ঢাকা : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী জোটকে কে নেতৃত্ব দেবেন-এখন তাই বেশি ভাবনা দলটিতে। আজ ১ সেপ্টেম্বর দলটির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এমন ক্ষণে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিশেষ আদেশে জামিনে আছেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নানা মামলা মাথায় নিয়ে প্রবাসে আছেন। সহজাতই দলটির ‘ফ্রি’ নেতৃত্ব নেই। এর মাঝে বিকল্প কোনো যোগ্য মানুষ নেই সামনে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জিয়ার পরিবার থেকে নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব ছিল না। আড়াই বছর পর অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এর ব্যত্যয় ঘটছে না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিলেও এবার সেই পথে যাচ্ছে না বিএনপি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি সূত্র জানায়, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মোটামুটি রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন থেকে ফিরবেন না। তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানও আগ্রহী নন। তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমান সবে ব্যারিস্টারি পড়াশোনা শেষ করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, মানুষের সামনে একটাই প্রশ্ন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীপক্ষের মূল নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে যান, তাহলে তার অধীনে নির্বাচনের কোনো অর্থ হয় না। তাদের মতো নির্বাচন কমিশন, তাদের সরকার-সব মিলিয়ে গতবারের মতো একই অবস্থা হবে, যা অনর্থক। যে নির্বাচনে বেগম জিয়া অংশ নিতে পারবেন না, সে নির্বাচন কতখানি অর্থবহ হবে-তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’
ইকবাল হাসান বলেন, এই সব বিষয় আলোচনা করেই আগাতে হবে। মাঠের কী অবস্থা হবে, তাও বিবেচনায় নিতে হবে। তিনি মনে করেন, এবার বিএনপিকে অলআউট ফর্মুলায় যেতে হবে।
বিএনপির দায়িত্বশীল ও প্রভাবশালী একটি সূত্রের দাবি, বিএনপি এখন ৪৩ বছরে পা দিল। ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দলের বযস হবে ৪৫ বছর। দলের অস্তিত্বের জন্য যেমন, তেমনি বাংলাদেশে ভোটের অধিকার ফেরানোর জন্যও আগামী নির্বাচনটি গুরুত্বপূর্ণ। সেদিক থেকে এটি হবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য বড় পরীক্ষা। এরচেয়ে বেশি বর্তমান সিনিয়র নেতাদের জন্য।
সূত্রের ভাষ্য, জিয়াউর রহমান বাকশালের বিপরীতে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলেন। আর গত একযুগে নেতারা এ বিষয়টি বার বার উল্লেখ করলেও জনগণের কাছে দলীয় রাজনীতিকে জনপ্রিয় করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির না হতে পারলে দল হিসেবে শেষ সুযোগটিও হয়তো হারাবে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘বিএনপি এবার জোট করবে কি, করবে না, এটাও এখন ডিসাইড হয়নি। তবে, জোট হলেও নেতৃত্ব বিএনপির হাতেই থাকবে বলেই মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘দলের স্থায়ী কমিটির মধ্য থেকেই এটা হতে পারে। নির্বাচন কাছাকাছি আসুক, উপযুক্ত সময়ে এটা ডিসাইড হবে।’
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :