ঢাকা: গত এক বছর আগেও উইকেট-কিপার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানের টি-টোয়েন্টি দলের জায়গা মেনে নিতে পারেননি পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। মূলত টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবেই দলে প্রাধান্য বেশি ছিল তার।
হঠাৎ ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টিতে খেলার সুযোগ পেলেও নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না। তাই ক্রিকেট ভক্তরাসহ সাবেক ক্রিকেটাররা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে ধুয়ে দিয়েছিলেন। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট মূলত হার্ড-হিটারদের খেলা, সেখানে রিজওয়ানের নামটা তারা মানতেই পারছিলেন না।
আরও পড়ুন : হোটেলে বমি ও ভাঙচুর চালালেন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা
এর মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে উপরের দিকে ব্যাট করার সুযোগ দেওয়া হয় এই উইকেট-কিপার ব্যাটসম্যানকে। মাঝে মাঝে রান পেলেও স্ট্রাইক রেট ঠিক রাখতে পারছিলেন না। দলে ভূমিকা রাখতে না পারায় কয়েক ম্যাচে জায়গাও হারিয়েছিলেন।
বিষয়টি এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সেই সময় তাকে পেয়ে বসেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। নানা অপমানজনক কথায় বিদ্ধ করেছেন রিজওয়ানকে। সাথে ভক্তদের সমালোচনা তো ছিল। এমন কি নিজের উচ্চতার জন্যও কথা শুনতে হয়েছে তাকে।
এসব তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আর অপমানের জবাব বিশ্বরেকর্ড করেই দিয়েছেন পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান। সবশেষ ১৪ ইনিংসে ৭৫২ রান করে ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। বছরের মাত্র সাত মাস যেতে না যেতেই ভেঙে দিয়েছেন আগের সব রেকর্ড।
এতদিন টি-টোয়েন্টির ক্যালেন্ডার ইয়ারে সর্বোচ্চ রান ছিল আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিংয়ের। তিনি ২০১৯ সালে ২০ ইনিংসে করেছিলেন ৭৪৮ রান। যেখানে ছিল ৮টি ফিফটি। সেই রেকর্ড রিজওয়ান ভাঙতে সময় নিয়েছেন মাত্র ৭ মাস এবং ১৪ ইনিংস। যেখানে আছে ৭টি ফিফটি এবং একটি সেঞ্চুরি।
পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টিতে এখনও পর্যন্ত ৪২ ম্যাচ খেলেছেন। যেখানে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৩২ ইনিংসে। সবমিলিয়ে প্রথম ২৮ ম্যাচে রিজওয়ান করেছিলেন ১১ গড়ে ৩১৩ রান। এমন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার তীর বিদ্ধ করেছে এই ব্যাটসম্যানকে।
কিন্তু খারাপ সময় থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন সেটা নিশ্চিয়ই ছোটোখাটো গড়নের এই ক্রিকেটারের ভালোই জানা ছিল। আর তাই তো পরের ১৪ ইনিংসে ৯৪ গড়ে রিজওয়ান করেছেন ৭৫২ রান। টি-টোয়েন্টিতে মোট ৪২ ম্যাচে তার সর্বমোট রান গিয়ে দাঁড়াল ৪৮ গড়ে ১০৬৫ রান। তার সর্বশেষ ১৪ ইনিংসের সমীকরণ ১০৪*, ৫১, ৪২, ৭৪*, ০, ৭৩*, ০, ৮২*, ১৩, ৯১* ৬৩, ৩৭, ৭৬* ও ৪৬।
রিজওয়ান শেখালেন শারীরিক গড়ন কোনো বিষয় নয়, যোগ্যতাই আসল। সমালোচনা-অপমান মানুষকে থামিয়ে দিতে পারেনা। বরং এর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারলে স্যালুট করবেন তারাই যারা এক সময় তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য এবং অপমান করে হাসি-ঠাট্রায় মেতেছিলেন।
সোনালীনিউজ/এআর
আপনার মতামত লিখুন :