ঢাকা: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। চলতি অ্যাশেজ সিরিজ শেষেই সাদা পোশাককে বিদায় বলবেন তিনি।
গতকাল শনিবার (২৯ জুলাই) অভাল টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের অবসরের ঘোষণা দেন ব্রড।
অস্ট্রেলিয়ার আরেক সাবেক অধিনায়ক টিম পেইন ইংল্যান্ডের সমর্থক গোষ্ঠী বার্মি আর্মির টুইট রিটুইট করে হাততালির ইমোজি দিয়েছেন।
ব্রড যাকে আদর্শ মেনে বড় হয়েছেন, সেই গ্লেন ম্যাকগ্রার চোখে ইংলিশ পেসার একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন। কেন, সে ব্যাখ্যা বিবিসিকে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার, ‘বড় ম্যাচে অবদান রাখতে সে ভালোবাসে। সে ভালোবাসে চাপের সঙ্গে লড়তেও। আর এসবই তো সত্যিকারের এক চ্যাম্পিয়নের বড় গুণ।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের চোখে অ্যাশেজে সবচেয়ে বড় লড়াকু খেলোয়াড় ব্রডই, ‘আমরা বেন স্টোকসকে সবচেয়ে লড়াকু যোদ্ধা বলি, তবে অ্যাশেজের সবচেয়ে লড়াকু যোদ্ধা হলো ব্রড। তার সেরা ক্রিকেটের সবটাই তো অ্যাশেজে। নিজের শেষ সিরিজে সে কতটা ভালো ছিল, সেটি সবাই মনে রাখবে। যাওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হয় না।’
অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনার টড মার্ফি দিনের খেলা শেষে ব্রডের লড়াকু মানসিকতার প্রশংসা করলেন, ‘তার মতো মানুষের প্রশংসা করতে গিয়ে সবার আগে বলতে হয় লড়াকু মানসিকতার কথা। কন্ডিশন যা–ই থাকুক না কেন, তিনি নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়ে সারা দিন লড়াই চালিয়ে যেতে পারতেন। একজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি আর কী চাইতে পারেন আপনি। অবিশ্বাস্য রেকর্ড তার! কী অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ার!’
‘শত্রুপক্ষই’ প্রশংসা করছে, সতীর্থরা যে করবেন, সেটি তো স্বাভাবিকই। সেই স্বাভাবিক কাজ করতে গিয়েই আবেগাপ্লুত হয়েছেন তারা।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক আথারটন তো ব্রডের পুরো ক্যারিয়ারের সারাংশই তুলে আনলেন নিজের কথায়, ‘কোনো সন্দেহ নেই ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। ১৬৭ ম্যাচ, ৬০২ উইকেট। (২০১৫ সালে) ট্রেন্ট ব্রিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮/১৫, এটাই তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পারফরম্যান্স। ইংল্যান্ডের জার্সিতে অ্যাশেজে তার চেয়ে বেশি উইকেট নেই অন্য কারও। সে নিজেই বলেছে, অ্যাশেজই তার সেরাটা বের করে আনে। আমি মনে করি, এ কারণেই সে এখানে থামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইংল্যান্ডের আরেক সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইনের চোখে ব্রড একজন পরিপূর্ণ ক্রিকেটার, ‘একজন গ্রেট ক্রিকেটারের শীর্ষে থাকতেই বিদায় নেওয়াটা প্রাপ্য। সে পরিপূর্ণ এক ক্রিকেটার। ফিটনেস, ভালো করার ক্ষুধা, দক্ষতা, চটপটে।’
ব্রডের হঠাৎ বিদায় ঘোষণায় একটু অবাকই হয়েছেন তার সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক, ‘আমি একটু আবেগাপ্লুত হয়েছি, একটু বিস্মিতও। বেন স্টোকস ছাড়া আর যে খেলোয়াড় বড় মুহূর্তে জ্বলে ওঠে, সে হলো স্টুয়ার্ট ব্রড।’
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গোল্ড মনে করছেন, সঠিক সময়েই বিদায় নিচ্ছেন ব্রড, ‘ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। অন্যতম লড়াকু ক্রিকেটার। এমন চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ অ্যাশেজ খেলে বিদায় নেওয়াটা তার প্রাপ্য ছিল।’
ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে ধারাভাষ্যকক্ষে নিমন্ত্রণ দিয়ে রেখেছেন ব্রডকে, ‘সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় স্টুয়ার্ট ব্রড। তবে আমার মনে হয় না আমরা তাকে সেভাবে খুব একটা বিচার করেছি। তার জন্য ধারাভাষ্য ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে!’
সোনালীনিউজ/এআর
আপনার মতামত লিখুন :