• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

১২ অধিনায়কের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভাবনা


ক্রীড়া ডেস্ক আগস্ট ১৭, ২০২১, ০৭:৫৬ পিএম
১২ অধিনায়কের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভাবনা

ঢাকা: করোনার কারণে অবশেষে এক বছর পিছিয়ে আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রায় এক মাসের টুর্নামেন্টের ফাইনাল হবে ১৪ নভেম্বর।

টুর্নামেন্টটি নিয়ে আইসিসির ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার নিজেদের ভাবনা তুলে ধরেছেন অধিনায়করা।

বাবর আজম (পাকিস্তান)
'আবুধাবিতে খেলা মানে অনেকটা আমাদের হোম কন্ডিশনে খেলা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা বহুল প্রতীক্ষিত বৈশ্বিক টুর্নামেন্টটির প্রস্তুতিতে আমাদের এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। আমরা এই সময়টাকে কাজে লাগাব ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলে। আমাদের লক্ষ্য কেবল ছোট ছোট বিষয়গুলোকে ঠিক করাই থাকবে না, যত বেশি সম্ভব ম্যাচ জিততেও চাইব আমরা। যাতে এই জয়ের ধারাবাহিকতা ও ছন্দ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বয়ে নিয়ে যেতে পারি।'

'আরব আমিরাতে আমরা কেবল আমাদের প্রতিভাকে লালন ও দলের উন্নতি করিনি, এই কন্ডিশনে শীর্ষ দলগুলোকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরও হয়েছি।'

“দলের সব খেলোয়াড় রোমাঞ্চিত, অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী। এই টুর্নামেন্টকে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ হিসেবে দেখছেন খেলোযাড়রা। আমাদের জন্য উপযুক্ত কন্ডিশনে সংক্ষিপ্ত এই সংস্করণে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ হিসেবে দেখছে সবাই।”

'আমার দিক থেকে, পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে এটা আমার প্রথম আইসিসির বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্ট। আমি ২০১৭ সালে (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে) সাফল্য পেয়েছি, ২০১৯ সালে (বিশ্বকাপে) হতাশ হয়েছি যখন আমরা দুই ফাইনালিস্টকে লিগ ম্যাচে হারানোর পরও সেমি-ফাইনালে সামান্য পয়েন্টের জন্য জায়গা করে নিতে পারিনি'। 

বিরাট কোহলি (ভারত)
ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির ভাবনা জানা যায়নি। 

ইওয়েন মর্গ্যান (ইংল্যান্ড)
'ছেলেদের আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি দারুণ হবে। বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মান দ্রুত উন্নতি করছে এবং প্রতিটি দেশেরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। লড়াই শুরু করতে তর সইছে না আমাদের।'

কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
“মহামারীর কারণে বিশ্বের খেলাধুলায় অনেক বিঘ্ন ঘটার পর মনে হচ্ছে, এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরে অনেক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এটা সব সময়ই দারুণ প্রতিযোগিতামূলক আসর হয়ে থাকে, যেখানে প্রতিটি দলেরই আছে ম্যাচ-জয়ী খেলোয়াড় যে ম্যাচ খুব দ্রুত ঘুরিয়ে দিতে পারে।”

'আমার মতে, অভিজ্ঞ ও নতুন দারুণ কিছু প্রতিভাভাবান খেলোয়াড় নিয়ে গড়া আমাদের দলটি বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। আরব আমিরাতে হওয়া গত বছরের আইপিএলে আমরা দেখছি, এখানের উইকেট টুর্নামেন্টের সময় গড়ানোর সঙ্গে পরিবর্তন হতে পারে। পেস ও স্পিন দুই বোলিংই এই কন্ডিশনে কাজে দেয়।

এখন পর্যন্ত ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান নিয়ে আমাদের গ্রুপটি শক্তিশালী। সব দলই শক্তিশালী, ফলে রোমাঞ্চকর একটি প্রতিযোগিতা হতে যাচ্ছে'। 

কিরন পোলার্ড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
'শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে বছরের শেষ দিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাঠে নামতে আমরা রোমাঞ্চিত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দারুণ রোমাঞ্চকর আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তো এটা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বতাপূর্ণ, ক্রিকেটাররা প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনের সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে দর্শনীয় একটি আসরের আশা করছি আমরা। সুপার টুয়েলভে আমাদের গ্রুপটি দারুণ, যেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। মাঠের লড়াই শুরু করতে তর সইছে না'। 

টেম্বা বাভুমা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
'২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি জাতি হিসেবে প্রোটিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণে এই আসর আমাদের জন্য তিনটি সুযোগের মধ্যে প্রথম।”

আমরা দারুণ একটি গ্রুপে আছি। আর এই গ্রুপের সবার বিপক্ষেই আমরা আমরা ফাইনালে ওঠার ও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে লড়াইয়ে নামব। আমাদের দলটিও দারুণ, যেটা গড়া হয়েছে নতুন কিছু প্রতিভা দিয়ে, সঙ্গে আছে অভিজ্ঞদের কয়েকজন যারা তরুণদের পথ দেখাবে।'

