ঢাকা : এখনকার সময়ে টেলিভিশন কিংবা স্মার্টফোনের পর্দায় যেকোনো খেলা উপভোগ করা হয়ে গিয়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষণীয়। তবে মাঠের সবকিছু কি ধরা পড়ে চারকোণা পর্দায়! অবশ্যই নয়। গতরাতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বাংলাদেশের ৪ রানের পরাজয়ের আক্ষেপ আরও ভারি হয়েছে পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ছক্কাটি না হওয়ায়।
কেন হলো না ছক্কাটি? কেশব মহারাজ কি শেষ ওভারটি খুব দুর্দান্ত করেছিলেন! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কখনোই ইনিংসের শেষ ওভার করেননি মহারাজ। কাল ইনিংসের মাঝামাঝি পর্যায় থেকেই তিনি জানতেন শেষ ওভারটি করতে হবে। প্রোটিয়া দল চাইছিল যত বেশি সম্ভব রান রেখে দিতে মহারাজের জন্য। এ কারণেই পেসারদের দিয়ে আগের ওভারগুলো করান অধিনায়ক মার্করাম।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। রিয়াদ ভরসা রেখেছিলেন জাকেরের ওপর। তিনি জানতেন নাসাউয়ের গোলকধাঁধা উইকেটে দুটি বাউন্ডারি মারতে চাওয়া বিলাসিতা বৈ আর কিছু নয়। কেশব মহারাজ ম্যাচশেষে জানিয়েছিলেন তিনি প্রচন্ড স্নায়ুচাপে ভুগছিলেন। প্রথম বলটিতো ওয়াইড করেন। চেয়েছিলেন নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করার।
ওই ওভারে তিনটি ফুলটস দেন মহারাজ। যার প্রথমটি দ্বিতীয় বলে। দুই রান নিয়েছিলেন জাকের। পরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ হন তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে রিয়াদকে আরও একটি লোয়ার ফুলটস করেন মহারাজ। মূলত তিনি চেয়েছিলেন ইয়র্কার করতে। তবে পিছন থেকে ধেয়ে আসা বাতাস মহারাজের পরিকল্পনায় বাদ সাধে।
কপাল ভালো ছিল মহারাজের। নিজেই বলেছেন, ঠিক যে কারণে ইয়র্কার করতে চাওয়া বলটি ফুলটস হয় সেই বাতাসই রিয়াদের ছ্ক্কা হতে দেয়নি। টিভি পর্দায় বা খালি চোখে যা ধরতে পারা অসম্ভব। পর্দায় আরেকটি বিষয় ধরা পড়েনি। সেটি হলো এইডেন মার্করামের দুর্দান্ত ক্যাচ। রিয়াদ শট খেলার পর চার সেকেন্ড সময় পেয়েছিলেন মার্করাম।
লং অনে দাঁড়ানো মার্করাম নিজের বাঁ দিকে দৌড় শুরু করার পর খেয়াল করেন বল কোথায়? প্রথম দেখায় তার মনে হয়েছিল সীমানা পেরিয়ে যাবে বলটি। বিকল্প ছিল লং অফে ফিল্ডিং করা মার্কো ইয়ানসেনের সঙ্গে রিলে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করা। ঠিক ওই মুহূর্তেই মার্করাম অনুভব করেন বলের গতি বাতাসে বিঘ্নিত হচ্ছে। ততক্ষণে বলের লাইনে চলে আসেন তিনি। শেষ পর্যন্ত একাই লুফে নেন ম্যাচ জেতানো ক্যাচটি।
তার পরও সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ ছক্কা হাঁকানো তাসকিনকেও শেষ বলটি ওয়াইড ফুলটস করেছিলেন মহারাজ। তাসকিনও চেয়েছিলেন সজোরে হাঁকাতে, কিন্তু পারেননি। কারণটা ওই বাতাসে এলোমেলো করে দেওয়া বলের লাইন। শেষতক তাই ৪ উইকেটের হারই কপালে জোটে বাংলাদেশের।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :