ঢাকা : গত বছর টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন বিরাট কোহলি। ওয়ানডের অধিনায়কত্ব না ছাড়লেও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডই তাঁকে অধিনায়কত্ব করতে দেয়নি। ৩৩ বছর বয়সী সাবেক এই অধিনায়ক সে অভিমানেই কিনা এ বছরের জানুয়ারিতে টেস্ট ক্রিকেটের নেতৃত্বকেও বিদায় বলে দেন তিনি। তবে এর পর থেকে বাজে ফর্মে আছেন তিনি। এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি।
এর মধ্যে নানা মুনি নানা মত দিয়েছেন তাঁর বাজে ফর্ম নিয়ে। এই করলে ফর্মে ফিরবে, ওই করলে রান পাবে...এমন সব কথা হরহামেশাই হচ্ছে ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানকে ঘিরে। আর ভারতের শতকোটি মানুষের পাহাড়সমান প্রত্যাশার চাপ তো আছেই। সব মিলিয়ে যে কারও এমন অবস্থার মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসার কথা।
এখন চলছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের ওয়ানডে সিরিজ। হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমেছে ভারত। সেখানে বিরাট কোহলি নেই। বলা হচ্ছে, বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে তাঁকে। অনেকের মত, বাজে ফর্মের জন্য বাদ পড়েছেন।
সে যা–ই হোক, ক্যারিয়ারজুড়েই কোহলিকে ভারতীয় ক্রিকেট–সমর্থকদের প্রত্যাশার ভার টানতে হচ্ছে, যেমনটা একসময় টেনেছেন শচীন টেন্ডুলকার। এই যে অন্তহীন প্রত্যাশার চাপ, তা সামলাতে গিয়ে কিন্তু কোহলির মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ বিষয়ে মনের আগল খুলে কথা বলেছেন কোহলি। সংবাদমাধ্যমটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোহলি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি অনেকবারই এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি—দেখা গেছে, একটি কক্ষে অনেক মানুষ আছে, যারা আমাকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে, কিন্তু আমার নিজেকে একা লেগেছে। আমার মনে হয়, এমন অভিজ্ঞতা অনেকের হয়েছে। এটা অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা সব সময় যত শক্তিশালী থাকার চেষ্টাই করি না কেন, এটা আপনাকে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলতে পারে।’
খেলাধুলায় তারকা হলে প্রত্যাশার চাপ থাকেই। আর সেই চাপটা যদি হয় কোহলির মতো, তাহলে কিছু অসুবিধা তো ঘটেই। তখন একটা মানুষ তাঁর নিজস্বতার সঙ্গে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে বলেও মনে করেন কোহলি।
এ কারণে খেলাধুলা থেকে কিছুদিনের বিরতি নিয়ে সেই ‘নিজস্বতা’র সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে গুরুত্ব দিলেন কোহলি, ‘এই সংযোগটা বিচ্ছিন্ন হলে অন্য সব বিষয়ও অল্প সময়ের মধ্যে ভেঙে পড়ে।’
২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে রানখরায় ভোগার পরও মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন কোহলি। হতাশা পেয়ে বসেছিল তাঁকে। এক পডকাস্টে ইংরেজ ধারাভাষ্যকার মার্ক নিকোলাসকে বলেছিলেন, ‘ঘুম থেকে জেগে উঠে যখন মনে হতো রান করতে পারছি না, সেটা কোনোভাবেই ভালো লাগত না। মনে হতো, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে একা মানুষ।’
তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২০১৯ সাল থেকে কোহলির ব্যাটে শতক নেই। সাম্প্রতিককালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও বিশ্রাম পেয়েছেন কোহলি। তবে এশিয়া কাপের জন্য ঘোষিত ভারতের দলে আছেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অ্যাথলেটদের মধ্যে একজন এই ব্যাটসম্যান।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :