ঢাকা: লাল বলে দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক তাইজুল ইসলাম। এই সংস্করণে আজ স্পর্শ করেছেন দুইশ উইকেটের মাইলফলক। তবে বাকি দুই সংস্করণে দলে নিয়মিত এই বাঁহাতি স্পিনার। যে কারণে ক্যারিয়ারে কখনোই খুব বেশি লাইম লাইট পাননি তিনি। যা নিয়ে খানিকটা আফসোস আছে তার।
সাকিব আল হাসান দলে থাকলে একাদশে সুযোগ হত না তাইজুল ইসলামের। কম্বিনেশনের কারণে তাকে বাইরে রাখা হত। সাকিবের ব্যাটিং শক্তি থাকায় তিনি তাই একাদশে ছিলেন নিয়মিত মুখ। তবে সাকিবের ক্যারিয়ার কানপুরেই শেষ হয়ে গিয়েছে বলাই যায়। যদিও ঘরের মাঠে শেষ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা হয়নি।
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে সাকিব দেশে আসতে পারেননি। তাই ক্যারিয়ারের শেষটা ঘরের মাঠ থেকে করতে পারলেন না। সোমবার সাকিবহীন প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই ৫ উইকেট পেয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। এদিন চতুর্থ উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ২০০ উইকেটের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন তিনি।
তাইজুলের আগে এমন কীর্তি শুধু ছিল সাকিবেরই। তবে এখানে সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে ছাড়িয়ে গেছেন অন্য একটি ক্ষেত্রে। আর সেটা ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে সাকিবের লেগেছিল ৫৪ টেস্ট, তাইজুল সেটা ছুঁলেন ৪৮ টেস্টেই। ৭১ ম্যাচে ২৪৬ উইকেট সাকিবের। আর ৪৮ টেস্টে তাইজুলের উইকেট সংখ্যা ২০১।
সাকিবের আড়ালে যে ছিলেন সেটা মেনে নিতে আবার দ্বিধা নেই তার। আবার তুলে ধরেছেন দেশের বাস্তবতা। যেখানে ফুটে উঠেছে ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’-এর বিষয়টিও। সাকিবের আড়ালে থাকার বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘আসলে আমাদের দেশে সত্যি কথা বলতে কী, অনেক সময় দেখবেন যে অনেক কিছুই মুখে মুখে হয় আর কী। মুখে মুখে বিষয়টা হলো, অনেকে আছে খারাপ করেও অনেক সময় আছে ট্রল হতে হতে তারকা হয়ে গেছে। আবার অনেক ভালো করে তারকা হতে পারেনি। এরকম অনেক হয়েছে। আমি এটা মেনে নিয়েছি। মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো (উপায়) নাই।’
২০১৪ সালে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাইজুলের। অভিষেকের পর থেকেই এই ফরম্যাটে দ্যুতি ছড়াচ্ছিলেন তিনি। এমনকি ওয়ানডে অভিষেক হ্যাটট্রিক শিকারিও প্রথম বোলার তিনি। তারপরও ঐ ফরম্যাটে নিয়মিত হতে পারেননি তিনি। এমনকি সাকিব থাকায় কম্বিনেশনের কারণে টেস্টের একাদশে সুযোগ পেতেন না অনেক সময়। যে কারণে পাকিস্তান ও ভারত সফরে সাকিব একাদশে থাকায় তিনি ছিলেন বেঞ্চে।
সংবাদ সম্মেলনে জানালেন তিনি সর্বোচ্চ আর ৫ বছর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারেন তিনি। উইকেট সংখ্যাটা তাই কততে দেখতে চান? জানতে চাইলে বলেন, ‘দেখতে হবে ঐ সময়ের মধ্যে কত টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। তারপর হিসেব কষতে পারব।’
সাকিবের সঙ্গে তাইজুলে পার্থক্য কী? জানতে চাইলে তাইজুল বলেন, ‘এখানে অনেক ব্যাপার আছে। এটা প্লেয়িং কন্ডিশনের ব্যাপার। ২-৩ বছর বা ৪-৫ বছর পর আমি হয়ত দলকে সেভাবে সাপোর্ট নাও দিতে পারি। আমার ব্যাকআপ যে আছে, সে হয়ত বেশি রোল প্লে করবে। অনেক সময় ফ্ল্যাট উইকেট দিয়েছে, অনেক বল করা লাগবে, তখন হয়ত আমি বেশি বল করেছি সাকিব ভাই ঐ পরিমাণ এফোর্ট দিতে পারেনি।
আবার দেখা গেছে কন্ডিশন আলাদা, অনেক স্পিন ধরছে, সাকিব ভাইয়ের যেহেতু অনেক ভ্যারিয়েশন ছিল সাকিব ভাই বেশি বল করেছে। এখানে রানের ব্যাপার থাকে, ডিফেন্সের ব্যাপার থাকে, কিছু ক্ষেত্রে অ্যাটাকের ব্যাপার থাকে। সব মিলে এ জিনিসগুলো ঘটে। পার্থক্য একটা জিনিস- আমি অনেক সময় ধরে বল করতে পারি। আমাকে যদি বলে টানা ১৫-২০ ওভার করতে, আমি করতে পারব। এরকম কিছু ব্যাপার থাকে।’
এআর