ঢাকা : কেউ হাঁটুগেড়ে মাঠে বসে আছেন তো কেউ মুখ লুকাচ্ছেন দু হাতে। কারও দৃষ্টি শূন্যে তো কেউ উপুড় হয়ে পড়ে আছেন মাঠে। টাইব্রেকার শেষে ব্রাজিল দলের চিত্র এটি। কারও কারও চোখে পানি। বেদনায় বিধ্বস্ত সবাই। কোপা আমেরিকা অভিযান শেষ কোয়ার্টার-ফাইনালেই। এই হতাশা তো আছেই, কোচ দরিভাল জুনিয়রকে পেয়ে বসেছে আরেক দুর্ভাবনা। বিশ্বকাপে খেলতে পারবে তো ব্রাজিল?
দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এখন পয়েন্ট তালিকায় নাজুক অবস্থানে আছে ব্রাজিল। কোপা আমেরিকায় অভিযান শেষ হওয়ার পর ব্রাজিল কোচের এখন মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব উতরানো।
কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার-ফাইনালে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে উরুগুয়ের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে যায় ব্রাজিল। মূল ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্স ছিল একদমই ছন্নছাড়া ও ধারহীন। গোলশূন্য ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ব্রাজিলের প্রথম শটেই ব্যর্থ হন এদের মিলিতাও। পরে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। উরুগুয়ে জিতে যায় ৪-২ গোলে।
ব্রাজিলের পারফরম্যান্স অবশ্য অনেক দিন ধরেই এমন। চরম দুঃসময়ের মধ্যেই গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেন দরিভাল। এরপর তিনি বেশ কবারই বলেছেন, দলটাকে আগে গুছিয়ে নিতে চান তিনি। কোপা আমেরিকা থেকে বিদায়ের পরও সেই বার্তাই তিনি দিলেন।
এই দলটির গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কিংবা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলছে এখন। আমি মাত্র আট ম্যাচে দলটিকে কোচিং করিয়েছি এবং এই প্রক্রিয়াটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
এই পথচলায় যত প্রতিবন্ধকতা আসবে, সেসব নিয়ে আমরা সচেতন। তবে এটাও আমরা জানি যে, একটি নক-আউট ম্যাচে আমরা হেরে গেছি এবং এটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে কোস্টা রিকার সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পর দরিভাল বলেছিলেন, এই দলকে পুনর্গঠন করতে সময় লাগবে তার। বিদায়বেলাতেও একই কথা শোনালেন ৬২ বছর বয়সী এই কোচ। নিজেদের এই প্রচেষ্টায় তিনি উদাহরণ হিসেবে দেখছেন উরুগুয়েকে।
আমার মনে হয়, উরুগুয়ের জাতীয় দলের একটা ধরন আছে, খুবই চমৎকারভাবে যা ফুটে ওঠে। অনেক লম্বা সময় ধরে এই দলটা একসঙ্গে খেলে আসছে। শুরুতে ওদেরও কিছু সমস্যা ছিল, কিন্তু তারা তা শুধরে নিয়েছে। এখন তারা ফলাফল পাচ্ছে।
আমার ধারণা, আমরাও এরকম কিছু অর্জন করতে পারব, এটা নিয়ে কোনো সংশয়ই নেই। তবে সেসব শুভ শোধরানোর জন্য কিছুটা সময় আমাদের প্রয়োজন। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে বেশ কিছু সমস্যা আমাদের ছিল, পরে অনেক ভুল আমরা ঠিকঠাক করে নিয়েছি। এই অল্প সময়ে প্রক্রিয়াটা গতিময় করার কাজটি কঠিন ছিল। আমার মনে হয়, সামনে সেই সময়টা আমরা পাব।
গুছিয়ে নেওয়ার পথে সামনেই ব্রাজিলের মূল চ্যালেঞ্জ পরবর্তী বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করা। বাছাইপর্বে এখন তারা আছে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরে। ছয় ম্যাচ খেলে দুই জয় আর এক ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট মোটে সাত। সবার ওপরে থাকা আর্জেন্টিনার চেয়ে এখনই আট পয়েন্ট পেছনে আছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
দরিভালও বললেন, আপাতত তার ভাবনায় বাছাইপর্ব উতরানোর পথ বের করা।
আবারও বলছি, আমাদের গড়ে ওঠার, বিকশিত হওয়ার ও উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। আপাতত আমাদের মূল লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া। এখন আমরা পয়েন্ট তালিকায় (বাছাইপর্বে) ছয় নম্বরে আছি এবং তা নিয়ে মোটেও স্বস্তিতে নেই আমরা।
এমটিআই