ঢাকা : রিয়াল মাদ্রিদে খেলার যে তীব্র তাড়না, সেটির স্বাদ ও পুরস্কার যেন প্রথম ম্যাচেই পেয়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে প্রায় ৯ বছরের ক্যারিয়ারে ফরাসি লিগ জিতেছেন তিনি সাতবার। পিএসজির হয়ে জিতেছেন আরও গোটা দশেক ট্রফি। কিন্তু কোনো ইউরোপিয়ান শিরোপার ছোঁয়া পাননি। সেই অপূর্ণতা ঘুচে গেল রেয়ালের জার্সিতে প্রথম ম্যাচেই!
সেই উপলক্ষ নিজেও রাঙালেন তিনি গোল করে। সব মিলিয়ে স্বপ্নের ক্লাবে তার শুরুটা যেন এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। নতুন পথচলার শুরুতে এমন সাফল্যে এমবাপে দারুণ উচ্ছ্বসিত।
ইতালিয়ান ক্লাব আতালান্তাকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ জিতে মৌসুম শুরু করেছে রেয়াল মাদ্রিদ। পোল্যান্ডের ওয়ারশতে বুধবার স্প্যানিশ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা জিতেছে ২-০ গোলে। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ফেদে ভালভের্দে। পরে গোল করেন এমবাপে।
রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে এমবাপের খেলার স্বপ্ন যে একদম ছেলেবেলা থেকেই, সেটি জানে গোটা ফুটবলবিশ্ব। এই ক্লাবে তার আসা নিয়ে নাটকও কম হয়নি। কয়েক বছরের নানা গুঞ্জন ও ঘটনার পর অবশেষে ফ্রি ট্রান্সফারে এবার তিনি এসেছেন। প্রবল প্রত্যাশা ও কৌতূহলের কেন্দ্রে আছেন তিনি। শুরুতেই আভাস দিয়ে রাখলেন, এই ভার বইতে তিনি প্রস্তুত।
প্রিয় ক্লাবের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামা, প্রথমবার জালে বল পাঠানো, এই দিনটির স্বপ্ন বুনে আসছিলেন তিনি অনেক বছর ধরেই। ম্যাচ শেষে আবেগময় কণ্ঠে শোনালেন সেটিই।
দারুণ এক রাত এটি। আমার জন্যও অসাধারণ এক মুহূর্ত। এই জার্সি গায়ে চাপিয়ে এই ক্লাবের প্রতীক বুকে নিয়ে এই সমর্থকদের জন্য মাঠে নামা… এই মুহূর্তটির জন্য অনেক অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম।
তবে তার উচ্ছ্বাসের পুরোটায় শুধু তিনি আর তার প্রাপ্তিই নেই, বরং বেশির ভাগটা জুড়ে আছে দলের সাফল্য। রেয়াল মাদ্রিদে দলীয় অর্জনই শেষ কথা। নিজের গোলের চেয়ে তাই ট্রফি জয়কেই ওপরে রাখছেন এমবাপে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা শিরোপা জিতেছি, মাদ্রিদে এমন জয়ই সবসময় কাম্য। আমি খুবই খুশি। গোল করেও খুব ভালো লাগছে… আমার মতো একজন স্ট্রাইকারের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার অবশ্যই এই দলের হয়ে খেলতে পারা।
রেয়ালের দুটি গোলে এ দিন সহায়তা করেছেন ভিনিসিউস জুনিয়র ও জুড বেলিংহ্যাম। গত মৌসুমে রেয়ালের সাফল্যে এই দুজনের অবদান ছিল দারুণ। নতুন মৌসুমের শুরুটাও ভালো করলেন তারা।
তাদের প্রশংসাও করলেন এমবাপে। তার কণ্ঠে স্তুতি ফুটে উঠল গোটা দল নিয়েই।
তারা দুজন দুর্দান্ত ফুটবলার। তবে সব পজিশনেই দারুণ সব ফুটবলার আছে আমাদের। এই দলের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি খুশি। আমরা অবশ্যই আরও উন্নতি করব। সবে তো শুরু। আজকে প্রথম পদক্ষেপটা দারুণ ইতিবাচক হলো।
নতুন মৌসুমে ও নতুন ক্লাবের শুরুটা গোল দিয়ে করার পর প্রশ্ন উঠল, মৌসুমে গোলের ফিফটি কি করতে পারবেন? এমবাপের উত্তরে মিশে থাকল দলীয় সাফল্যের তাড়না।
যদি ৫০ গোল করতে পারি, তাহলে ৫০ তো হবেই… তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো দলের জয় ও দল হিসেবে উন্নতি করা। কারণ জিততে হবে দল হিসেবেই।
রিয়াল মাদ্রিদ অবশ্য ট্রফি জিততেই অভ্যস্ত। সেই দর্শন এখনই হৃদয়ে গেঁথে নিয়েছেন এমবাপে। সঙ্গে জুড়ে নিয়েছেন নিজেকেও।
আমরা রেয়াল মাদ্রিদ। আমাদের কোনো সীমা নেই, আমার কোনো সীমা নেই।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :