• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

‘আট ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলায় দোষের কিছু দেখি না’


ক্রীড়া ডেস্ক অক্টোবর ১৭, ২০২৩, ১১:২৪ এএম
‘আট ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলায় দোষের কিছু দেখি না’

ঢাকা : আগ্রাসন, ৬ বোলার, আধুনিক ক্রিকেট- বিশ্বকাপের পথে এগিয়ে যাওয়ার সময় কত কথাই না হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। কিন্তু আসল জায়গায় এসে দেখা যাচ্ছে সেই পুরনো ধারণাকেই আঁকড়ে রেখেছে দল। ৮ নম্বরে নিখাদ একজন ব্যাটসম্যান নিয়ে একাদশ সাজাচ্ছে এই বিশ্বকাপে একটি দলই! সেই ব্যাটসম্যান আবার মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ একজন। সাধারণ ক্রিকেটীয় চিন্তায় এটিকে বলা যায় নেতিবাচক কৌশল।

তবে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ জানালেন, তিনশ ছাড়ানোর ভাবনা থেকেই মূলত বাড়তি ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলছে দল।

প্রায় সব দলেই ৮ নম্বরে ব্যাট করেন সাধারণত কোনো অলরাউন্ডার বা কোনো বোলার, যিনি ব্যাটিং সামলে নিতে পারেন। ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে তিন ম্যাচের দুটিতেই একাদশে ছিল ৮ ব্যাটসম্যান। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের মতো দুজন অলরাউন্ডার থাকায় তবুও অবশ্য ৫ জন বিশেষজ্ঞ বোলার ঠিকই ছিল। তবে নির্ভর করার মতো ষষ্ঠ বোলার ছিল না।

খালেদ মাহমুদ যা বললেন, তাতে অবশ্য ফুটে ওঠে যে বোলিংয়ের শক্তি বাড়ানো নিয়ে খুব একটা ভাবছেই না দল। ব্যাটিং যে বেহাল। ব্যাটিং ধসের ভয় থেকে একসময় টেস্ট, ওয়ানডে দুই সংস্করণেই ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে নিয়মিত খেলেছে বাংলাদেশ। সেসব দিন অতীত হয়ে গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছিল একটা পর্যায়ে। কিন্তু এই বিশ্বকাপে তা ফিরে এসেছে আবার।

এই কৌশল নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে প্রবল। তবে সোমবার পুনের টিম হোটেলে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে খালেদ মাহমুদ বললেন, ৮ ব্যাটসম্যানে কোনো সমস্যার তিনি দেখেন না।

আট ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলায় দোষের কিছু দেখি না। আমরা কিন্তু নির্ভর করি তিনটা ফাস্ট বোলার এবং সঙ্গে সাকিব ও মিরাজ। আমাদের কিন্তু পাঁচজন জেনুইন বোলার থাকে যারা এই সংস্করণে নিয়মিত। যে কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে, সেখানে যদি তিনশর বেশি রান না করি, তাহলে কিন্তু চ্যালেঞ্জ। হয়তো ২৮০ করেও জিতবেন। কিন্তু ওই পর্যন্ত যেতে হবে।

অষ্টম ব্যাটসম্যানকে নিয়ে তিনশ ছাড়ানোর ভাবনা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বের আর কোনো দলে নেই। টিম ডিরেক্টরের কথায় পরিষ্কার, ওপরের দিকের ব্যাটসম্যানদের ওপর ঠিকমতো ভরসা করতে পারছে না বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।

খালেদ মাহমুদ অবশ্য দাবি করলেন, ভরসা তাদের আছে। তবে বিস্তারিত যে ব্যাখ্যা তিনি দিলেন, তাতে ব্যাটিং ধসের ভয়টাই মিশে থাকল স্পষ্ট।

