ঢাকা : জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই সাধারণ মানুষের। অনেকের আবেদন মাঠ পর্যায়েই পড়ে থাকে বছরের পর বছর এমন অভিযোগ আছে বিস্তর। এ অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়।
ফলে অনেকেই দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার মতো দণ্ডনীয় কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কারো আবেদন বাতিল হলে চারবার আপিল করার সুযোগ সৃষ্টি করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাগরিকদের ভোগান্তি দূর করতে এবং দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার অপচেষ্টা রোধ করার লক্ষ্যে এনআইডি সংশোধনের জন্য একটি নীতিমালা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কারো আবেদন বাতিল হলে তিনি সেই বাতিল আদেশের বিপক্ষে আরো চারবার আপিলের সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া আবেদন যাতে কারো টেবিলে বছরের পর পড়ে না থাকে, সেজন্যও একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। এতে কারো আবেদন সংশোধনযোগ্য হোক না হোক, তা নিষ্পত্তি করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আবেদনকারীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
নীতিমালার ওপর আলোচনার জন্য একটি বৈঠকও হয় বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল)। এক্ষেত্রে খসড়া নীতিমালার ওপর এবং মাঠ পর্যায় থেকে আসা কর্মকর্তাদের সুপারিশের ওপর আলোচনা করেন নির্বাচন কমিশন ও তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
খসড়া নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে- উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে কোনো আবেদন বাতিল হয়ে গেলে সিনিয়র জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আপিল করতে হবে। আবেদন যাচাই-বাছাই করবেন অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা নির্বাচন কর্মকর্তা। তিনি ৬০ দিনের মধ্যে আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।
জেলা পর্যায়ে আপিল আবেদন না টিকলে পুনরায় আপিল করা যাবে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এক্ষেত্রে আগের আদেশের ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। তিনি পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবেন।
আঞ্চলিক কার্যালয়েও আবেদন না টিকলে আপিল করা যাবে এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে। এক্ষেত্রে আগের আদেশের ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। আপিল নিষ্পত্তি হবে আবেদনের পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে।
সেখানে আবেদন না টিকলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করা যাবে। আগের মতোই এবারো ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন গঠিত কমিটির দ্বারা যাচাই-বাছাই ও নথি উপস্থাপন এবং শুনানি শেষে কমিশন আদেশ দেবেন ৬০ দিনের মধ্যে। এক্ষেত্রে কমিশনের আদেশই চূড়ান্ত হবে।
নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তদের একজন ইসির যুগ্ম-সচিব এসএম আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, খসড়া নীতিমালার ওপর সবার মতামত চাওয়া হয়েছে। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমরা আপাতত খসড়া নীতিমালার কাজ করছি। এখনো চূড়ান্ত কিছুই হয়নি। খসড়া করা হলে কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে। তখন কমিশন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, এনআইডি সংশোধনের ভোগান্তির বিষয়টি জানি। এজন্য কাজ করছে ইসি।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :