ঢাকা: ক্রীড়াঙ্গনে রাজনৈতিক প্রভাবের নেতিবাচক উদাহরণই হয়ে থাকার মতো ঘটনা দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। সরকার বদলের পর বাংলাদেশের ক্রিকেট ও ফুটবলসহ প্রায় সব খেলার নিয়ন্ত্রক সংস্থায় বদলের ডাক এসেছে।
সেই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আবাহনী ও শেখ জামাল। সরকার পরিবর্তন, ক্লাবে হামলা, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে বিগত এক যুগের অধিক সময় ধরে পৃষ্ঠপোষকতা করা প্রতিষ্ঠান সরে যাওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে সব দলের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র এ মৌসুমে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাফুফেকে। শেখ জামাল অফিসিয়ালি কিছু না জানালেও তারা খেলবে না বলে নিশ্চিত করেছে ক্লাব সূত্র। আর চট্টগ্রাম আবাহনীকে পৃষ্ঠাপোষকতা করে আসা প্রতিষ্ঠানও পিছুটান দেওয়ায় এই ক্লাবটির অংশ নেওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এই তিন ক্লাবের অংশ না নেওয়া মানেই প্রায় ১০০ ফুটবলারের ক্যারিয়ার অনিশ্চিত হওয়া। শনিবার পেশাদার ফুটবলাররা বাফুফে ভবনে গিয়ে ৭টি দাবি উপস্থাপন করেছেন। এরপর খেলোয়াড়রা বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের সাথেও দেখা করে তাদের আর্জি জানিয়েছেন। বাফুফে সভাপতির কাছে ফুটবলাররা যে ৭টি দাবি পেশ করেছেন, তার অন্যতম ছিল রোববারের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করা।
সেই দাবির পর থেকেই বাফুফে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া শুরু করে। খেলোয়াড়দের নিয়ে দেখা করার সুযোগ না পাওয়ার পর বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার রোববার দুপুরে গিয়েছিলেন উপদেষ্টার কাছে। তিনি ঘরোয়া ফুটবল নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে তা অবহিত করেছেন উপদেষ্টাকে।
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে খেলোয়াড়দের নিয়ে সাক্ষাতের একটা সময় চেয়েছিলাম। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় আমি একাই গিয়েছিলাম। ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে দেখা করে বিস্তারিত বলেছি। বর্তমান পরিস্থিতি তার কাছে তুলে ধরেছি। প্রিমিয়ার লিগের তিনটি দলের না খেলার কথা গণমাধ্যম ও খেলোয়াড়দের কাছে শুনেছি। তবে অফিসিয়ালি শুধু শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র শনিবার বিকেল ৫ টার পর জানিয়েছে তারা এবারের লিগে খেলবে না।
ফুটবলাররা আমাদের সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সভাপতি এরই মধ্যে কথা বলেছেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও চট্টগ্রাম আবাহনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে। সভাপতি এই তিন ক্লাবকে প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। এ পুরো বিষয়গুলো উপদেষ্টা মহোদয়কে অবহিত করেছি। তিনি বলেছেন, স্পন্সর সংগ্রহ ক্লাবগুলোর দায়িত্ব। এটা তাদেরই করা উচিত। তবে শেখ জামাল, শেখ রাসেল এই নাম নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ক্লাবগুলোর নিরাপত্তাসহ যে কোনো সহযোগিতা তারা করবেন।’
নাম নিয়ে সমস্যার প্রসঙ্গ আসলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘আসলে এটা উদ্বিগ্ন হওয়া। খেলোয়াড় ও ক্লাব কর্মকর্তারা আন-অফিসিয়ালি যে কথাগুলো বলেছেন, সেখানে নাম নিয়েই সংশয় ছিল। এর মধ্যে আবার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে ভাংচুর হয়েছে। সে কারণে নামের প্রসঙ্গটি এসেছে। অনেকে আন-অফিসিয়ালি বলেছে নামটা পরিবর্তন করা যায় কিনা।’
এআর