• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

৭ গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ইউনাইটেডকে হারাল কোপেনহেগেন


ক্রীড়া ডেস্ক নভেম্বর ৯, ২০২৩, ১১:৪০ এএম
৭ গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ইউনাইটেডকে হারাল কোপেনহেগেন

ঢাকা : স্বপ্নের মতো শুরু পেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু তাদের দুঃস্বপ্নের শুরু হলো মার্কাস র্যাশফোর্ডের লাল কার্ডের পর থেকে! দুই গোল শোধ করে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিরতিতে গেল এফসি কোপেনহেগেন। দ্বিতীয়ার্ধেও গোল হলো মুড়িমুড়কির মতো। আরও একবার এগিয়ে গেল ইউনাইটেড, কিন্তু ধরে রাখতে পারল না ব্যবধান। স্মরণীয় জয়ের আনন্দে ভাসল কোপেনহেগেন।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের মাঠে বুধবার ‘এ’ গ্রুপে সাত গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচটি ৪-৩ ব্যবধানে জিতেছে কোপেনহেগেন। প্রথম লেগে ইউনাইটেডের মাঠে হেরেছিল তারা।

এই জয়ে চার ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো কোপেনহেগেন, ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখল নকআউট পর্বের আশা। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে গালাতাসারাই। ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে ইউনাইটেড।

এই গ্রুপ থেকে সবার আগে নকআউট পর্বে উঠেছে বায়ার্ন। গালাতাসারাইকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হওয়াও নিশ্চিত করেছে বুন্ডেসলিগার দলটি।

বায়ার্ন ও গালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে টানা দুই হারের পর কোপেনহোগেনের বিপক্ষে প্রথম দেখায় গ্রুপ পর্বে জয় পেয়েছিল ইউনাইটেড।

পোস্টে রাখা প্রথম শটেই এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। তৃতীয় মিনিটে ডান দিক থেকে ওয়ান-বিসাকার পাস বক্সে পেয়ে একটু এগিয়ে বাইলাইনের উপর থেকে গোলমুখে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান স্কট ম্যাকটমিনে। ক্লিয়ার করতে পারেননি কেউ। টোকায় বাকি কাজটুকু অনায়াসে সারেন দূরের পোস্টে ফাঁকায় থাকা হয়লুন।

ষোড়শ মিনিটে চোট হানা দেয় ইউনাইটেড শিবিরে; মাঠ ছাড়েন জনি ইভান্স; বদলি নামেন রাফায়েল ভারানে।

৩০তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। মাঝমাঠ থেকে ব্রুনো ফের্নান্দেসের কোনাকুনি পাস ধরে বেশ খানিকটা এগিয়ে শট নেন আলেহান্দ্রো গারনাচো। গোলরক্ষক ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। আলগা বল জালে জড়িয়ে দেন হয়লুন।

পরের মিনিটেই হ্যাটট্রিক পূরণ হতে পারত এই ডেনিশ ফরোয়ার্ডের। তার ভলি গ্লাভসের টোকায় ক্রসবারের উপর দিয়ে বের করে দেন গোলরক্ষক কামিল। একটু পর হ্যারি ম্যাগুইয়ারের শটও আটকান কোপেনহেগেনের এই পোলিশ গোলরক্ষক।

৩৯তম মিনিটে আবারও সুযোগ নষ্ট করেন হয়লুন। নিজেদের অর্ধ থেকে ফের্নান্দেসের পাস ধরে আক্রমণে ওঠা এই ফরোয়ার্ড গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে কোনাকুনি শট নেন, কিন্তু বল দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।

দুই মিনিট পর র‌্যাশফোর্ডের সরাসরি লাল কার্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ইউনাইটেড। এলিয়াসকে বক্সের ঠিক বাইরে বাজেভাবে ফাউল করেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। বেশ খানিকটা সময় নিয়ে ভিএআর-এ চেক করে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ফ্রি কিক ফেরানো ফের্নান্দেসের হেড নিজেদের ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়।

