ঢাকা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে জমা পড়া প্রায় পৌনে তিন হাজার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে ৭৩১ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব প্রার্থীদের বড় অংশই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদেরও কয়েকজন বাদ পড়েছেন। তারা সবাই এখন আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নির্বাচন করার অনুমতি না পান, তাহলে সেসব আসনের ব্যাপারে দলটির সিদ্ধান্ত কি হবে, সেটি নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, যেসব প্রার্থীরা বাদ পড়েছে, তাদের সবাইকে নিয়ম মেনে নির্বাচন কমিশনে আপিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন থেকে যে যে ধরনের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে, সব কিছুই যেন ঠিকঠাক মত জমা দেওয়া হয়, সে ব্যাপারেও তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তবে আপিলে দলের মনোনিত প্রার্থীদের কেউ বাদ পড়লে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে মনোনীত প্রার্থীদের সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করার আশা করছে আওয়ামী লীগ। দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রার্থীরা সবাই আপিল আবেদন করছে। উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ দিয়েই তারা আবেদন করছেন। কাজেই আমাদের মনোনীত প্রার্থীদের কেউই বাদ যাবেন না বলে আমাদের বিশ্বাস।
কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ের সময় বাদ পড়া চার আওয়ামী প্রার্থীর একজনও যদি শুনানিতে চূড়ান্তভাবে প্রার্থিতা হারান, সেক্ষেত্রে ঐ প্রার্থীর আসনে কীভাবে নির্বাচন করবে আওয়ামী লীগ?
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আশা করছি বাদ পড়বে না। তারপরও যদি তেমন কিছু ঘটে, তাহলে সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সেটা প্রতীক বরাদ্দের আগেই।
এদিকে, বিএনপিসহ বেশ কিছু দল এবারের নির্বাচনে অংশ না নিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট দেখাতে চাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। আর সে কারণেই দলের মধ্যে যারা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছে, তাদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দলের এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ‘ডামি প্রার্থী’ হিসেবে অভিহিত করছে আওয়ামী লীগ। বরিশাল, নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং কিশোরগঞ্জের যে চারটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া নেতারা প্রার্থিতা হারিয়েছেন, সেগুলোতেও দলটির একাধিক ডামি প্রার্থী রয়েছে।
বরিশালের যে আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন, সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে আছেন আওয়ামী লীগেরই আরেকজন নেতা ও বর্তমান সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেত্বত্বাধীন ১৪ দলের অন্য শরিকদেরও প্রার্থী রয়েছে ঐসব আসনে।
এদিকে, গত দুই জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশি সংখ্যক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মোট দুই হাজার ৭১৬ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে ৭৩১ জনের।সেই হিসাবে এবার প্রায় ২৬ দশমিক নয় শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর আগে, ২০১৮ সালে প্রায় ২৫ দশমিক ছয় শতাংশ এবং ২০১৪ সালে প্রায় ২১ শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এমটিআই