• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১
আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ

প্রার্থীর টিআইএন চায় ইসি


বিশেষ প্রতিনিধি নভেম্বর ৫, ২০২১, ১১:২৭ এএম
প্রার্থীর টিআইএন চায় ইসি

ঢাকা : দীর্ঘ ৪৮ বছর পর গত জুলাই মাসে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাংলায় রূপান্তরের পর এবার কয়েকটি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এতে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক চায় কমিশন।

সব ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থীকে ইসিতে অবশ্যই টিআইএন সনদ জমা দিতে হবে।  

নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং এ সংক্রান্ত বিষয় যুগোপযোগী করতে বিভিন্ন আইনের সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। এ কারণেই প্রায় প্রতিটি নির্বাচনের আগে অথবা প্রয়োজনে নির্বাচনি আইন গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২ (রিপ্রেজেন্টেটিভ পিপলস অর্ডার ১৯৭২) বেশ কয়েকবার সংস্কার হয়েছে। ২০০৭-২০০৮-এ ব্যাপক সংস্কার করা হয় আরো যুগোপযোগী করার জন্য। বহু গুরুত্বপূর্ণ আইন এবং অধ্যায় যুক্ত করা হয়।

যেমন প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়সহ পরিচালনার ক্ষেত্রের পরিবর্তনগুলোর আইন সংযোজন করা হয়।

গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২-কে যুগোপযোগী করতে ২০২০ সালে সবচেয়ে বড় যে সংযোজনটি করা হয়, সেটি হলো বাধ্যতামূলক রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, যার মধ্যে প্রচুর শর্ত দেওয়া ছিল।

এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছিল ৩৩ শতাংশ নারীকে ২০২০ সালের মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতি কমিটিতে নিযুক্তি।

এদিকে ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করতে চাওয়া প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রে সঙ্গে টিআইএন সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক চায় ইসি।

সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-তে এমন প্রস্তাব করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া স্থানীয় সরকারের সকল নির্বাচনের বিধিতে মনোনয়নপত্রের সাথে টিআইএন সনদ জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জন্য টিআইএন সনদের কপি দাখিল বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে আইনে নতুন বিধান অন্তর্ভুক্ত করার জন্য  প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশোধিত আরপিও-তে ইসির আরো যতো প্রস্তাবগুলো হলো-নতুন বিধান ২৭ (১)(ডি) সংযোজনের জন্য ‘ফিজিক্যাল ডিসঅ্যাবল’ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিদ্যমান ভোটার তালিকার তথ্য ভাণ্ডারে (নিবন্ধন ফরম-২ ক্রমিক-২১) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী, বাক প্রতিবন্ধী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের তথ্য সংগৃহীত থাকায় এবং বিধিতে সুনির্দিষ্টভাবে এই চারটি প্রতিবন্ধকতার প্রকৃতি উল্লেখ থাকায়  উক্ত চার প্রকারের প্রতিবন্ধীদের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করে এই সুযোগের আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্যমান ব্যবস্থায় কোনো নির্বাচনি এলাকার জন্য অথবা দুই বা ততোধিক নির্বাচনি এলাকার জন্য একজন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করার বিধান রয়েছে।

আরপিও-এর আর্টিকেল ৭ (৫) এ শুধু ‘ডিস্ট্রিক্ট’ উল্লেখ থাকায় এটি আর্টিকেল ৭ (১) এর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বিধায় আর্টিকেল ৭ (৫) এ ‘অর কন্সটিটিউয়েন্সি’ শব্দদ্বয় সন্নিবেশের প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রামে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে একাধিক রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ হচ্ছে।

বিদ্যমান ব্যবস্থায় কোনো কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদারের ক্ষেত্রে কোনো ব্যাংক থেকে নেওয়া বড় ধরনের ঋণ বা তার কিস্তি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পরিশোধ করার বিধান রয়েছে।

কৃষি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ঋণ এবং ব্যক্তিগত (টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বা সরকারের সেবা দেওয়া কোনো সংস্থার) বিলের ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাতদিন আগে পরিশোধের বিধান রয়েছে। তাই বড় ধরনের ঋণ এবং ক্ষুদ্র ঋণ ও বিল পরিশোধের জন্য অভিন্ন সময়সীমা রাখার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিদ্যমান ব্যবস্থায় আরপিও-তে আর্টিকেল ১৪ (৫) অনুযায়ী মনোয়নপত্র গ্রহণ ও বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রয়েছে।

আর্টিকেল ১৫ (২) এ শুধুমাত্র মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আপীল মঞ্জুর হলে বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা সংশোধনের বিষয়ে বলা হয়েছে।

তাই আর্টিকেল ১৪ (৫) এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে আর্টিকেল ১৫ (২) সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভোটারদের ভোট দানের সুবিধার্থে আরপিও এর আর্টিকেল ৪৪ এ (২) সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দল নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয়নি।

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয়সহ সব ধরনের কমিটিতে ২০২০-এর মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার কথা ছিল। সেই সময়টি পার হয়েছে গেছে।

তাই এই সময় বাড়িয়ে ২০৩০ পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, এবং আরপিও প্রণয়ন/সংশোধনের সময় বিশেষ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে ‘নবম সংসদ বসিবার বারো মাসের মধ্যে’ কথা উল্লেখ করা হয়েছিল যা বর্তমানে প্রয়োজন নেই।

নিবন্ধনের জন্য সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় বিবেচনায় বারো বাস সময়ের পরিবর্তে ৩০ দিনের প্রস্তাব করে আর্টিকেল ৯০ ডি এর শর্তাংশে সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!