এমনিতেই চলতি মৌসুমে ছন্দহীনতায় ভুগছেন র‌্যাশফোর্ড, অনুশীলনে চোট পাওয়ায় প্রিমিয়ার লিগে ফুলহ্যামের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতা ম্যাচেও খেলতে পারেননি তিনি। মাঠে ফেরাটা তার জন্য সুখের হলো না মোটেও।

এরপর যেন হঠাৎ ঝড়ে খেই হারিয়ে ফেলে ইউনাইটেড। মুহূর্তেই হজম করে দুই গোল। ৪৫তম মিনিটে পিটারের ক্রসে দিয়োগো গনসালভেসের টোকায় বল চলে যায় বক্সের মাঝামাঝি, অরক্ষিত মোহামেদ এলিয়োনোসি নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে নিচু স্পট কিকে সমতা ফেরান গনসালভেস। বক্সে ম্যাগুইয়ারের হাতে বল লাগলে পেনাল্টিটি পায় তারা।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকে ইউনাইটেডকে চাপ দিতে থাকে কোপেনহেগেন। ৫২তম মিনিটে ডেনিস ভাভরোর শট ঝাঁপিয়ে গ্লাভসে জমান আন্দ্রে ওনানা। সাত মিনিট পর গনসালভেসের নিচু জোরাল শটও ফেরান তিনি।

৬৯তম মিনিটে ফের্নান্দেসের সফল স্পট কিকে ফের এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। এবার বক্সে ম্যাগুইয়ারের হেডে লুকাস লেরাগেরের হাতে লাগলে ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ইউনাইটেডের এ আনন্দও উবে যায় ৮৩তম মিনিটে কাছের পোস্ট দিয়ে নিখুঁত শটে লুকাস লক্ষ্যভেদ করলে।

চার মিনিট পর ইউনাইটেডকে হতাশায় ডোবায় কোপেনহেগেন। বক্সে ফাঁকায় থাকা সাইড ভলিতে জয়সূচক গোলটি করেন রুনি বার্দগি।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ম্যাগুইয়ারের শট ক্রসবারের উপরের দিকে লেগে বেরিয়ে গেলে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি ইউনাইটেডের। রোমাঞ্চকর জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসে ডেনমার্কের ক্লাবটি।

কেইনের জোড়া গোল : গ্রুপের অন্য ম্যাচে শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণ করেও গোল পাচ্ছিল না বায়ার্ন মিউনিখ। ৫৩তম মিনিটেও হ্যারি কেইনের শট কাছের পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডই ৮০তম মিনিটে খোলেন ম্যাচের ডেডলক। ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণও করেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গালাতাসারাই এক গোল শোধ করলেও আটকাতে পারেনি বায়ার্নকে। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বুধবার ২-১ গোলে জেতা বায়ার্ন চার ম্যাচে শতভাগ সাফল্য নিয়ে উঠল নকআউট পর্বে।
৭ গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ইউনাইটেডকে হারাল কোপেনহেগেন

নকআউটে এক পা আর্সেনালের : এমিরেটস স্টেডিয়ামে দুই অর্ধের গোলে সেল্টিককে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে নকআউট পর্বের পথে অনেকটা এগিয়েছে আর্সেনাল।

২৯তম মিনিটে লেয়ান্দ্রো ত্রোসার্দ দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৬৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বুকায়ো সাকা। গ্রুপের অন্য ম্যাচে লুক ডি ইয়ংয়ের একমাত্র গোলে পিএসভি আইন্দহোভেন জিতেছে লঁসের বিপক্ষে।

চার ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে আছে আর্সেনাল। ৫ করে পয়েন্ট নিয়ে পিএসভি দ্বিতীয় ও লঁস তৃতীয় স্থানে আছে। ২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে সেভিয়া।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!