ঢাকা: চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একমাত্র অপরাজিত দল পাকিস্তান। পুরো আসর জুড়েই দুর্দান্ত খেলে সেমিতে জায়গা করে নিয়েছে বাবর আজমের দল। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের প্রশংসা কুড়াচ্ছে দলটি।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের অন্য তিন দল ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডকে হারের স্বাদ নিতে হয়েছ। ব্যতিক্রম শুধু পাকিস্তানই। একদিন পরই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচ। আজ পাকিস্তানের অনুশীলন নেই।
বিশ্রামের এই দিনে অধিনায়ক বাবর আজম অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হয়েছিলেন পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের। সেমিফাইনালে ওঠার পর পাকিস্তান দলের চোখ এখন নিশ্চিতভাবেই বিশ্বকাপের ট্রফিতে। সেমিফাইনালটা জেতার আগে তো আর সেটি মুখ ফুটে বলা যায় না!
বাবর আজমও বললেন না। তবে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে প্রকারান্তরে সে আভাসই তো দিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক, ‘আমরা টুর্নামেন্টজুড়েই ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে আসছি। এই ধারাবাহিক ছন্দটাই সেমিফাইনালে ধরে রাখতে চাই এবং এরপর সম্ভব হলে তা ফাইনালেও ধরে রাখব।’
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে সেই যে চমক জাগানো বিশ্বকাপ শুরু করল পাকিস্তান, এরপর থেকে শুধু চমকই দিয়ে গেল তারা। ভারতকে হারিয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাস দলটাকে পার করিয়ে দিয়েছে একের পর এক বাধা।
এমন সাফল্যের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাবর আজম আজ বলেন, দল নির্বাচনে তার ইচ্ছা গুরুত্ব পাওয়াতেই আজ বিশ্বকাপে পাকিস্তান এ জায়গায়, ‘আমি দলে কিছু খেলোয়াড়কে চেয়েছিলাম। তাদের দলে পাওয়ার পর থেকেই আমরা ভালো ফলাফল করতে শুরু করলাম। আমি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি, এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’
বাবর আজম মানছেন, তার দলের সব খেলোয়াড়ই ভালো খেলছেন না। পেস বোলার হাসান আলী আর ব্যাটসম্যান ফখর জামান যেমন। দুজনের কারোরই পারফরম্যান্স ভালো নয় এই বিশ্বকাপে।
হাসান ও ফখরকে তবু সব ম্যাচে টেনে নেওয়ার কারণ, অধিনায়ক তাদের ওপর আস্থা হারাননি। আর অধিনায়কের সিদ্ধান্তে আস্থা রাখছে টিম ম্যানেজমেন্ট এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি)। বাবর আজমের কথায়ই সেটি পরিষ্কার, ‘হাসানকে বাদ দেব, অধিনায়ক হিসেবে আমি সেটাও ভাবতে পারি না। হ্যাঁ, সে হয়তো ভালো করছে না। কিন্তু সে একজন ম্যাচ উইনার এবং আমাদের অনেক ম্যাচও জিতিয়েছে। একই কথা প্রযোজ্য ফখরের ক্ষেত্রেও।’
এই দুজনের ওপর আস্থাটা এই পর্যায়ে যে সেমিফাইনালেও তাদের খেলানোর আভাস দিয়ে রাখলেন পাকিস্তান অধিনায়ক, ‘আমি জানি হাসান বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, কাজেই সে সেমিফাইনালে ভালো করবে। ফখরও তার দিনে যেকোনো ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। আর একই দিনে তো সবাই ভালো পারফরম করবে না।’
টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আর সব দলের মতোই জৈব সুরক্ষাবলয়ের কঠিন শৃঙ্খলে বন্দী পাকিস্তান ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপের পরপরই তারা যাবে বাংলাদেশ সফরে। কাজেই বলয়বন্দী জীবন থেকে এখনই নিষ্কৃতি নেই। খেলোয়াড়দের মনোজগতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক।
পাকিস্তান দল কীভাবে সে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, তা জানাতে গিয়ে বাবর আজম বলেছেন, ‘যদি কারও কোনো সমস্যা হয়, আমরা দলের সিনিয়র কাউকে বলি তার সঙ্গে কথা বলতে, তাকে পরামর্শ দিতে।’আর অধিনায়ক নিজে তো সব সময়ই আছেন সেই ভূমিকায়।
সোনালীনিউজ/এআর
আপনার মতামত লিখুন :