• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

সব হারিয়ে টনক নড়ল বিসিবির, টাইগাররা কী পারবেন ঘুরে দাঁড়াতে


ক্রীড়া ডেস্ক অক্টোবর ৩০, ২০২৩, ০৪:০৬ পিএম
সব হারিয়ে টনক নড়ল বিসিবির, টাইগাররা কী পারবেন ঘুরে দাঁড়াতে

ঢাকা: বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষ হওয়ার পর অবশেষে বিসিবির বোধদয় হয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ তো শেষই হয়ে গেছে, এতো দিন পর এসে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন উপলব্ধি করলেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। তিনি কথা বলেছেন, ‘আমি জানতে চেয়েছি ওরা কি চায় বলুক। যখন যা লাগে আমরা আছি।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কলকাতায় বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস ম্যাচ দেখে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। খুব খোলামেলা কথা বলেছেন। পাপনের দাবি দলে কোনো সমস্যা না। রান পাচ্ছে না।’ ৯ ম্যাচের মধ্যে ৬ ম্যাচ শেষ। এক ম্যাচ জিতে বাকি ৫ ম্যাচ হেরেছে। হাতে আছে ৩ ম্যাচ। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অবস্থান এখন না থাকার মতো থাকা। চারদিকে সমালোচনার তীর ছুটছে ক্রিকেটারদের দিকে। বিসিবি সভাপতি পাপন খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের কী সমস্যা জানার চেষ্টা করেছেন। 

কলকাতায় কথা বলার সময় পাপনের মুখে হাসি ছিল না। অনেক দিন ধরেই তিনি সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে রয়েছেন কিংবা সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেছেন। বিশ্বকাপের যাওয়ার আগেও তিনি কথা বলেননি। তামিম ইকবালের বাদ পাড়ার পরই দেশে যেভাবে সমালোচনা শুরু হয়েছিল সেই সমালোচনার স্রোতে পড়ে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন পাপন। 

অথচ এই মানুষটি প্রতিদিনই টিভির পর্দায় হাজির ছিলেন। জুমার নামাজ পড়ে বাইরে বেরিয়ে দেখেন টিভির কামেরা প্রস্তুত। ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতে হবে। যাকে সর্বক্ষণই টিভির পর্দায় দেখা যেত সেই মানুষটি গত এক মাসে টিভির সামনে পর্যন্ত আসেননি। ক্রিকেটীয় কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি। 

এমনকি বিশ্বকাপের ৫ ম্যাচ পর্যন্ত তিনি ঢাকায় ছিলেন। খেলা দেখতেও যাননি। দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলা পৃথিবীর যেখানেই হয়েছে পাপন তার লোকবল নিয়ে হাজির থাকতেন। এই ক্রিকেট প্রেম বিরল। সেই মানুষটি এবার ঘরের দুয়ারে বিশ্বকাপের দেশে গেলেন বাংলাদেশের ৬ নম্বর ম্যাচে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। তা-ও নাকি পুরো ম্যাচ দেখেননি। সংবাদমাধ্যমের কাছে পাপন জানিয়েছেন, তিনি কলকাতায় পৌঁছে দলের সঙ্গে কি কি কাজ করেছেন। দলের মধ্যে আগুন লেগেছে কিনা, লেগে থাকলে সেটা নেভাতে চেয়েছেন। কিন্তু পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন পাপন, ‘দলের ভেতরে কোনো সমস্যা সেই।’ সমালোচকরা ক্রিকেটারদের চামড়া তুলে ফেলছে। বিসিবি সভাপতি গিয়ে বুঝিয়েছেন খারাপ হলে মানুষ এটা বলবে। অবশ্যই বলবে। এই খারাপ সময়টায় আমরা (বিসিবি) তোমাদের পাশে আছি।’

পাপন খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। কারো কারো সঙ্গে একা কথা বলে বুঝার চেষ্টা করেছেন গলদটা কোথায়। এটা তো অপ্রত্যাশিত। এতোদিন ধরে এভাবে চলতে পারে না। কী হয়েছে খেলোয়াড়দের যে, তারা রান পাচ্ছে না। পাপন বলেন, ‘আমি বেশ কয়েক জনের সঙ্গে বসেছি। সাকিবের সঙ্গে আলাদা, মুশফিক-রিয়াদের সঙ্গে একসঙ্গে কথা বলেছি, মিরাজ, লিটন দাসের সঙ্গে কথা বলেছি। সবার সঙ্গেই কথা বলেছি। ওদের দুটা জিনিস দরকার এক, সাহসটা ফেরানো। দুই, বিশ্বাসটা জাগানো। ওরা পারে-এটা ফিরিয়ে আনতে হবে। 

কেউ বলেছে প্রথম তিন-চার জন রান না করলে শেষ দিকের রান দিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না।’ খেলোয়াড়রা কী বলেছেন? ‘ওরা (ক্রিকেটাররা) ইউনাইটেড। তারা সকলেই বলেছেন সবাই এক হয়ে আছে। কোনো সমস্যা নেই। তারা লড়াইয়ে ফিরবে-বললেন বিসিবি সভাপতি। তিনি এখন ক্রিকেটারদের পরামর্শ চাইছেন। বলেছেন, ‘আমি ওদের (ক্রিকেটারদের) বলেছি, সাজেশন থাকলে নিতে রাজি আছি। ওরা বলেছে আমাদের চাওয়ার কিছু নাই। কথা বলে বুঝলাম ওরা সিরিয়াস।’

বিশ্বকাপের ২২ গজে সবকিছু লেজেগোবরে করে দিয়ে এখন শেষ মুহূর্তে বিসিবি কর্তারা যদি খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেন তাহলে কী লাভ হবে। বিসিবি যদি খেলোয়াড়দের সঙ্গে এই বসাটা বিশ্বকাপের আগে বসত তাহলে তো অনেক কিছু্ জানার সুযোগ আসতো। বিশ্বকাপের আগেও সাকিবের সঙ্গে বসেছেন বিসিবি বস। তখন কেন অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসেননি তিনি। বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগেও তো সব খেলোয়াড়কে আজকের মতো করে জিজ্ঞেস করতে পারতেন তোমরা কী চাও বলো। 

যখন যা লাগে আমরা আছি। কোনো সাজেশন থাকলে নিতে রাজি আছি। জানতে চাইতে পারতেন তামিম ইকবালকে দরকার আছে কি না। তামিম খেলবেন সেটা তো আগেই নির্ধারিত ছিল। বিশ্বকাপ দলে মেন্টর হিসাবে মাশরাফিকে নেওয়ার কথা উঠেছিল সেটা কেন হারিয়ে গেল। তাহলে কী সব হারিয়ে বিসিবির বোধদোয় হলো।

এআর

Wordbridge School
Link copied!