ঢাকা : শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে যুক্ত হলেন নতুন দুজন। ব্যাটিং কোচ হিসেবে এবার স্থায়ী মেয়াদে দায়িত্ব পেলেন ডেভিড হেম্প। আর বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো আন্দ্রে অ্যাডামসকে।
দুই বছরের জন্য তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিসিবি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হেম্প ও অ্যাডামসের নিয়োগের খবর জানিয়েছে দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটি।
গত বছরের বিশ্বকাপের আগে থেকেই বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের পদটি খালি। সহকারী কোচ নিক পোথাসকে দিয়ে মাঝে কাজ চালানো হয়। পরে ডিসেম্বরে নিউ জিল্যান্ড সফরে সাময়িক দায়িত্বে ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করেন হেম্প। এবার পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে দায়িত্ব পেলেন তিনি।
জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হওয়ার দৌড়ে ছিল আরও কয়েকটি নাম। বিসিবির বিজ্ঞপ্তির পর সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল এবং জাতীয় দলের সাবেক ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাভিরা। তাদের পেছনে ফেলে দায়িত্বটি পেয়েছেন হেম্প।
অ্যাডামস ছাড়াও পেস বোলিং কোচের পদে আবেদন করেছিলেন বিভিন্ন সময় বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে কাজ করা মাহবুব আলম জাকি। তবে এই দায়িত্বের জন্য নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডারকেই উপযুক্ত মনে করেছে বিসিবি।
গত বছরের মে মাস থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাজ করছেন হেম্প। তখন তাকে আনা হয় হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের প্রধান কোচের দায়িত্ব দিয়ে। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ছিল তার ওই চুক্তি।
এবার নতুন দায়িত্বে নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজদের সঙ্গে দেখা যাবে হেম্পকে। আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে শুরু হবে বারমুডার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সাবেক ব্যাটসম্যানের কাজ।
ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন ও ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে হেম্পের রয়েছে সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার। শুরুতে ইংল্যান্ডের হয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেন। ১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ড ‘এ’ বাংলাদেশ সফরেও আসেন তিনি।
তবে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে কখনও জায়গা করে নিতে পারেননি। তাই জন্মভূমির হয়েই খেলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। বারমুডার হয়ে ২২টি ওয়ানডে ও ২টি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার, খেলেছেন ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও। সব মিলিয়ে আড়াইশর বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি।
খেলোয়াড়ি জীবন শেষে কোচিং শুরু করেন হেম্প। পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত। এর আগে অস্ট্রেলিয়ায় মেলবোর্ন স্টার্স ও ভিক্টোরিয়ার মেয়েদের দলেও কাজ করেছেন তিনি। পরে বিসিবির এইচপি ইউনিটে যোগ দেন ইউকে-কোয়ালিফাইড লেভেল ৪ কোচ।
২০০২ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত সময়ে নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৪৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন অ্যাডামস। ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলসের হয়েও খেলে গিয়েছেন তিনি। প্রায় দেড় যুগের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ৪ হাজার ৫৪০ রান ও ৬৯২ উইকেট শিকার করেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
২০১৩ সালে খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের ইতি টানার পরই কোচিং অধ্যায় শুরু হয় অ্যাডামসের। বিসিবির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে নিউ জিল্যান্ড নারী দলের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
এছাড়া একটি সিরিজে নিউ জিল্যান্ড পুরুষ দলের বোলিং কোচ ও একটি সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার সহকারী কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন অ্যাডামস। ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ান শেফিল্ড শিল্ডে নিউ সাউথ ওয়েলস ব্লুজের বোলিং কোচ ছিলেন তিনি।
এমটিআই