ঢাকা : গবেষণায় প্রাণঘাতী হৃৎস্পন্দন বা হার্টের সমস্যার ‘সঠিক’ পূর্বাভাস মিলেছে এআইয়ের সহায়তায়। হার্ট অ্যাটাকের আগে মানুষের প্রাণঘাতী হৃৎস্পন্দের পূর্বাভাস কেমন হতে পারে, ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের লেস্টার শহরে হওয়া যুগান্তকারী এ গবেষণায় সে তথ্য মিলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অব লেস্টার’ ও ‘ইউনিভার্সিটি হসপিটালস অব লেস্টার এনএইচএস ট্রাস্ট’-এর নেতৃস্থানীয় হার্ট বিশেষজ্ঞ ড. জোসেফ বার্কার ও অধ্যাপক আন্দ্রে এনজি এ গবেষণা প্রকল্পের সর্বশেষ ফলাফলের কিছু চুম্বক অংশ ‘ইউরোপীয় হার্ট জার্নাল ডিজিটাল হেলথ’-এ প্রকাশ করেছেন।
হার্টের বহুল আলোচিত এ সমস্যা ‘ভেন্ট্রিকুলার অ্যারিথমিয়া (ভিএ)’ নামে পরিচিত। এটি হার্টের এমন এক সমস্যা, যার ফলে হার্টের নিচের অংশ অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে স্পন্দিত হতে থাকে। এর ফলে রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যেতে পারে, যে কারণে মানুষ চেতনা হারাতে পারে। এমনকি গুরুতর ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না করালে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। তাই এই ভীতিকর অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে কোনো ধরনের রোগীরা আছেন ও ডাক্তাররা সেটি কীভাবে জানতে পারবেন, তা বিকাশের দিকে নজর দিয়েছিল এ গবেষণা দলটি।
এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার রিসার্চ (এনআইএইচআর)’ লেস্টার বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের ড. বার্কার আর তাকে সহযোগিতা করেছেন ‘বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিশেষজ্ঞ ড. জিন লি। এ ক্ষেত্রে গবেষকরা একটি এআই টুল তৈরি করেছেন, যেখানে ‘হল্টার মনিটর’ পরিয়ে ২৭০ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির হৃৎস্পন্দনের তথ্য ‘ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজি’ বিশ্লেষণ করা হয়েছিল।
এদিকে ‘ভিএ-রেসনেট-৫০’ নামের এআই টুলটির কাজ ছিল ইসিজির তথ্য পর্যালোচনা করে হৃৎস্পন্দনের ভিত্তিতে রোগীর প্রাণঘাতী আরিথমিয়া বিকাশের ঝুঁকি অনুমান করা। সাড়া জাগানো এ গবেষণার ফলাফলে প্রচলিত বিভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থার তুলনায় ৮০ শতাংশ সময় সঠিকভাবে হার্টের অবস্থা শনাক্ত করেছে এআই টুলটি। প্রফেসর এনজির মতে, প্রচলিত বিভিন্ন চিকিৎসা নির্দেশিকা ‘ভেন্ট্রিকুলার অ্যারিথমিয়া’র উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে না। ফলে প্রতিরোধের সম্ভাবনা থাকার পরও অনেক রোগেই মানুষের মৃত্যু ঘটে থাকে।
এমটিআই