ঢাকা: ঢাকা নারী প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটি দলই চলছে সাদামাটাভাবে। একাধিক কোচ থাকলেও ট্রেনার বা ফিজিও নেই দলগুলোতে।
অথচ লিগের ৯টি দলের সবাই ছেলেদের ক্রিকেট লিগেও খেলে। নারী ক্রিকেট নিয়ে ক্লাবগুলোর কেন এই হেলাফেলা- জানতে চাওয়া হলে কর্মকর্তারা বাজেট-স্বল্পতাকে ঢাল হিসেবে তুলে ধরেন।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে পালা করে অনুশীলন করছিল লিগের দলগুলো। রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ অনুশীলন শেষ করে টিম মিটিংয়ে মগ্ন ছিল মাঠের পাশের ছাউনিতে।
প্রধান কোচ ইমন মাহমুদ ব্রিফ করছিলেন লিগের খেলা নিয়ে। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও ছোটখাটো বক্তব্য দিলেন।
এই নিগারদের জাতীয় দলে বিদেশি কোচ এবং ফিজিও রেখেছে বিসিবি। দেশের খেলায় আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া খেলোয়াড়রাই লিগের খেলায় সাদামাটা।
আবাহনী তো এখন দেশের সবচেয়ে ধনী ক্লাব। স্পন্সর বা অনুদান পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তারাও কিনা দু’জন কোচ দিয়েই কাজ চালাচ্ছে।
ফিজিও বা ট্রেনার নিয়োগ না দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে আবাহনীর ম্যানেজার শেখ মামুন বলেন, ‘আমরা মিলেমিশে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। মেয়েদের দলের বাজেট ছেলেদের দলের মতো নয়। ছেলেদের দলে পুরো পেশাদার কোচিং স্টাফ রয়েছে। মেয়েদের দলেও ধাপে ধাপে হবে। পাপন ভাই, মল্লিক ভাইয়ের নজরে এলে হয়তো মেয়েদের ক্রিকেটেও সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। বিষয়টি নিয়ে উনাদের বলতে হবে।’
মোহামেডানে ফিজিও না থাকলেও একজন ট্রেনার নিয়োগ দিয়েছে। সালমা খাতুনদের বাড়তি পাওয়া এটাই। দলের ম্যানেজার ওয়াসীম খান বলেন, ‘মেয়েদের দলে বাজেট কম থাকে। কোচিংয়ের পুরো সেট নিতে হলে খরচ বেশি পড়বে। আমরা চাই, ক্রিকেটাররা ভালো সম্মানী পাক। চেষ্টা থাকবে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ সুবিধা দেওয়ার।’
ছেলেদের ক্রিকেটে তিন দশকের বেশি সময় কোচরাই ছিলেন সর্বেসর্বা। কোচিং করানো, ফিটনেস দেখা, চোট পরিচর্যার পরিকল্পনা দেওয়া- সবই করতে হতো সারওয়ার ইমরানদের।
বিসিবি উদ্যোগী হওয়ায় ছেলেদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো একাধিক কোচ নিয়োগের পাশাপাশি, ফিজিও, ট্রেনার রাখে। ম্যাসিউরও থাকে আবাহনী, মোহামেডানের মতো বড় দলে। অথচ দেশের ক্রিকেটের আধুনিক সময়েও নারী ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরে এসেও সে সুযোগ-সুবিধা নেই। অথচ বিসিবি থেকে প্রতিটি ক্লাবকে অংশগ্রহণ ফি দেওয়া হয় আড়াই লাখ টাকা করে।
বিকেএসপিতে যাতায়াত বাবদ বাস ভাড়া, খাবার বাবদ ম্যাচের দিন সাত হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। বিসিবি নারী বিভাগের সমন্বয়ক তৌহিদ মাহমুদের কাছে ক্লাবগুলোর কোচিং সেটআপের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ক্লাবগুলোকে অনুরোধ করব আগামী বছর থেকে ট্রেনার ও ফিজিও রাখার জন্য। খেলোয়াড়দের এবং খেলার উন্নতির স্বার্থে এটা করতে পারলে ভালো।
ক্লাবের ফিজিও না থাকায় আমরা বিসিবি থেকে প্রতিটি ম্যাচ ভেন্যুতে একজন করে ফিজিও রাখি। খেলোয়াড়দের কোনো সমস্যা হলে তারা পরিচর্যা করেন। মাঠে মেডিকেল সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে।’ এ থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের ফিটনেসে ঘাটতি থাকার দায় ক্লাবের ওপরও বর্তায় কিছুটা।
সোনালীনিউজ/এআর