• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
গাজীপুরে হার কেন?

তৃণমূলে অনৈক্য, নাকি মার্কিন ভিসানীতি


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৮, ২০২৩, ১০:০৯ পিএম
তৃণমূলে অনৈক্য, নাকি মার্কিন ভিসানীতি

ঢাকা: সামনেই চার সিটি করপোরেশনের ভোট। এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এমন সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নৌকার প্রার্থীর পরাজয় নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা ও হিসাব-নিকাশ। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় টিম গাজীপুরে পরাজরের কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছে। দলের আগামী কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে লিখিত আকারে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে তৃণমূলের অনৈক্যই দেশে গুরুত্বপূর্ণ এই সিটিতে পরাজয়ের কারণ।এছাড়া দলীয় মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লার হারের পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অনেকেই এর সঙ্গে ভোটের আগমুহূর্তে মার্কিন নতুন ভিসানীতির ঘোষণাকেও যুক্ত করছেন।

আরও পড়ুন<<>>সেমিফাইনালের প্রথম দিনে উজ্জীবিত বিএনপি

বরাবরই গাজীপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এখানকার পাঁচটি সংসদীয় আসনই আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভায় গাজীপুরের রয়েছেন দুজন সদস্য। এ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করা হয়েছিল। তবুও বিএনপিবিহীন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর এমন পরাজয় মেনে নিতে পারছে না আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এই ভরাডুবি ক্ষমতাসীনদের বেশ ভাবনায় ফেলেছে।

নেতারা ধারণা করছেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা আসবে। 

আরও পড়ুন<<>>তৃণমূলে শক্তি বাড়াতে যা করছে আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেমন হয়েছে তা দেশবাসী দেখেছেন। এখানে আমাদের দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। এই নির্বাচনে আমাদের মেয়র প্রার্থী কেন পরাজিত হলেন তা ‘পার্টি লেভেলে’ আলোচনা হবে। আমরা কারণগুলো জানার চেষ্টা করব। তিনি এই নির্বাচনে মার্কিন ভিসানীতির প্রভাবের বিষয়টি এড়িয়ে যান। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে অঙ্গীকার তারই প্রতিফলন ঘটেছে গাজীপুরে। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের মতামত প্রদান করেছেন। আওয়ামী লীগ জনগণের এই রায়কে সম্মান জানায়। নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে। এটি আমরা মনে করি। আওয়ামী লীগ চায় আগামী সংসদ নির্বাচনেও জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের রায় প্রদান করুক। তবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এই ফলাফল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি মনে করেন। 

আরও পড়ুন<<>>নির্বাচন পর্যন্ত পালটা কর্মসূচি চলবে

মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার প্রভাব এই নির্বাচনে পড়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এখানে আওয়ামী লীগ সরকার, প্রার্থী এবং ভোটারের সদিচ্ছার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে চাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুরে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হেরে গেছেন। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে হয়েছে বলে আমি মনে করি। এটার সঙ্গে ভিসানীতিকে যুক্ত করার কোনো অর্থ আমি দেখি না। 

তিনি আরও বলেন, গাজীপুরে সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সব রাজনৈতিক দলেরই এটা মনে রাখা উচিত যে, গণতন্ত্রে ভোটের মাধ্যমেই জিতে আসতে হবে। ফলে তাদের অভ্যন্তরণী দ্বন্দ্ব দূর করতে হবে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ফলে দলগুলোর নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের এ বিষয়গুলোতে আরও বেশি দৃষ্টি দিতে হবে।

আরও পড়ুন<<>>সংবিধানের বাইরে যাবে না আ.লীগ

তবে গাজীপুরের ভোটে মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার একটা প্রভাব ছিল বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুরের ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে, তবে এটাকে সুষ্ঠু ভোট বলা যাবে না। কারণ সুষ্ঠু ভোটে ভোটারের বিকল্প পছন্দ করার সুযোগ থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভোটে মার্কিন ঘোষণার একটা প্রভাব তো অবশ্যই ছিল। যারা নির্বাচনি কাজে যুক্ত ছিলেন তাদের ওপর একটা চাপ ছিল। এটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

এদিকে সামনে আরও চারটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এসব নির্বাচনকে ঘিরেও আওয়ামী লীগের কোন্দল স্পষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট। প্রকাশ্যেই অনেকে নৌকার বিরোধিতা করছেন। ভোটের আর খুব বেশি সময় বাকি না থাকলেও নৌকার পক্ষে এখনো আওয়ামী লীগের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামানো সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন<<>>তৃণমূলকে ভোটে চাঙ্গা রাখাই আ.লীগে মূল চ্যালেঞ্জ

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!