ঢাকা : ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জিতেছেন পেলে। ডিয়েগো ম্যারাডোনাও আর্জেন্টিনাকে দিয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। তারা দুজনেই তাই ফুটবলের কিংবদন্তি। শুধু বিশ্বকাপ জেতার জন্যই নয়। ফুটবলের মাঠে তাদের রয়েছে আরও স্মরণীয় সব কীর্তি। কতশত রেকর্ডে তারা অমর হয়ে আছেন। সর্বকালের সেরা ফুটবলারের তালিকার শুরুতেই আসবে তাদের নাম। কিন্তু এই দুজনের কেউই জিততে পারেননি কোপা আমেরিকার ট্রফি।
তবে এ নিয়ে কখনও আফসোস শোনা যায়নি তাদের কণ্ঠে। এমনকি বলতে হয়নি কোনো কথাও। দরকারই যে পড়েনি। স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি যে ছুঁয়ে ফেলে, কোপার স্বাদ না পেলে তার কি আর যায় আসে!
পেলে একবারই কোপা আমেরিকায় খেলেছেন। সেটা ১৯৫৯ সালে। প্রথমবার ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতার পরের বছরই। সেখানে যথারীতি পেলেসুলভই খেলেছেন। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন, চিলির বিপক্ষে জোড়া গোল। সব মিলিয়ে ৮ গোল করে ওইবার কোপার সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন। ১৯ বছর বয়সের পেলে সেবার জিতেছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও। কিন্তু জিততে পারেননি শিরোপা। তাকে কাঁদিয়ে সেবার ট্রফি ঘরে তুলেছিল আর্জেন্টিনা।
তবে এরপর আর কখনই দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে তাকে দেখা যায়নি। খেলতে পারলে পেলে যে ব্রাজিলকে কোপার একাধিক ট্রফি এনে দিতে পারতেন, এ নিয়ে মনে হয় না কারও সন্দেহ আছে।
২০২১ সালের আগে আর্জেন্টিনা শেষবার কোপা জিতেছিল ১৯৯৩ সালে। আর সেটাই ম্যারাডোনার আক্ষেপ হয়ে থাকবে। ম্যারাডোনা তখন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। আর্জেন্টাইন ফুটবলের অবিসংবাদিত তারকা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন অনেক আগেই। কিন্তু ততদিনে মাদক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়ে পথও হারিয়েছেন। আর্জেন্টিনার সেই সময়ের কোচ আলফিও বাসিলে তাই ১৯৯৩ সালে কোপার দল গড়েছিলেন ‘ফর্মহীন’ ম্যারাডোনাকে বাদ দিয়েই।
তবে ম্যারাডোনাও খেলেছেন কোপার তিনটি আসরে। কাকতালীয়ভাবে ১৯৭৯ সালে পেলের মতো ম্যারডোনারও কোপায় অভিষেক হয় ১৯ বছর বয়সে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ম্যারাডোনার। নিজে দারুণ খেললেও তার দল সে বছর কোপা জিততে পারেনি। পারেনি ১৯৮৬ বিশ্বকাপ কাঁপিয়ে পরের বছর কোপা খেলতে যাওয়ার পরও। সেবারও খালি হাতে ফিরেছে আর্জেন্টিনা। শেষবার খেলেছিলেন ১৯৮৯ সালে।
তবে ম্যারাডোনাকে ছাপিয়ে গেছেন লিওনেল মেসি। তিনি জিতেছেন সম্ভাব্য সব শিরোপা। ম্যারাডোনার সঙ্গে এবারের কোপার আসরে অবশ্য মিল পাওয়া যায় নেইমারের। চোটাক্রান্ত নেইমার দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে। তাই ফর্মহীন এই ফুটবলারকে নিয়ে ঝুঁকি নেয়নি ব্রাজিল।
এমটিআই