ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের দুই ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের ফোনালাপ নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। এরপর বুধবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটায় ফেসবুক লাইভে আসার ঘোষণা দিয়ে স্ট্যাটাস দেন তামিম। পরে সেখানে খোলাসা করলেন সেই ফোনালাপের নেপথ্যের কাহিনী।
আজ তামিম লাইভে আসেন মিরাজসহ আরও দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে। লাইভে যুক্ত ছিলেন আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর আহমেদ মিশুকও। মূলত, নগদের প্রচারকে কেন্দ্র করেই মঞ্চায়িত হয়েছে মিরাজ ও তামিমের ফোনালাপ।
লাইভে এসে তামিম জানিয়েছেন, ইদ উপলক্ষে একটি ক্যাম্পিং শুরু হয়েছে নগদের। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ২৪ জন গ্রাহককে উপহার দেওয়া হবে জমি। তবে শর্ত হচ্ছে, এই ক্যাম্পেইনে জিততে হলে দুইজন বা তিনজন করে দল গঠন করে লেনদেন করতে হবে। সেই দলেই তিনি রেখেছিলেন তিনি। তবে দল থেকে বের হয়ে গেছেন মুশফিক। এটিই ভাইরাল সেই ফোনালাপের কাহিনী।
---ফেসবুক লাইভে তামিমের সঙ্গে মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুশফিক
গতকাল মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টিভি তাদের ইউটিউব চ্যানেলে দাবি করেছিল, তামিম ইকবালের ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে এবং সেটা তারা পেয়েছে। সে ফোনালাপে তামিমকে মিরাজের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। সর্বশেষ বিপিএল-জয়ী ফরচুন বরিশাল দলে থাকা সতীর্থের কাছে দলটির আরেক সদস্য মুশফিকুর রহিমের নামে বিষোদ্গার করতে দেখা গেছে।
তামিম ও মিরাজের ফোনালাপটি পাঠকের সুবিধার্থের তুলে ধরা হলো:
তামিম: ‘হ্যালো, মিরাজ?’
মিরাজ: ‘হ্যাঁ, তামিম ভাই। আসসালামু আলাইকুম।’
তামিম: ‘কী অবস্থা রে, কেমন আছিস?’
মিরাজ: ‘এই তো আলহামদুলিল্লাহ, ভাই। আপনি কেমন আছেন?’
তামিম: ‘কেমন থাকি রে? মুশফিক এটা কোনো কাজ করছে রে মিরাজ?’
মিরাজ: ‘ভাই, শুনলাম আমিও। সে জিনিসটা…ঠিক আছে… এখন কী করবেন।’
তামিম: ‘না, এটা তো একটা... লাস্টে আমাদের… ফাইনালের পরে আমাদের মিটিংয়ে কী কথা হইছে? আমি তোরে ওই সময় একটা কথা বলছিলাম না যে আমরা চেষ্টা করব যে ৭০ থেকে ৮০ পারসেন্ট আমরা যেন সেইম টিম থাকতে পারি। ঠিক আছে? আর এই কথার আমার বেইসই ছিল তুই মুশফিক সব সহ। ঠিক না?’
তামিম: ‘মুশফিক আমার জন্য ইম্পর্ট্যান্ট একজন ছিল। সে করছেটা কী শোন। সে আমার সাথে তো কথা বলেই নাই বলেই নাই, সে বলে এখন আলাদা একটা টিম বানাচ্ছে। শুনছস এটা?’
মিরাজ: ‘আমি একটু হালকা একটু শুনেছিলাম বাট হান্ড্রেড পারসেন্ট কনফার্ম ছিলাম না। বাট আপনি এখন যেটা বললেন আমি তো এখন হান্ড্রেড পারসেন্ট শিওর হলাম যে ভাই মনে হয় আলাদা টিম বানাচ্ছে।’
তামিম: ‘না, ভাই মিরাজ, তুই দেখছস… আমি ওরে কী ধরনের ফ্রিডম দিছি পুরা টিমে, হ্যাঁ? আমি ওরে দায়িত্ব দিছি পুরা টিম চালানোর। খেলা শেষ হইছে, খেলা শেষে আমি সবচেয়ে বেশি ওরে প্রেইজ করছি। আমি এখন পর্যন্ত ওরে প্রেইজ করি যে সে পুরা টিমটা হ্যান্ডেল করছে, তার কন্ট্রিবিউশনটা কত বেশি। সে এই মুহূর্তে আমাকে এইরকম মাঝপথে ছেড়ে যাওয়াটা কি উচিত ছিল?’
মিরাজ: ‘এখন কী করবেন ভাই? এখন ভাই গেছে। এখন সে তো আপনারই ফ্রেন্ড।’
তামিম: ‘আরে না। এখন তোদের সাথে নাই, খেলি না তো ন্যাশনাল টিমে, এখন অনেকের অনেক ভাবটাব বেড়ে গেছে। এটা হলো সমস্যা। ঠিক আছে।’
মিরাজ: ‘ভাই?’
তামিম: ‘কারণ হলো, যখন তোদের সাথে খেলতাম, ক্যাপ্টেন থাকলে তো আর এরকম তোরা করতে পারতি না। এখন আমার দাম নাকি, দাম কমে যাচ্ছে দেখে তোরা এসব করতেছস। ’
মিরাজ: ‘ভাই শোনেন… রাগ কইরেন না। প্লিজ। কারণ কী ভাই, আপনি তো জানেন মুশফিক ভাই সম্পর্কে। সে তো একটু ইমোশনাল। হতো ইমোশনাল হয়ে…’
তামিম: ‘ছোটবেলা থেকে ও আমার ফ্রেন্ড। ও একবার আমাকে অ্যাটলিস্ট বলত চলে যাওয়ার আগে। অ্যাটলিস্ট তখন তো আমার একটু শান্তি হইতো যে, না অ্যাটলিস্ট বলে গেছে। অসুবিধা নাই মিরাজ। সময় আমারও তো আসবে। পৃথিবী গোল কিন্তু… শুনে রাখ মিরাজ। একটা কথা শোন… পৃথিবী গোল… আজকে তুই ওই সাইড, আমি এই সাইড। কালকে আমি ওই সাইডে বসব, তুই ওই সাইডে আসবি। ভুলে যাইস না। আর তোর বড় ভাইরেও বলে দিস।’
মিরাজ: ‘ভাই আপনি রাগ কইরেন না, ঠান্ডা হন। আমি দরকার হলে ভাইয়ের সাথে…’
তামিম: ‘তুই দেখ আমি কী করি। আমি কথা কব নে তোর সাথে। এ ব্যাপারে কথা কব। জিনিসটা, কাজটা ও কোনোভাবেই ঠিক করে নাই।’
মিরাজ: ‘না ভাই, কিছু করার দরকার নাই। কিছু করার দরকার নাই।’
এ পর্যায়ে কল কেটে যাওয়ার আওয়াজ পাওয়া যায়।
এমএস