, আগে তারা ৩০০ ধরনের প্যাকেজ অফার করত। এখন ৯৫ ধরনের প্যাকেজ দিচ্ছে। গ্রাহকদের পক্ষে কি ৯৫ ধরনের প্যাকেজ থেকে সব মনে রেখে পছন্দের প্যাকেজ বাছাই করা সম্ভব? এর মাধ্যমে মানুষ চরম মাত্রায় বিভ্রান্ত হচ্ছে। তাই আমরা এর সংখ্যা কমিয়ে ৪০ এর মধ্যে নিয়ে আসতে বলেছি।
এই উদ্যোগ গ্রাহকদের পছন্দের স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপারেটরদের স্বৈরাচারী মনোভাব ভাঙতে একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
বিটিআরসির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে মোবাইল অপারেটররাও।অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) সাবেক মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির গণমাধ্যমকে বলেন, তৃণমূলের মানুষের একটি বড় অংশ যোগাযোগের পাশাপাশি বিনোদন ও অন্যান্য কাজে ডেটা ব্যবহার করে। তারা বেশিরভাগ সাশ্রয়ী মূল্যের ৩ দিনের প্যাকেজ বেছে নেন।
যদি স্বল্প ব্যয়ে স্বল্প সময়ের জন্য ডেটা কেনার বিকল্পটি বাদ দেওয়া হয়, তবে সেটি তাদের পক্ষে খুব অসুবিধাজনক হবে। গ্রাহকদের সবসময় বিকল্প বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা থাকা উচিত।
এমটিআই