ঢাকা: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডিএলএস পদ্ধতিতে নামিবিয়ার লক্ষ্য ছিল ১২৬ রান। মাইকেল ফন লিঙ্গেন ও নিকোলাস ডেভিনের ওপেনিং জুটি তেমন গতি পাচ্ছিল না, ষষ্ঠ ওভার শেষে ডেভিন তাই স্বেচ্ছায় উঠে যান।
কার্যত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ও এ সংস্করণে মাত্র চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে রিটায়ার্ড আউট হন ডেভিন।
খানিকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ব্যাটিংয়ে আসতে হয় ভিসাকে। ব্যাটিংয়ে নেমে নামিবিয়ার হার আটকাতে পারেননি, কিন্তু ১২ বলে ২৭ রানের ইনিংসে ঠিকই রেখেছেন ছাপ। ম্যাচের ২ বল বাকি থাকতে জফরা আর্চারের বলে হ্যারি ব্রুকের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামেন। ফেরার পথে ক্রিস জর্ডান, ব্রুক, আর্চাররা এসে জড়িয়ে ধরছিলেন ভিসাকে। ইঙ্গিতটা পাওয়া যাচ্ছিল তখনই। উঠে যাওয়ার পথে হেলমেট খুলে দর্শকদের অভিবাদনের জবাবও দেন। সেটিতেই নিশ্চিত হয়, ভিসার এটিই তাহলে শেষ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে ভিসা নিজেও সেটি নিশ্চিত করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের শেষ ম্যাচটি গতকাল খেলে ফেললেন তিনি। ভিসা বলেন, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, এখনকার জন্য (সেটিই)। মানে পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আরও দুবছর বাকি, এখন আমার বয়স ৩৯ বছর। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আমার খুব বেশি অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। এখনো খেলতে পছন্দ করি, হয়তো আরও দুই বছরের মতো খেলব। মনে হয় এখনো অবদান রাখতে পারি, অনেক খেলা বাকি। তবে নামিবিয়ার হয়ে আমার বিশেষ ক্যারিয়ার শেষ করতে এর চেয়ে ভালো জায়গা কই পাব!’
ভিসার কথাতেই স্পষ্ট, টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে এখনো খেলে যেতে চান। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলতে গতকালকের ম্যাচটিকেই উপযুক্ত মনে করেছেন, ‘তাদের হয়ে ভালো সময় কেটেছে। এবং সম্ভবত বিশ্বকাপে বিশ্বমানের মতো দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের (নামিবিয়ার) হয়ে খেলা শেষ করাটিকেই উপযুক্ত সময় মনে হয়েছে।’
ব্যাটিংয়ের আগে বোলিংয়েও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ ছিলেন ভিসা। বৃষ্টির কারণে ১১ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে প্রথম ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ফিল সল্টের উইকেট নেন। বেশ কিছুক্ষণ কাভারে ঢাকা পিচে ভিসার লাইন ও লেংথ ছিল দুর্দান্ত। তখন পর্যন্ত একজন বোলার সর্বোচ্চ ৩ ওভার করতে পারবেন, নিয়ম ছিল এমন। কিন্তু আবার বৃষ্টি আসায় ম্যাচ নেমে আসে ১০ ওভারে। ভিসা তাই তৃতীয় ওভারটি করতে পারেননি।
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল ভিসার। ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রোটিয়াদের হয়ে ২৬টি ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০১৬-১৭ মৌসুমে কলপ্যাক চুক্তিতে ইংল্যান্ডের কাউন্টি দল সাসেক্সে যোগ দেন ভিসা, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ছেদ পড়ে তাতে।
বাবার জন্মসূত্রে নামিবিয়ার হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন ২০২১ সালে। সেবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নামিবিয়ার হয়ে অভিষেক হয় তার। তাদের হয়ে ৩৪টি টি-টোয়েন্টি ও ৯টি ওয়ানডে খেলেছেন ভিসা। নামিবিয়ার হয়ে সীমিত ওভারে ৭৬০ রান করার পাশাপাশি নেন ৪১টি উইকেট। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব পেরিয়ে সুপার টুয়েলভে গিয়েছিল নামিবিয়া, টানা দুই জয়ে ম্যাচসেরা ছিলেন ভিসা। এবারও ওমানের বিপক্ষে সুপার ওভারে গিয়ে নামিবিয়ার জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :