• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

সেমিফাইনালে এগিয়ে যে দুই দল


ক্রীড়া ডেস্ক নভেম্বর ১০, ২০২১, ০৪:০৯ পিএম
সেমিফাইনালে এগিয়ে যে দুই দল

এই টুর্নামেন্টে বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজেওয়ান, ডেভিড ওয়ার্নার, মার্টিন গাপটিলদের মতো ব্যাটসম্যানরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় এগিয়ে আছেন

ঢাকা : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন বাকি দুটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। প্রথম সেমিফাইনালে বুধবার মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়ার।

টানা পাঁচটি ম্যাচ জিতে পাকিস্তান সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে, ওদিকে চারটি ম্যাচে জয় ও একটি ম্যাচ হেরে সেমিফাইনালে ওঠা ইংল্যান্ডও আছে দারুণ ফর্মে। সব কিছু মিলিয়ে এখন টুর্নামেন্টে ‘হট ফেভারিট পাকিস্তান’। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে করেন, এখন আগে কী হয়েছে সেটা আর ধর্তব্য হবে না। কারণ এই দুই ম্যাচে মানসিক চাপটাও যোগ হবে মাঠের খেলার সাথে।

নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, দুই গ্রুপের যারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন তাদের এগিয়ে রাখতে হবে। এই দুটি দলই এগিয়ে থাকবে। কিন্তু ক্রিকেট মাঠের খেলা। ম্যাচের দিন যেই দলের নার্ভ যত শক্ত থাকবে তারাই জিতে ফাইনালে উঠবে। নকআউটে খেলার হিসেব আলাদা। মানসিক চাপ থাকে একটা। বিশেষত পাকিস্তানের জন্য। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এসব ব্যাপারে এগিয়ে থাকে।

ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড যেই ফর্মে আছে এবং ফাইনাল খেলার যে অভিজ্ঞতা তাদের আছে মানসিক চাপটা তাদের কম কাবু করবে বলেই মনে করেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম। আর অস্ট্রেলিয়া এই টুর্নামেন্টে তাদের সর্বোচ্চ ফর্মে নেই বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার মতো দল যেকোনো টুর্নামেন্টের বড় ম্যাচে ভয়ংকর। খেলা সহজ হয় না তাদের সাথে। কিন্তু পাকিস্তান ফর্মের তুঙ্গে আছে, আর অস্ট্রেলিয়া মোটামুটি খেলছে। হার্ড হিটিং চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভূমিকা রেখেছে কি না এই প্রশ্নের জবাবে নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, এই ধরনের উইকেটে ফ্লোতে থাকাটা জরুরি।

এই টুর্নামেন্টে বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজেওয়ান, ডেভিড ওয়ার্নার, মার্টিন গাপটিলদের মতো ব্যাটসম্যানরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় এগিয়ে আছেন, যারা ধীরে শুরু করতে পছন্দ করেন। পরের দিকে স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নেন পরিকল্পিত ঝুঁকি নিয়ে।

যদিও জস বাটলারও ফর্মে আছেন, যিনি প্রায় ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছেন এই টুর্নামেন্টে, তবে এই টুর্নামেন্টের একমাত্র সেঞ্চুরির মালিক বাটলার যেভাবে সেঞ্চুরি তুলেছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে অন্য ব্যাটসম্যানদের জন্য- ৪৫ বলে ৫০ তোলার পর, ২২ বলে পরের ৫০ রান তুলে তিনি ৬৭ বলে সেঞ্চুরি করেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

নাজমুল আবেদীন বলেন, যে কারণে দেখবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুটি বল ডট দিয়ে যে ছক্কা মারার চেষ্টা করে আসছে সেটা এখানে সহজে করা যায় না। বরং বাবর আজম, কেইন উইলিয়ামসন ঘরানার ব্যাটসম্যানরা এখানে ভালো করে।

