• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

মাহমুদউল্লাহ কি স্ট্রাইক নিতে ভয় পান?


ক্রীড়া ডেস্ক জুন ২৩, ২০২৪, ১১:২০ এএম
মাহমুদউল্লাহ কি স্ট্রাইক নিতে ভয় পান?

ঢাকা : ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনাল। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্য শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন মাত্র ৯ রান। হাতে আছে ২ উইকেট। ক্রিজে আছেন নির্ভরযোগ্য ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ উল হক শেষ ওভারের বোলিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন অখ্যাত মিডিয়াম পেসার আইজাজ চিমাকে। মাত্র ১৪টি ওয়ানডে এবং ৭ টেস্টেই শেষ হয়েছে যার ক্যারিয়ার।

এমতাবস্থায় ম্যাচটা যে মাহমুদ উল্লাহই শেষ করে আসবেন―এ নিয়ে সংশয় ছিল না কারো। বাংলাদেশের সমর্থকরা তখন এশিয়া কাপ জয়ের আনন্দ উদযাপনের প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছে। কিন্তু সেই ফাইনালটাই হয়ে গেল বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে হতাশার, সবচেয়ে আফসোসের। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রাজ্জাককে স্ট্রাইক দিলেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে লেগবাই থেকে দৌড়ে এলো ১ রান। তৃতীয় বলে কোনো রান নিতে পারেননি মাহমুদ উল্লাহ।

শেষ তিন বলে তখন প্রয়োজন ৭ রান। চতুর্থ বলে ৩ রান নিয়ে রাজ্জাককে ফের স্ট্রাইক দেন মাহমুদউল্লাহ। যেটাকে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ওই সময়ের চরমতম ভুল সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখেন। পঞ্চম বলে বোল্ড হয়ে যান রাজ্জাক (৬)। শেষ বলটি নতুন ব্যাটার শাহাদাত ব্যাটে লাগাতে পারেননি। লেগবাই থেকে আসে ১ রান। মিরপুরের গ্যালারি স্তব্ধ করে ২ রানের জয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরে পাকিস্তান!

শুরুতে এত বড় গল্প ফাঁদার কারণ 'মাহমুদউল্লাহ'। শেষ ওভারে দলের যখন কিছু রান প্রয়োজন হয়, তখনই কেন যেন দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার! একবার নয়, বারবার তিনি এই কাজ করেছেন। ২০১২ এশিয়া কাপ একটা জ্বলন্ত উদাহরণ। একই কাজ তিনি করলেন গতকাল ভারতের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের ম্যাচে।

ভারতের ১৯৬ রান তাড়ায় বাংলাদেশের পরাজয় আরও আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৫৫ রানের। এই সমীকরণ মেলানো কোনোভাবেই সম্ভব না হলেও হার না মানা মানসিকতাটা অন্তত দেখানো যেত। ১০ বলে ২৪ রান করে যে মানসিকতা দেখিয়েছিলেন রিশাদ। কিন্তু শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ যেন নিজের উইকেট বাঁচাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। প্রথম বল ডট হওয়ার পর দ্বিতীয় বলেই স্ট্রাইক দিলেন শেখ মাহেদিকে। পরের বলে মাহেদি আবার মাহমুদউল্লাহকে স্ট্রাইক দিলেন।

বোঝা যাচ্ছিল না, এই দুই ব্যাটার আসলে করছিলেনটা কী! চতুর্থ বলে আবারও ডট। পঞ্চম বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে গেলেন ১৫ বলে ১৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ ম্যাচ হারল ৫০ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচেও তিনি এই কাজ করেছেন। লো স্কোরিং ম্যাচটাকে অযথা শেষ ওভারে নিয়েছেন। শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১১ রানের। প্রথম বৈধ বলেই জাকের আলীকে স্ট্রাইক দিলেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে ডাবলস নিয়ে তৃতীয় বলে আউট হলেন জাকের। পঞ্চম বলে নিজেই আউট হয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ।

জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ফিরে এসে প্রশংসা পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। একইসঙ্গে ফিরে পেয়েছেন ‘সাইলেন্ট কিলার’ ‘ফিনিশার’ ইত্যাদি বহুবিধ উপাধি। কিন্তু টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ৬ ইনিংসে ১৭.৮০ গড়ে তার সংগ্রহ মাত্র ৮৯ রান! সর্বোচ্চ ২৫। আসলে বিকল্প নেই বিধায় ২০-২৫ রান করলেই বাংলাদেশ দলে টিকে থাকা সম্ভব- এটা ভালোই জানেন মাহমুদউল্লাহ। সিনিয়র ক্রিকেটারদের এমন মানসিকতাই ছড়িয়ে পড়ে গোটা দলে। দলের জয়ের চেয়ে নিজের জায়গা বাঁচানোই তখন মূখ্য হয়ে ওঠে।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!