ঢাকা : এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মধ্যে তিন ম্যাচের ‘স্যান্ডউইচ’ সিরিজ। বিশ্বকাপ ভাবনায় অতিথি নিউজিল্যান্ডের মতো এই সিরিজে বাংলাদেশও বেশ ক’জন ক্রিকেটারকে বিশ্রামে রেখেছে। দুদলের দুই অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও শেন উইলিয়ামসন নেই। হেড কোচ চ-িকা হাথুরুসিংহে ও গ্যারি স্টেড নেই দলের সঙ্গে। তাতে কি রঙ হারাচ্ছে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া সিরিজ?
মোটেই না। অন্তত বাংলাদেশের কাছে এই সিরিজের গুরুত্ব অনেক। বিশ্বকাপ স্কোয়াড চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় কিউইদের জন্য এটা শুধুই প্রস্তুতির মঞ্চ। আর বাংলাদেশ এই সিরিজ দিয়েই চূড়ান্ত করবে বিশ্বকাপ স্কোয়াড। অনেকের জন্যই তাই এটা নিজেদের প্রমাণ দেওয়ার শেষ সুযোগ। তরুণদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে আছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞরাও। সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন সত্যি করতে এই তারকাদের ফিরতে হবে স্বরূপে, ব্যাটে-বলে চেনাতে হবে নতুন করে।
সাকিব আল হাসান ছাড়াও এই সিরিজে বিশ্রামে থাকছেন মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজের মতো বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নিশ্চিত হয়ে যাওয়া বেশ ক’জন ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডের জন্য গড়া দলের লিটন, তাওহিদ হৃদয়, মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া কেউই এখনো বিশ্বকাপে খেলার নিশ্চয়তা পাননি। সেই তালিকায় মাহমুদউল্লাহ তো আছেন আগে থেকেই। বাস্তবতা তামিমকেও ঠেলে দিয়েছে অনিশ্চয়তার মুখে।
তামিম ইকবালের জন্য এ এক অন্যরকম শুরু। সর্বশেষ হোম সিরিজেও তিনি ছিলেন অধিনায়ক। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। দল ভালো করছে না, হাসছে না নিজের ব্যাটও। অধিনায়ক হিসেবে দ্বিমুখী সমালোচনাটা নিতে পারেননি তামিম। চাপে ভেঙে পড়ে সিরিজ চলাকালে হুট করেই অবসরের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে এরপর নাটক কম হয়নি। সেই সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতে খেললেন না।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরলেও পিঠের চোটে রইলেন এশিয়া কাপের দলের বাইরে। চোট কাটিয়ে অবশ্য নিজেকে তৈরি করেছেন নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য। আদতে এই প্রস্তুতিটা বিশ্বকাপের আগে নিজেকে ফিরে পাওয়ারও। ওয়ানডে ইতিহাসে দেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটারের ব্যাট ঠিক তার মতো করে হাসছে না বেশ কিছুদিন।
ক্যারিয়ারে ১৪ শতকের শেষটা করেছিলেন পাক্কা ২৬ মাস আগে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে। ম্যাচের হিসেবে সর্বশেষ ২২টিতে পাঁচটি ফিফটি থাকলেও তিন অঙ্কে পৌঁছায়নি কোনো ইনিংস। চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ বলে ৬৯ করার পর আফগানদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২১ বলে ১৩!
সর্বশেষ ১১ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটির হিসাবটা বড্ড বেমানান ২৪১ ম্যাচ খেলে দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৮৩১৩ রানের মালিক তামিমের সঙ্গে।
এই সিরিজের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস অবশ্য দুই সিনিয়রকে রাখতে চাইছেন চাপমুক্ত। তিনি জানেন, তামিম-মাহমুদউল্লাহর মাঠে চাপমুক্ত থাকা মানেই অধিনায়ক হিসেবে নিজের কাজটা সহজ হয়ে যাওয়া।
তামিম-মাহমুদউল্লাহর ফেরা নিয়ে প্রশ্ন যেতেই অগ্রজদের নির্ভার রাখতে চাইলেন, ‘দুইজন সিনিয়র খেলোয়াড় থাকলে তো অবশ্যই সব দিক থেকে হেল্প হয়। অনেক দিন পর তারা খেলতে এসেছেন। আমি চাই না কোনো কিছু নিয়ে তাদের চাপ দিতে। তারা খেলাটা উপভোগ করুক। বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করতে পারলে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।’
লিটনের উপভোগের মন্ত্র হৃদয়ে গেঁথে তামিম-মাহমুদউল্লাহর ব্যাট হাসলে হাসবে বাংলাদেশ।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :