ঢাকা : বছর জুড়ে চলা নির্মাণকাজ, বালুবাহী ট্রাক, ইটভাটা আর যানবাহনের ধোঁয়ার সঙ্গে আবর্জনা পুড়ে ঢাকার বাতাস স্বাভাবিক মানে ফিরছেই না।
শব্দ আর দূষণের এ নগরীতে গরম কিংবা বর্ষাকালে বৃষ্টিতে বায়ুমান কখনও কখনও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় নামলেও শীত এলেই তা উঠে যায় দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে। এবারের শীতেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র।
বায়ু দূষণে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার সঙ্গে নানা দুর্ভোগে পড়ছেন নগরবাসী। দূষণ থেকে বাঁচতে রাস্তায় চলাচলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের হিসাবে, গত ৯ ডিসেম্বরের পর থেকে ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকরই থাকছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ঢাকার বাতাসের মান বা একিউআই ছিল ৩০৫, যা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। এ সময় বিশ্বের দূষণের শীর্ষ শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল তৃতীয়।
এরপর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল সবার উপরে। এসময় একিউআই ছিল ২৫১, যাকে ধরা হয় ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের কলকাতা, ২৪৫; এরপর ২৩৫ মান মাত্রা নিয়ে দিল্লি ছিল তৃতীয় অবস্থানে।
বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন-পিপিএম) এককে।
এক নজরে
# দূষণের মাত্রা বুঝতে পিএম ২.৫, পিএম ১০ ছাড়াও সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও গ্রাউন্ড লেভেল ওজোনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ বিবেচনা করে তৈরি করা হয় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই।
# এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
পরিবেশবিদরা বলছেন, ঢাকার বায়ুদূষণ ঠেকাতে গৃহীত পদক্ষেপগুলো দূষণ কমাতে অপর্যাপ্ত। এজন্য শুধু পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে না থেকে সবগুলো মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
রাস্তায় দম নিতেও কষ্ট : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন নির্মাণকাজ, বালুবাহী ট্রাক, ইটভাটা আর যানবাহনের ধোঁয়া এবং বিভিন্ন স্থানে আবর্জনা পোড়ানোর মাধ্যমে দূষিত হচ্ছে বাতাস।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) গাবতলীতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে, উড়ছে ধুলা। পথচারীদের অনেকে নাকে রুমাল, মুখে মাস্ক পরে চলাফেরা করছেন।
মো. সেকান্দর নামে এক ট্রাকচালক বলেন, এহানে আইলে দম নিতে কষ্ট অয়। সারাদিন ধুলা উড়ে। মাঝেমাঝে পানি দিতে দেহি। পানি দিতে যতক্ষণ, শুকাইলেই আবার ধুলা উড়ে।
সেতুটির নির্মাণকাজ করছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি কোম্পানি। ধুলা থেকে বাঁচতে ফুলহাতা শার্ট পরে মাথায় টুপি আর মুখ ঢেকে কাজ করছিলেন নির্মাণ প্রকল্পের কর্মী সাগর আলী।
তিনি বলেন, এতো ধুলা উড়ে যে নিজেকে ঢাইকা কাম করন লাগে। নইলে বাঁচা যাইব না।
ধুলা দূষণের ছবি তুলতে দেখে সেখানে পানি ছিটানো শুরু করেন সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের কর্মীরা।
প্রকল্পের আরেক কর্মী ইবরাহীম হাওলাদার বলেন, আমরা পানি দেই দিনে দুই থেকে তিনবার। কিন্তু পানি দেওয়ার কথা সিটি করপোরেশনেরও আছে। তারা দেয় না।
কমলাপুর, শাহজাহানপুর ও খিলগাঁও এলাকা জুড়ে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলছে। সেখানেও ধুলা দূষণের একই চিত্র।
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল বলেন, পানি দিয়া যায়, পানি শুকাইয়া আবার ধুলা উড়ে। এই ধুলা উড়া নিয়া ব্যাপক বিরক্ত আমরা।
কমলাপুর রেল স্টেশনের সামনে যেখানে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ হচ্ছে, সেখানে পানি ছিটানো হয়। তবে পাশের এলাকাগুলোতে সড়কে ধুলা উড়তে দেখা যায়।
টিটিপাড়া এলাকায় রিকশাচালক কুদ্দুস মিয়া বলেন, টিটিপাড়া এলাকায় প্রচুর ধুলা ওড়ে। তাই রিকশা দিয়া মানুষ যাইবার চায় না। প্যাসেঞ্জার কম পাওয়া যায়, তাই খুব বিপদে আছি।
ঢাকার বংশাল, নাজিরাবাজার এলাকায় পানি নিষ্কাশন নালা বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। সেখানেও সড়কে ধুলা উড়তে দেখা যায়।
মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, অনেক ধুলাবালি এই রাস্তায় রাস্তায়। কাজ করে তারা পানি দেয় না ঠিকমত। কাজের তাগিদে প্রতিদিন বাসা থেকে বের হয়ে ধুলা-ময়লার রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তা সংস্কারের জন্য রাস্তা কাটছে তাই প্রচুর ধুলা ওড়ে।
ঢাকার মাটিকাটা থেকে ভাসানটেক পর্যন্ত সড়কে নিষ্কাশন নালা বসানোর জন্য একপাশে কাটা হয়েছে। অন্য পাশ দিয়ে যানবাহন চলছে। সড়ক খুঁড়ে তোলা মাটি পড়ে আছে সড়কের বিভিন্ন অংশে। যানবাহন চলাচলের সময় ওই সড়কে প্রচুর ধুলা উড়ছে।
দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা রিফাত হোসেন বলেন, দিনে কয়েকবার পানি ছিটালে এখানে এমন ধুলা হত না। আমি সারাদিন এইদিকেই থাকি, কিন্তু পানি ছিটাতে দেখি না।
রাতে বালুবহনকারী ট্রাকগুলোও ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। গাবতলী, মোহাম্মদপুর, টঙ্গী, যাত্রাবাড়ী এবং জুরাইন এলাকা হয়ে ঢাকার বাইরে থেকে প্রতিদিন শতশত ট্রাক বালু নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আসে। এসব ট্রাক থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বালু, উড়ে বেড়ায় বাতাসে।
আসাদগেট থেকে শ্যামলী ও মিরপুর এলাকার সড়কগুলোতে বালুবাহী ট্রাক চলতে দেখা যায়। বালু বোঝাই ট্রাক ত্রিপলে না ঢাকা, অতিরিক্ত বালু বহন কিংবা পুরনো ট্রাকের গায়ের ফাঁকফোকর থাকার কারণে বালু সড়কে পড়তে দেখা যায়।
মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় কথা হয় ট্রাকচালক শামীমুল হাসানের সঙ্গে। বালু ঢেকে পরিবহন না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় কভার লাগাই, কিন্তু লেবাররা আলসেমি করে লাগায় না। আমার ট্রাক থেকে খুব বেশি বালু পড়ে না।
ঢাকায় চলাচলকারী অনেক বাস থেকেই নির্গত হয় কালো ধোঁয়া। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় তেঁতুলিয়া পরিবহনের চালক সুমন পাটোয়ারি বলেন, বাসের বয়স হয়েছে। দীর্ঘদিন ইঞ্জিন মেরামত না করায় মাঝেমধ্যে ধোঁয়া ছাড়ে।
ইঞ্জিনের কাজ করাইলে আর নিয়মিত মবিল চেঞ্জ করলে গাড়ি থাইকা ধোঁয়া বাইর হয় না। কিন্তু অনেক মালিক খাইসটামি করে, ঠিকঠাকমত কাজ করায় না। এজন্য ধোঁয়া বের হয়।
আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা আফরোজা মিম বলেন, বাস, ট্রাক আর লেগুনা থেকে বেশি ধোঁয়া বের হয়। ধোঁয়ার কারণে রাস্তায় বা গাড়িতে বসে বিরক্ত লাগলেও কিছু করার থাকে না। সবসময় মাস্ক পরে থাকা লাগে, তারপরও শ্বাসপ্রশ্বাসের ওপর একটা প্রভাব পড়েই।
ঢাকার এই অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশেনর যুগ্ম মহাসচিব ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেননূর।
তিনি বলেন, শীত মৌসুমে ঢাকায় বাতাসের যে অবস্থা তাতে দুই ধরনের মানুষের জন্য ভয় আছে। যারা এরই মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত আছেন এবং যাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বাইরে গেলেও অবশ্যই মাস্ক পরবে। বিশেষ করে হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
গাজীপুর থেকে মহাখালী, সবখানেই দূষণ : গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে বাইপাস, ছয়দানা থেকে টঙ্গী হয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ঘুর দেখা গেছে বিআরটিএর কাজ চলায় সড়কে ধুলার দূষণের চিত্র।
ভোগড়া বাইপাস এলাকায় চা-দোকানি মো. মুনসুর আলী বলেন, সড়কে প্রচণ্ড ধুলাবালি। রাস্তার ধুলাবালি আইসে দোকানের মালামাল নষ্ট হইয়া যায়। বারবার পরিষ্কার করা লাগে।
আরেক চা দোকানি রাহিমা আক্তার বলেন, ধুলাবালির জন্য সারাদিনে যে কতবার জিনিসপত্র মুছতে হয় তার হিসাব নাই। আর দোকানের ভিতরে মাস্ক পড়ে থাকতে হয়। খুবই ঝামেলায় আছি।
জয়দেবপুরের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা নাহিদ ইকবাল বলেন, বিআরটি প্রকল্প ঠিক সময়ে শেষ না হওয়া, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় গাজীপুরের বাতাসের মান সব সময়ই খারাপ থাকে।
যারা নিয়মিত ঢাকা যাতায়াত করেন, তারা বোঝেন কত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একদিকে জ্যাম আরেক দিকে ধূলাবালিতে অবস্থা নাজেহাল।
গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশের ভাগাড়ে আগুন দিয়ে ময়লা আবর্জনা পোড়াতেও দেখা গেছে।