তাহলে প্রশ্ন হতে পারে, আমরা কি টপ অর্ডারের ওপর নির্ভরশীল নই? অবশ্যই নির্ভর করি। তবে ক্রিকেট ইজ আ ফানি গেম। হয়তো দেখা যাবে টপ অর্ডারে দ্রুত ব্রেক থ্রু হলো বা দুই-তিনটা উইকেট তাড়াতাড়ি পড়ে গেল। তখন আপনাকে শট কমিয়ে দিতে হবে, সিঙ্গেল-ডাবলস নিয়ে রোটেশনে যেতে হবে। তারপরে গিয়ে আপনি বড় কিছু খেলবেন। যেটা আমাদের আসলে হচ্ছে না। শুরুতেই পাঁচ উইকেট চলে যাচ্ছে। তাই শেষ ১০ ওভারে পাওয়ার প্লে ব্যবহার হচ্ছে না। সেখানে মাহমুদউল্লাহর ইনিংসটি হয়তো গুরুত্বপূর্ণ হতে পারত। আশা করছি সামনে এমন কিছু হবে যেখানে হয়তো ১০ বলে ২৫ রান করা লাগতে পারে। যেটা হয়তো মাহমুদউল্লাহ জেতাবে।

আগে ব্যাটিং করলে শেষ ফিনিশিংটা মাহমুদউল্লাহ করবে, সেই সুযোগটা এখনও পাইনি। যদি টপ অর্ডার ওই ব্যাটিংটা করতো, তাহলে সেটা সহজ হয়ে যেত। যদি টপ অর্ডার ভালো করতো, তাহলে একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে খেলে একজন বাড়তি বোলার খেলাতে পারতাম।

প্রবল আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে নানা ওলট-পালট নিয়েও। মেহেদী হাসান মিরাজকে একেক ম্যাচে একক পজিশনে খেলানো হচ্ছে। তিন নম্বরে এ বছর দারুণ খেললেও নাজমুল হোসেন শান্তকে এখন খেলানো হচ্ছে চারে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবে মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত পারফর্ম করতে থাকা তাওহিদ হৃদয়কে হুট করেই নামিয়ে দেওয়া হয়েছে সাতে।

খালেদ মাহমুদ যা বললেন, তাতে মূলত মিরাজকে ওপরের দিকে খেলাতে গিয়েই ব্যাটিং অর্ডারে এই পরিবর্তনগুলো করা হচ্ছে।

এমন যদি হতো মিরাজ তার পজিশনে ব্যাটিং করছে, তাহলে এই সমস্যাটাই থাকতো না। শান্ত তিন, সাকিব চার, হৃদয় পাঁচ, মুশফিক ছয়, সাতে রিয়াদ বা মিরাজ। যেভাবেই হোক। মিরাজকে টপ অর্ডারে ব্যবহার করাতে, লেফট হ্যান্ড রাইট হ্যান্ড কম্বিনেশন খোঁজাতে হয়তো জিনিসটা (বদল) হচ্ছে। মিরাজ এশিয়া কাপে একশ করেছে। বিভিন্ন সময়ে রানও করেছে টপ অর্ডরে। প্র্যাকটিস ম্যাচেও রান করেছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও ভালো ব্যাট করেছে। এই চিন্তা করেই হয়তো ওকে টপ অর্ডারে খেলানো হচ্ছে।

মিরাজ আমাদের প্লেয়িং ব্যাটসম্যান। সে তার ব্যাটিংয়ে দিন দিন উন্নতি করেছে। তারপরও আমাদের লিটন, তামিম, সাকিব, শান্ত, মুশফিক এদের ওপর নির্ভর হতে হবে। তারা রেগুলার ব্যাটসম্যান।  ওই যে একটা, উইকেট প্রাথমিকভাবে পড়লে মিরাজকে পাঠাতে চাচ্ছি, উইকেটটা যদি আটকাতে পারি, ওখানে যদি একটা জুটি গড়তে পারি, পরে হয়তো আমরা কাজে লাগাতে পারব।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!