• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

সাজিদ-নোমানের ঘূর্ণিতে ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ পেল পাকিস্তান


ক্রীড়া ডেস্ক অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ০২:৫৪ পিএম
সাজিদ-নোমানের ঘূর্ণিতে ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ পেল পাকিস্তান

ঢাকা: তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনারসহ পাকিস্তানের একাদশে স্পিনার পাঁচজন। তবে কাজ সেরে ফেললেন স্রেফ দুজনই। এক প্রান্তে অফ স্পিন, আরেক প্রান্তে বাঁহাতি অর্থোডক্স। 

স্পিন সহায়ক উইকেটে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইংলিশ ব্যাটিং বিধ্বস্ত করে ইতিহাসে নাম লেখালেন সাজিদ খান ও নোমান আলি। দুঃসময়ের দীর্ঘ প্রহর পেরিয়ে অবশেষে স্বস্তির সুবাতাসের খানিকটা ছোঁয়া পেল পাকিস্তান।

মুলতান টেস্টে সাজিদ-নোসানের স্পিন যুগলবন্দিতে ইংল্যান্ডকে ১৫২ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতা ফেরাল পাকিস্তান। ছয় টেস্টে টানা পরাজয়ের পর অবশেষে জয়ের স্বাদ পেল তারা। আর দেশের মাঠে তো আরো ভয়াবহ অবস্থা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর এই প্রথম জয় দেখল পাকিস্তান।

এই জয়ে স্বস্তির পরশ পেলেন শান মাসুদও। টানা ছয় হারের পর পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে তার প্রথম জয় এটি। জয়ের দুই কারিগর সাজিদ ও নোমান। একজন টেস্ট খেললেন দেড় বছর পর, আরেকজন ৯ মাস পর। ফেরার টেস্ট স্মরণীয় করে রাখলেন দুজনই। তাদের ফ্লাইট, টার্ন আর কার্যকর বোলিংয়ের জবাব ছিল না ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানে ৮ উইকেট শিকার করে রেকর্ড বইয়ে নাম তোলেন নোমান। পাকিস্তানের ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ৩৮ বছর পেরিয়ে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি। ৩৮ বছর ৮ দিন বয়সে ম্যাচটি শুরু করেন তিনি।

দুই ইনিংস মিলিয়ে তার প্রাপ্তি ১৪৭ রানে ১১ উইকেট। পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার আগের রেকর্ড ছিল সাঈদ আজমলের (৩৫ বছর ৩৪২ দিন)।

প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট শিকারি সাজিদ দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ২টি। সাজিদ ও নোমান মিলে ৫২ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটকে উপহার দিয়েছেন দারুণ এক কীর্তি। দুই বোলার মিলেই প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের সবকটি নেওয়ার নজির ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এই নিয়ে হলো মাত্র সপ্তমবার। 

সবশেষটি ছিল ১৯৭২ সালে। লর্ডসে সেবার ইংলিশ ব্যাটিং গুঁড়িয়ে টেস্ট অভিষেকেই দুই ইনিংসে ৮টি করে উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার বব ম্যাসি। বাকি চার উইকেট নিয়েছিলেন ডেনিস লিলি।

অনেক রেকর্ড-অর্জনের ভীড়ে ম্যাচ জিততে পারাই আপাতত পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তি। টানা ব্যর্থতার পথ ধরে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে হোয়াইওয়াশড হওয়ার ব্যাপার ছিলই, এই সিরিজের প্রথম টেস্ট ৫৫৬ রান করেও ইনিংস ব্যবধানের হার যেন তলানিতে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেটকে।

জয়ের খোঁজে মরিয়া পাকিস্তান দ্বিতীয় টেস্টের জন্য বেছে নেয় একই পিচকে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, উইকেটে যেন স্পিন ধরে। একাদশ সাজায় তারা স্পিনারে ঠেসে। শেষ পর্যন্ত সেই কৌশল সফল হলো। শুক্রবার দিনটি ছিল কার্যত এই পিচে নবম দিনের খেলা। উইকেট টার্ন মিলেছে অনেক। সাজিদ ও নোমান মিলে তা কাজে লাগিয়েছিলেন।

ইংল্যান্ডকে ২৯৭ রানের লক্ষ্য দিয়ে আগের দিনই দুই উইকেট নিয়ে কাজ এগিয়ে রেখেছিল পাকিস্তান। চতুর্থ দিনে টানা বোলিং করে এক সেশনেই কাজ শেষ করে দেন সাজিদ ও নোমান। দিনের শুরুতেই পাকিস্তানকে উইকেট এনে দেন সাজিদ। ২১ রান নিয়ে দিন শুরু করা অলিভার পোপ ফিরতি ক্যাচ দেন আর এক রান যোগ করেই।

একটু পর আরও বড় শিকার ধরেন নোমান। সুইপ করার চেষ্টায় এলবিডব্লিউ হন জো রুট। এরপর আর কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি। একের পর এক উইকেট ঝুলিতে ভরতে থাকেন নোমান। হ্যারি ব্রুক ফেরেন ১৬ রান করে। পাল্টা আক্রমণে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন বেন স্টোকস। চারটি চারে ৩৬ বলে ৩৭ রান করে স্টাম্পড হন ইংলিশ অধিনায়ক।

এরপর কেবল ম্যাচ শেষের অপেক্ষা। খানিকটা বিনোদন দিয়ে তিন ছক্কায় ২৭ রান করে বিদায় নেন ব্রাইডন কার্স। টানা দুই বলে উইকেট নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন নোমান। সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে।

স্কোরকার্ড
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৬৬

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৯১

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ২২১

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৯৭, ৩৩.৩ ওভারে ১৪৪। ফল: পাকিস্তান ১৫২ রানে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজের দুটি শেষে ১-১ সমতা। ম্যান অব দা ম্যাচ: সাজিদ খান।

এআর

Wordbridge School
Link copied!