ঢাকা: ইউরোর রাউন্ড অব সিক্সটিনের সবচেয়ে বড় ম্যাচ ছিল এটিই। জার্মানির ডুসেলডর্ফে ফ্রান্স এবং বেলজিয়াম ম্যাচে ক্লাসিক ইউরোপিয়ান ফুটবল দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তরা।
দুই দলেই তারকার অভাব নেই। এককথায় উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচের প্রত্যাশা করাই স্বাভাবিক। কিন্তু মাঠের খেলায় দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
পুরো ম্যাচে ৪৫ শতাংশ বল ধরে রেখে বেলজিয়াম যেমন পারেনি আক্রমণে ভীতি ছড়াতে, তেমনি সুযোগ পেয়ে একের পর এক শট পোস্টের বাইরে রেখে বিরক্তি ধরিয়েছে ফ্রান্সের ফুটবল। তবু ৮৫ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোল আদায় করেছে ফ্রান্স। র্যান্ডাল কোলো মুয়ানির শট ইয়ান ভের্টনঘেনের পায়ে লেগে জড়ায় জালে।
১-০ গোলের ওই জয়ের সুবাদে কোনোক্রমে বেলজিয়াম বাঁধা টপকে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখল কিলিয়ান এমবাপ্পেরা। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে এসেও ইউরোতে এখন পর্যন্ত ওপেন প্লে থেকে গোল করা হলো না ফ্রান্সের। রাউন্ড অব সিক্সটিনেও গোল লেখা হয়েছে আত্মঘাতী হিসেবে। এবারের ইউরোতে তাদের ৩ গোলের দুটিই হলো আত্মঘাতী, অন্য গোল এসেছে পেনাল্টি থেকে।
হাইভোল্টেজ ম্যাচে শুরুটা হলো নিষ্প্রাণ। ফ্রান্স বল দখলে এগিয়ে ছিল বটে। কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি করার ক্ষেত্রে কোনো সময়েই আধিপত্য দেখাতে পারেনি। তারকাখচিত দলটা মাঝমাঠে আধিপত্য বিস্তার করলেও বারবার থেমেছে বেলজিয়াম ডিফেন্সের সামনে। ফাইনাল থার্ডে কার্যকরী পাস ছিল না বললেই চলে।
ডি-বক্সের ভেতর ৬ বার পেয়েও অন টার্গেট শটই নেওয়া হয়নি ১৮'এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। অরেলিন চুয়ামেনির দূরপাল্লার শট কিংবা মার্কাস থুরামের হেড কিছুটা উত্তাপ দিলেও খুব একটা ভয় ধরায়নি। বিপরীতে বেলজিয়ামের অবস্থা ছিল আরও নাজুক। কেবল একবারই ফ্রান্সের গোলমুখে শট নেয় তারা। ইয়ানিক কারাস্কোর সেই শট অবশ্য ব্লক হয়ে ফিরে আসে।
প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধেই বরং উত্তাপ ছড়ালো বেশি। গোলের নেশায় ফ্রান্স ধার বাড়ালো আক্রমণে। বেলজিয়ামও যেন বেরুতে চাইলো খোলস ছেড়ে। যদিও কেভিন ডি ব্রুইনাদের খেলায় দেখা গেল না সেই পূর্বের ছাপ। নিজেদের সোনালি প্রজন্ম যে বেলজিয়াম পার করে এসেছে, তা টের পাওয়া গেল আবারও।
৪৯ মিনিটেই আসতে পারত গোল। বক্সের বাইরে থেকে চুয়ামেনির শটে গোল হবে এমনটা ধরেই রেখেছিলেন অনেকে। অবিশ্বাস্য এক সেইভে সেটা ফিরিয়ে দেন বেলজিয়ান কিপার কোয়েন ক্যাস্টেলস। এক মিনিট পরেই মার্কাস থুরাম হয়েছেন হতাশ। ৫৪ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের অসাধারণ বাঁকানো শট চলে যায় গোলবারে বাতাস দিয়ে।
টানা আক্রমণে ফ্রান্স ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখে ৭০ মিনিট পর্যন্ত। শেষের আঁচ পেয়েই কি না আক্রমণে ধার বাড়ায় বেলজিয়াম। ৭১ মিনিটে রোমেলু লুকাকু আর ৮৩ মিনিটে ডি ব্রুইনাকে হতাশ করেছিলেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক মাইক মানিয়ান।
৮৫ মিনিটেই আসে ফ্রান্সের গোল। ছোট বক্সের খানিক বাইরে থেকে বদলি নামা কোলো মুয়ানি নিলেন দুর্বল এক শট। ভের্টনঘেনের দুর্ভাগ্য, বল লাগে তার পায়ে। দিক পরিবর্তন করে সেই বল চলে যায় জালে। ১-০ গোলের হারে বিদায় হয় বেলজিয়ামের।
এআর