ঢাকা: সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র ছিল।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে আসাদুল মোল্লার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৭৪ মিনিটে সমতা ফেরান ভারতের রিকি মিতি হবাম।
শুরু থেকে রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণের ছকে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ভারত মেলে ধরে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা; তবে তাদের সব প্রচেষ্টাই মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে বাংলাদেশের রক্ষণে। পোস্টের নিচেও মেহেদী হাসান শ্রাবন ছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসী।
ত্রয়োদশ মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস ধরে গগমসার গয়ারির জোরালো শট কোনোমতে পা বাড়িয়ে আটকে দেন নেপাল ম্যাচে অভাবনীয় ভুলে গোল হজম করা শ্রাবণ। ষোড়শ মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া গয়ারির শট নেওয়ার আগেই নিখুঁত স্লাইডে ক্লিয়ার করেন কামাচাই মারমা। একটু পর আরেকটি প্রচেষ্টা রুখে দেন শ্রাবণ।
২৫ মিনিটের পর থেকে বাংলাদেশ একটু উপরে উঠে খেলার চেষ্টা করতে থাকে। ৩৫তম মিনিটে পাওয়া সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এগিয়েও যায় দল। বাম দিক থেকে রাব্বি হোসেন রাহুলের জোরালো আড়াআড়ি ক্রস গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় আসাদুল মোল্লার পায়ে। নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন এই তরুণ।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে খেলার চেষ্টা করতে থাকে বাংলাদেশ। ৫০তম মিনিটে কয়েক সতীর্থের পা ঘুরে বল পান পিয়াস আহমেদ নোভা। এই ফরোয়ার্ডের শট ফেরান ভারত গোলরক্ষক।
এরপরই একের পর এক আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় ভারত। মাংলেনথাং কিপজেনের বাঁ পায়ের শট পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়ার পর ৫৪তম মিনিটে ভারতের হতাশা আরও বাড়ে। সতীর্থের লম্বা পাস ধরে শ্রাবণকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন করু সিং থিংগুজাম, কিন্তু তার দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদের চেষ্টা বেরিয়ে যায় বাইরে দিয়ে। এরপর কেলভিন সিংয়ের শটও যায় অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে।
৬১তম মিনিটে থাংলাংসুন গাঙ্গতের দূরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট পোস্টের বাইরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়। চার মিনিট পর গোললাইন সেভে বাংলাদেশের ত্রাতা কামাচাই মারমা। গয়ারির চিপ পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা শ্রাবণকে ফাঁকি দিয়ে ছুটছিল জালের দিকে; গোলমুখ থেকে শেষ মুহূর্তের প্রচেষ্টায় ফেরান কামাচাই।
গয়ারিকে আটকাতে এসেই তার সাথে সংঘর্ষে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন শ্রাবন। বদলি নামেন আসিফ হোসেন। একটু পরই গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। বক্সের ভেতর থেকে নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন রিকি মিতে হোবাম।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কামাচাই মারমা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে আসিফ বীরত্বে সেমি-ফাইনালের বৈতরণী পেরিয়ে ফাইনালের মঞ্চে ওঠে বাংলাদেশ।
আগামী বুধবার শিরোপা লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের দেখায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের পর নেপালের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল মারুফুল হকের দল। সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগও এখন নোভা-আসিফদের সামনে।
এআর