ঢাকা: গত কয়েক দিন মেসির দলবদল নিয়ে বেশ নাটকই হয়ে গেল! সৌদি ক্লাবের এক শ কোটি ডলারের বেশি পারিশ্রমিক মেসিকে টানেনি। ইউরোপে খেললে শুধু বার্সাতেই খেলতেন, কিন্তু সেটাও আলোর মুখ না দেখায় মায়ামিকেই নতুন ঠিকানা বানিয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা।
ভিন্ন ঘরানার ফুটবলের স্বাদ নিতেই মেসির এ সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর চলছে পেছনের কারণ অনুসন্ধান। পারিশ্রমিকের অঙ্ক আল-হিলালের চেয়ে কম হলেও ক্লাবের স্পন্সরশিপ সত্ত্বের একটি অংশ, টিকিট বিক্রির অর্থের অংশ এবং ভবিষ্যতে ক্লাবের মালিকানার অংশ মিলিয়ে ইন্টার মায়ামির প্রস্তাবও কম লোভনীয় নয়।
তবে স্প্যানিশ ক্রীড়া প্রত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বললেন, “টাকা আমার কাছে কখনোই এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। বার্সেলোনার সঙ্গে এবার আলোচনায় তো চুক্তি নিয়ে কোনো কথাই বলিনি আমরা। তারা আমাকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু কখনোই আনুষ্ঠানিক বা লিখিত ও স্বাক্ষর করা কোনো প্রস্তাব দেয়নি। পারিশ্রমিক নিয়ে দরা কষাকষি করিনি আমরা। টাকা গুরুত্বপূর্ণ হলে তো সৌদি আরব কিংবা অন্য কোথাও যেতাম, যেখানে তারা আমাকে অনেক অর্থ দিতে চেয়েছিল।”
মায়ামিতে অনেক আগেই বাড়ি কিনে রেখেছেন মেসি, যেটি এতদিন ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। এই শহরে তার বন্ধু-বান্ধবও আছে বেশ। সৌদি আরবের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে মেসির পরিবারের চাওয়ার কথাও উঠে আসছে। তার স্ত্রী ও সন্তানরা সৌদি আরবের জীবনযাপনে থাকতে চাননি বলে নানা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মেসিও বললেন, অর্থ নয় ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে মানসিক প্রশান্তিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি।“একটি ইউরোপিয়ান ক্লাব থেকেও প্রস্তাব ছিল আমার। কিন্তু তা ভেবেও দেখিনি, কারণ ইউরোপে খেললে আমার ভাবনায় ছিল কেবলই বার্সেলোনা। জীবনের এমন একটি পর্যায়ে এসেছি, যখন পাদপ্রদীপের আলো থেকে একটু দূরে থাকতে চাই, পরিবারের কথা আরেকটু বেশি ভাবতে চাই।”
“বিশ্বকাপ জিতে যাওয়ার পর এবং বার্সেলোনায় ফিরতে না পারার পর আমার মনে হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের লিগে গিয়ে ভিন্ন ঘরানার ফুটবলের অভিজ্ঞতা নেওয়ার এবং প্রতিটি দিন উপভোগের এখনই সময়। অবশ্যই দায়িত্ব একইরকম থাকবে এবং জয়ের তাড়না ও সবসময় ভালো করার চেষ্টাও থাকবে বরাবরের মতোই, তবে তা আরও বেশি মানসিক শান্তি নিয়ে।”
পিএসজিতে দুই বছর কাটিয়ে শেষে বার্সেলোনায় নতুন অধ্যায় শুরু করতে উদগ্রীব ছিলেন মেসি। কিন্তু আর্থিক জটিলতার মধ্যে ক্লাবটিতে ফিরতে জটিলতা রয়েই গিয়েছিল। দুই বছর আগের সেই অসহায় পরিস্থিতির কথা ভেবেই সেই ঝুঁকিতে আর যেতে চাননি তিনি।
“আমি সত্যিই বার্সেলোনায় ফিরতে চেয়েছিলাম। স্বপ্ন দেখেছিলাম। তবে দুই বছর আগে যা হয়েছে, সেই একই পরিস্থিতিতে আবার পড়তে চাইনি। নিজের ভবিষ্যৎ অন্যদের হাতে তুলে দিতে চাইনি… নিজের ও পরিবারের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে চেয়েছি।”
“লা লিগা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে খবর পেয়েছিলাম। কিন্তু সত্যিটা হলো, আমার বার্সায় ফেরার জন্য অনেক অনেক জটিলতাম এখনও ছিল। আমার জন্য তারা খেলোয়াড় বিক্রি করে দেবে কিংবা কয়েকজনের পারিশ্রমিক কমিয়ে দেবে, এমন কিছু চাইনি। যখন ক্লাব ছাড়তে হয়েছিল, তখনও তারা বলেছিল যে লা লিগ সব মেনে নিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। আমার ভয় হচ্ছিল, এবারও সেরকম কিছু হতে পারে এবং আবারও শেষ মুহূর্তে আমাকে তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে হবে। সব মিলিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।”
সোনালীনিউজ/এআর