দাসুন শানাকা (শ্রীলঙ্কা)
'টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এর খেলোয়াড়, সমর্থক এবং সব অংশীদার যারা খেলাটি পছন্দ করে এবং ভালবাসে তাদের সবার জন্য সবসময়ই উত্তেজনাপূর্ণ একটি উপলক্ষ। আমি নিশ্চিত সবাই এই টুর্নামেন্টের জন্য অপেক্ষা করছে, যেমনটা আমরা দল হিসেবে করছি। এই ধরনের টুর্নামেন্ট খেলাটিকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলে। কারণ, এর অল্প সময়ের লড়াইয়ের আবহ ও রোমাঞ্চ সমর্থকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।'

'শ্রীলঙ্কার এমন কিছু খেলোয়াড় আছে যারা খুব সহজে টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা করে নিতে পারে ও ফল এনে দিতে পারে। আমাদের বোলিং শক্তিশালী হচ্ছে, ব্যাটিংয়ে এমন কিছু খেলোয়াড় আছে যারা ইনিংস গড়ে দিতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গতি এনে দিতে সক্ষম। যদিও ফিল্ডিংয়েও আমরা মনোযোগ বাড়াচ্ছি।'

অ্যালেক্স ক্যারি (চোটের কারণে এই মুহূর্তে দলের বাইরে ফিঞ্চ) (অস্ট্রেলিয়া)
'আমার কাছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দারুণ রোমাঞ্চকর। আমরা এটার জন্য অতিরিক্ত ১২ মাস অপেক্ষা করেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যেকোনো সময়ই খেলতে পারা উত্তেজনাপূর্ণ। আমরা জানি, তারা গত কয়েক বছর ধরে সাদা বলের সংস্করণে কতটা প্রভাবশালী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সম্প্রতি খেলার পর আমরা বুঝতে পেরেছিল তাদের বিপক্ষে লড়াইও কতটা কঠিন হতে পারে। আমরা এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।'

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (বাংলাদেশ)
বিশ্বকাপকে ঘিরে আমাকে কয়েকজন খেলোয়াড়ের নাম বলতে হয়, আমি প্রথমেই বলব সাকিবের (সাকিব আল হাসান) নাম। সে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার, আমাদের দলে মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার। এছাড়া মুশফিক ও মোস্তাফিজ আছে।

আফিফ, শামীম, সোহানের মতো বেশ কয়েকজন ইয়াংস্টার আছে যারা নিজেদের ও দলের জন্য ভালো করছে। এই ইয়াংস্টারদের দিকে চোখ রাখতে হবে বলে মনে করি।'

সাকিব আল হাসান সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছেন। হয়েছেন আইসিসির জুলাই মাসের সেরা ক্রিকেটার। মুশফিক আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। আর মোস্তাফিজুর রহমান একাই ভুগিয়েছেন অজিদের। তরুণ আফিফ বিপদের মুহূর্তে দেখিয়েছেন তার প্রতিভার ঝলক। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে ভুল করেননি নুরুল হাসান সোহান। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আফিফ-সোহানের ব্যাটে জয় পায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে মাত্র দ্বিতীয় সিরিজ খেলা শামীম হোসেন প্রথম সিরজেই দিয়েছেন তার দক্ষতার প্রমাণ। তাদের ঘিরেই মাহমুদউল্লাহর স্বপ্ন।

পিটার সিলার (নেদারল্যান্ড)
'এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। টুর্নামেন্টে ভালো অবস্থায় থাকাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের মূল লক্ষ্য, গ্রুপের প্রথম দুটি স্থানে থাকা, তাহলে আমরা পরবর্তী বিশ্বকাপে (সুপার ১২) খেলার সুযোগ পাব।'

অ্যান্ড্রু বালবার্নি (আয়ারল্যান্ড) 
'বিশ্বকাপে খেলতে পারা আমাদের দলের জন্য খুবই রোমাঞ্চের। দলের অনেক খেলোয়াড়েরই এই অভিজ্ঞতা হয়নি। আমি জানি, তারা খুবই রোমাঞ্চিত। আশা করি, আমরা কিছু ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গ্রুপ পর্ব পেরুতে পারব।'

'চাপ সব সময়ই থাকবে। প্রথমবারের মতো আইসিসি আসরে দলকে নেতৃত্ব দিব, আমি খুবই রোমাঞ্চিত। ছেলেরা কীভাবে মানিয়ে নেয়, সেটা দেখতেও মুখিয়ে আছি। একবার বিমানে উঠে গেলে, বিশেষ কিছু করার ভাবনায় ডুবে থাকব আমরা।'

কাইল কোয়েটজার (স্কটল্যান্ড)
'প্রথম রাউন্ডে আমাদের তিনটি বড় ম্যাচ রয়েছে। প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। র‍্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের থেকে উপরে থাকা দলগুলোকে হারানো সব সময়ই দারুণ। তবে সহযোগী দেশ হিসেবে আমরা জানি, প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ এবং র‍্যাঙ্কিংয়ে ওপরে বা নিচে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে খেলা বা জেতা গুরুত্বপূর্ণ। তাই তিনটি বড় ম্যাচ, প্রতিটিই আমাদের জন্য খুবই মূল্যবান'। 

সোনালীনিউজ/এআর

Wordbridge School
Link copied!