ঢাকা : পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ অল-আউট হয় বাংলাদেশ। এতে ২০১ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। ২০২ রান করলে জিতে যাবে পাকিস্তান।
এর আগে পাকিস্তানি বোলারদের বিপক্ষে মুশফিক আর ইয়াসির আলী রাব্বির প্রতিরোধ দেখার জন্য। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে দিলেন মুশফিকুর রহিম। মাঠে থাকা দর্শকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখতে পেলেন প্যাভিলিয়নের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন মুশফিক। চতুর্থ দিনের প্রথম বলে হাসান আলীকে চার মেরে শুরু করেছিলেন মুশফিক।
এক বল ডট দিয়ে তৃতীয় বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে। হাসানের হাফ ভলি বলে দৃষ্টিনন্দন ফ্লিকে মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিন শুরু করেছিলেন মুশফিক, এমন সাবলীল শুরুতে ভালো কিছুর আশা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আশা মিইয়ে যায় এক বল পরেই। ৩৩ বলে ১৬ রান আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে।
মুশফিক বিদায় নিলেও লিটনকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলে অভিষিক্ত রাব্বি। কিন্তু ড্রিংকস ব্রেকের এক ওভার আগে ৩০তম ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদির বাউন্স হতে যাওয়া বলটাকে ছেড়ে দিতে গিয়ে হেলমেটের পেছনে আঘাত পান ইয়াসির আলী রাব্বি। ফিজিও, সতীর্থরা ছুটে এসে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আবার ফিরে যান ড্রেসিং রুমেই। ব্যাটিং চালিয়ে যান রাব্বি।
কিন্তু ড্রিংকস ব্রেকের পর তিনি মাঠ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। ব্যাট হাতে মাঠে নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজ। বিশ্রামে যাওয়ার পূর্বে ইয়াসির করেছেন ৩৬* রান।
এদিকে মাথায় আঘাত লেগে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ইয়াসির আলি রাব্বি আর মাঠেই নামতে পারবেন না। তার পরিবর্তে কনকাশন হিসেবে খেলতে নামবেন নুরুল হাসান সোহান। দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে এ তথ্য।
আরো জানানো হয়েছে, ইয়াসির আলি রাব্বির মাথায় স্ক্যান করার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। স্ক্যান রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে, তার মাথার আঘাতটা কতটুকু এবং কতদিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাকে।
যদিও পুরো ওভারটাও খেলেন ইয়াসির আলি। কিন্তু মাথার যন্ত্রণায় আর টিকতে না পেরে শেষ পর্যন্ত মাঠের বাইরেই চলে যেতে বাধ্য হন তিনি। তবে তার কনকাশন হিসেবে মাঠে নামেন নুরুল হাসান সোহান।
১১ রানে মেহেদী মিরাজ আউট হলে কনকাশন হিসেবে মাঠে নামেন নুরুল। ১৫৯ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে গেল বাংলাদেশ। লাঞ্চ থেকে এসেই অর্ধশতক তুলে নিলেন লিটন দাস। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইসিংসেও হাফসেঞ্চুরি করেন। ৮৩ বলে করেন অর্ধশতক। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ২০০ রানের লিড নিয়েছে। তবে বাংলাদেশ যখন বড় অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। তখন আরেক প্রান্তে কনকাশন হিসেবে মাঠে নামা নুরুল ১৫ রান করে বিদায় নেন।
নুরুলের পর অর্ধশতক হাঁকিয়ে বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারেননি লিটন। আফ্রিদির বলে এলবি হয়ে ফিরে যান এই টেস্টের সফর এই ব্যাটার। এরপর ক্রিজে আসেন রাহি। আফ্রিদির বাউন্স ঠেকা পারলেন না। গ্লাপসে লেগে রেজওয়ানে হাতে ধরা পড়েন। শেষ উইকেট তাইজুলকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন সাজিদ খান। এতে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়। দুই ইনিংস শেষে পাকিস্তানকে ২০২ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ।
১৫ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ৫ উইকেট পেয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, সাজিদ ৩ ও হাসান আলী পেয়েছেন ২ উইকেট।
বাংলাদেশ: প্রথম ইনিংসে ৩৩০/১০
পাকিস্তান: প্রথম ইনিংসে ২৮৬/১০
বাংলাদেশ: দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭/১০
তৃতীয় দিন শেষে ৮৩ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। এর আগে ৪৪ রানে এগিয়ে থেকে স্বস্তিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বেশিক্ষণ স্বস্তি থাকেনি। ২৫ রানে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। পরে খেলার দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী রাব্বি। দুজনে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে দিন শেষ করে আসেন।
আলোক স্বল্পতার কারণে এদিনও খেলা শেষ হয়েছে আগে। দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান। মুশফিক ১২ ও ইয়াসির ৮ রানে অপরাজিত আছেন। ইতিমধ্যে ৮৩ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশে। এই ম্যাচের ফল হবে নিশ্চিত। বাংলাদেশকে ভালো কিছু আশা করতে হলে অবশ্যই ব্যাট হাতে দারুণ খেলতে হবে মুশফিকদের। নাহয় হারের গল্প লেখা হয়ে যাবে দ্বিতীয় ইনিংসেই। দিনের শেষ সেশনে মাত্র ১৯ ওভার খেলা হয়েছে। এতেই নাই হয়ে যায় ৪ উইকেট। শাহিন আফ্রিদি একাই নিয়েছেন ৩ উইকেট। তার বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :