ঢাকা: ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপে খেলতে পারবেন না তামিম ইকবাল। তাই উদ্বোধনী জুটিতে কাকে দেখা যাবে এটি নিয়ে ছিল প্রশ্ন। অবশ্য উদ্বোধনী জুটিতে বিকল্প চিন্তাও আছে।
স্বাভাবিকভাবেই দলের প্রথম পছন্দ লিটন। তার সঙ্গী কে হবেন, সেটি নিয়েই এখন জল্পনা। প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে তেমন ভালো করতে পারেননি নাঈম শেখ। দুই ম্যাচ খেলে তার রান ছিল ০ ও ৯। এশিয়া কাপে তাই তানজিদের অভিষেকের সম্ভাবনা থাকছে বেশ ভালোভাবেই।
খালেদ মাহমুদও মনে করেন, এশিয়া কাপে লিটনের সঙ্গী হওয়ার দৌড়ে ভালোভাবেই এগিয়ে থাকবেন তানজিদ। আমি মনে করি তামিম হয়তো প্রথম পছন্দ হতে পারে লিটন দাসের সঙ্গে। আমি জানি না, হয়তো নাঈমও থাকতে পারে। আমি মনে করি না, বাংলাদেশ দুইটা ম্যাচেই থেমে যাবে। সেকেন্ড রাউন্ড (সুপার ফোর) খেলার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ খেলবে। সেরকম খেললে তো সুযোগ থাকবেই।”
তানজিদের সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় নেই খালেদ মাহমুদের। তবে এখন পর্যন্ত তিনি যে স্রেফ ঘরোয়া ক্রিকেট ও ইমার্জিং দলের হয়ে খেলেছেন, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। তাই এশিয়া কাপে তেমন ভালো করতে না পারলেও তানজিদের ওপর ভরসা হারাবেন না তিনি।
“ক্রিকেট এমন একটা খেলা সফল হবেন, ব্যর্থ হবেন। আমি মনে করি, এই ছেলের লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার, বড় ক্রিকেটার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এশিয়া কাপে যদি ও ব্যর্থ হয়, আমি একটুও চিন্তা করব না। কারণ ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্সের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিস্তর একটা ফারাক আছে। এটা আমাদের মানতেই হবে।”
“তারপরও আমি আশা করি, তানজিদ ওই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেবে। এশিয়া কাপে উইকেটও ভালো থাকবে। সেখানে যদি ও নিজের খেলাটা খেলে, বাংলাদেশকে দারুণ একটা সূচনা এনে দিতে পারবে।” এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচটি খেলবে আগামী ৩১ অগাস্ট, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে।
মূল এশিয়া কাপের আগে গত মাসে শ্রীলঙ্কায় ইমার্জিং টিম এশিয়া কাপে খেলেন তানজিদ। চার ম্যাচের তিনটিতেই তার ব্যাট থেকে আসে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। তবে আলাদাভাবে নজর কাড়ে তার ব্যাটিংয়ের ধরন। প্রায় সব ম্যাচেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা।
সেমি-ফাইনাল থেকে বাদ পড়ার আগে ৪৫ ছুঁইছুঁই গড়ে তানজিদ করেন ১৭৯ রান। তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৬.৯৯। সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের জার্সিতে ১১ ইনিংসে ৯৩.৩০ স্ট্রাইক রেটে বাঁহাতি ওপেনার করেন ৪৩.০৯ গড়ে করেন ৪৭৪ রান।
এর আগে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও স্ট্রোকের দ্যুতি ছড়িয়েছেন ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের কারিগরদের একজন তিনি। যুব ওয়ানডেতে অন্তত ১ হাজার রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার (১০২.৮২) চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট রয়েছে শুধুমাত্র ভারতের শুবমান গিলের (১০৩.২৩)।
ছোট থেকেই আগ্রাসী ঘরানার ব্যাটিং করা তানজিদ যুব বিশ্বকাপ জয়ের পর কিছুটা আড়ালে পড়ে যান ধারাবাহিকতার অভাবে। তবে হাই পারফরম্যান্স ইউনিটে তাকে রেখে দেয় বিসিবি। চলতি বছর প্রিমিয়ার লিগ ও ইমার্জিং এশিয়া কাপে সামর্থ্যের ছাপ রেখে প্রথমবার জায়গা করে নিলেন জাতীয় দলে।
তরুণ এই ব্যাটসম্যানকে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে দেখে আসা খালেদ মাহমুদের আশা, বড়দের ক্রিকেটেও নিজের সহজাত ব্যাটিংই করবেন তানজিদ। বিসিবিতে মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবসের আয়োজনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই বিসিবি পরিচালক বললেন, ‘ছোট’ তামিমের মধ্যে ‘বড়’ তামিমের ছায়া দেখেন তিনি।
এআর