এই টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের সাথে বড় ব্যবধানে হারের কারণে পুরোপুরি সফল বলা না হলেও সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। যথাযথ পেস বোলিং ইউনিট- প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক। স্পেশালিস্ট লেগস্পিনার- অ্যাডান জাম্পা- ১১ উইকেট নিয়ে তিনি অন্যতম সফল বোলারদের তালিকায় আছেন। ইংল্যান্ডের সাথে ৮ উইকেটের হারটা বাদ দিলে অস্ট্রেলিয়ার এই বিশ্বকাপ সফরটা নিখুঁত।

বোলিং লাইন আপটা স্থিতিশীল স্টার্ক ইনিংসের মাঝে উইকেট এনে দিচ্ছেন, হ্যাজলউড ভালো শুরু এনে দিচ্ছেন, জাম্পা বল করছেন তবে চমক হিসেবে বল হাতে নিচ্ছেন ম্যাক্সওয়েল- তিনিও খারাপ করেননি। আর এই টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে ফর্মে ফিরেছেন ডেভিড ওয়ার্নার।

জাস্টিন ল্যাঙ্গারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে পারে স্টিভ স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিংটা, এরা ফর্মে আসলে দশে দশ অস্ট্রেলিয়া দলই পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে।

নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া একই রকম সফর কাটিয়েছে কম বেশি। পাকিস্তানের সাথে একটা ম্যাচে হার বাদে নিউজিল্যান্ডের তেমন খুঁত দেখা যায়নি। সহজেই হারিয়েছে ভারত ও আফগানিস্তানকে। নামিবিয়া বা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড হেরে যেতে পারে এমন মনে হয়নি কোনো সময়।

ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সাথে যোগ দিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার ও ইশ সোধী- এই দুই স্পিনারই বল হাতে ভারতকে রুখে দিয়েছেন ১১০ রানে থেমে গেছে ভিরাট কোহলির ভারত। জিমি নিশামও ডেথ ওভারে কেন উইলিয়ামসনের দুশ্চিন্তা কমাচ্ছেন।

তবে এখনো নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংটা বড় কোনো পরীক্ষার মুখোমুখি হয়নি। চারটি ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড, এখানে বড় ভূমিকা পালন করেছে দলটির বোলিং ইউনিট।

বর্তমান ওয়ানডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের সামনে সুযোগ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও বিশ্বকাপ জয়ের। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই দলটির নিয়মিত কয়েকটি নাম- জফরা আর্চার, বেন স্টোকস, মার্ক উডরা যোগ দেননি। বিশ্বকাপের মধ্যে চোট পেয়েছেন ফাস্ট বোলার টাইমার মিলস এবং শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন জেসন রয়, তিনি আর এই বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারবেন না।

এই একটা বিষয় ইংল্যান্ডের জন্য নেতিবাচক, কারণ দলের সমন্বয় ভাঙ্গতে বাধ্য এখন টিম ম্যানেজমেন্ট। ইংল্যান্ডের শক্তির জায়গা জস বাটলার, মইন আলী। এই দুজন যেকোনো অবস্থান থেকে ম্যাচ জয়ের সামর্থ্য রাখেন।

এই বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত অপরাজিত একমাত্র দল পাকিস্তান। বোলিং ও ব্যাটিং দুই সেক্টরেই পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা ম্যাচ জেতানোর ভূমিকা রেখেছেন। পাঁচটি জয়ে পাঁচজন ক্রিকেটার ম্যাচসেরার পুরষ্কার পেয়েছেন। পাকিস্তানের পেস বোলার শাহিন শাহ ও হারিস রৌফ ভালো বল করছেন। ইমাদ ওয়াসিম ও শাদাব খান স্পিনে কম রান দিয়ে ওভার শেষ করছেন।

দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান আছেন ফর্মে, টুর্নামেন্টের সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় ওপরের দিকেই আছেন দুজন। একই সাথে ফিনিশারের দায়িত্বে আসিফ আলী, শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ হাফিজ নিজেদের ভূমিকা পালন করছেন। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের দিকেই বেশি ঝোঁক বিশ্লেষকদের।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!