গাজীপুরের ছয়দানা এলাকায় যাত্রী ছাউনির পাশে জমা করা ময়লা পোড়াচ্ছিলেন সোবহান আহমেদ ও সেলিম মিয়া। জানতে চাইলে তারা বলেন, রাতে লোকজন গোপনে এখানে ময়লা ফেলে যায়, তাই পোড়ায়ে ফেলতেছি। আমরা বোর্ড বাজারে ফেলি।
ইটভাটার ধোঁয়া : ঢাকার আমিনবাজার ও আশপাশের এলাকায় রয়েছে অসংখ্য ইটভাটা। ধুলাবালির সঙ্গে ইটভাটার ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে বাতাস। বৃষ্টি না হওয়ায় ওই এলাকার গাছপালা ঢেকে গেছে ধুলোয়, ইটভাটার ধোঁয়ায় পাতায় পাতায় স্তর পড়েছে কালির।
আমিন বাজারের মেসার্স আবু জাহিদ ব্রিকস ইটভাটার কর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে যাই। ধুলা আর ধোঁয়ায় কাম করা অনেক কষ্ট।
স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, ইটভাটার জন্য মারাত্মক প্রভাব পরে শরীরে। হুটহাট ঠান্ডা-জ্বর লাগে। আইন কতটুকু মানে তা তো জানি না, তবে শররের যে ক্ষতি হয় তা ভালভাবেই টের পাই।
তবে নিজের ইটভাটাকে পরিবেশবান্ধব বলে দাবি করেন মেসার্স আবু জাহিদ ব্রিকসের মালিক মো. আবু জাহিদ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ইটভাটা পরিচালনার দাবি করে তিনি বলেন, আগে ছিল ম্যানুয়াল পদ্ধিত। তখন হান্ড্রেড পার্সেন্ট দূষণ হইত। কিন্তু এখন দূষণ হয় না। আগে কালো ধোঁয়া বের হইত, এখন সাদা ধোঁয়া বের হয়।
দূষণ রোধের পদক্ষেপ কী : ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কথাই বারবার উঠে আসছে পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের কথায়।
বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ইটের ভাটা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নির্মাণকাজে নিয়ম না মানা, যেখানে সেখানে বর্জ্য পোড়ানোয় ঢাকায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। এসব তদারক করার জন্য আলাদা সংস্থা আছে কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করছে না।
যেমন বড় বড় প্রকল্প কোনো না কোনো মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রণালয় যদি শুধু এভাবে চিন্তা করে যে প্রকল্প বাস্তবায়নই তাদের কাজ, তাহলে বায়ুদূষণ কমবে না। কিন্তু তারা যদি মনে করে যে প্রকল্প বাস্তবায়নে যে নির্মাণ বিধিগুলো, পরিবেশের বিষয় আছে তাহলে বায়ুদূষণ কমে যাবে। এজন্য সবগুলো মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক পদক্ষেপ প্রয়োজন।
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কিছু কাজ করার কথা জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনও।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ বলছে, যাত্রাবাড়ী, দোলাইরপাড়, পোস্তগোলা ব্রিজ, বাসাবো, কমলাপুর, রাজারবাগ, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, মতিঝিল, মালিবাগ, শান্তিনগর, মুগদাপাড়া, খিলগাঁও,ধানমণ্ডি, নিউ মার্কেট, মগবাজার, বেইলি রোড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রতিদিন নিয়মিত পানি ছিটানো হয়।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, ডিএসসিসির নয়টি ওয়াটার বাউজার বিভিন্ন সড়কে পানি ছিটায়। এর মধ্যে পাঁচটি গাড়ির সক্ষমতা ৬ হাজার লিটার, চারটি গাড়ির সক্ষমতা ৫ হাজার লিটার করে। এছাড়া তিনটি রোড সুইপার ফ্লাইওভারগুলো ঝাড়ু দেয়।
সবগুলো গাড়িই দুই শিফটে কাজ করে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পানি ছিটানো হয় বলে তার ভাষ্য।
অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন হিসাব দিয়েছে, গত শুক্রবার ডিএনসিসির ১০টি গাড়ি ৪০টি ট্রিপের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ৪ লাখ লিটার পানি ছিটিয়েছে। এছাড়া ডিএনসিসির আওতাধীন পুরো এলাকার মহাসড়ককে দুটি ভাগে ভাগ করে একদিন পরপর স্প্রে ক্যানন দিয়ে পানি ছিটানো হচ্ছে।
ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মকবুল হোসাইন বলেন, ডিএনসিসির অন্য সড়কগুলোয় ১০টি ওয়াটার বাউজার দিয়ে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে দুইবার পানি ছিটানো হয়। নির্মাণাধীন সড়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বেশি পরিমাণ পানি ছিটানো হয়।
নির্মাণকাজ চলাকালে ঠিকাদাররা যেন মাটি ঢেকে রেখে কাজ করে সে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র রেখে পরিবেশ দূষণ করলে ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
এমটিআই