ঢাকা: দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০১ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে পিছিয়েও ১০১ রানে। ওপেনার মাহমুদুল ৩৮ আর মুশফিকুর রহিম ৩১ রান নিয়ে আগামীকাল তৃতীয় দিন শুরু করবেন।
বাংলাদেশ সমর্থকেরা নিশ্চয় চাইবেন, কাল এ দুজনের মধ্যে অন্তত একজনের ইনিংস তিন অঙ্কে পৌঁছাক। নয়তো আরেকটি পরাজয় চোখরাঙানি দিতে থাকবে। এদিকে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর বেহাল দশা।
মিরপুর টেস্টে শুরুর আগে ৩ সংস্করণ মিলিয়ে সর্বশেষ ৩০ ইনিংসে ফিফটি মাত্র একটি। এমন বাজে ফর্ম নিয়ে পরশু ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে নাজমুল জানান, তার ব্যাটিং জ্ঞান সাংবাদিকদের চেয়ে বেশি। কোন পিচে কী ধরনের শট খেলতে হবে, সেটাও তার জানা।
কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়কের কথার সঙ্গে কাজের মিল পাওয়া গেল না খুব একটা। কাল টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনে ৭ রান করে আউট হওয়া নাজমুল দলের প্রাথমিক বিপর্যয়ে আজ আবারও হাল ধরতে ব্যর্থ। কেশব মহারাজের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ার আগে করতে পেরেছেন ২৩ রান।
অথচ বাংলাদেশে তো বটেই, এশিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্টে ব্যাটিং করতে নেমেই কাইল ভেরেইনা পেয়ে গেছেন সেঞ্চুরির দেখা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপদে হাল ধরে চুপচাপ নিজের কাজটা করে গেছেন। প্রথমে উইয়ান মুল্ডারের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ১১৯, পরে ডেন পিটের সঙ্গে নবম উইকেটে গড়েছেন ৬৬ রানের জুটি। ভেরেইনা, মুল্ডার ও পিটের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়েই প্রথম ইনিংসে ২০২ রানের লিড নিতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
কাল টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে বাংলাদেশ অলআউট হয় মাত্র ১০৬ রানে, যা মিরপুরে এক ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। তবে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করে। তখন অনেকেই ধরে নেন, আজ প্রথম সেশনের শুরুতেই বাকি ৪ উইকেট তুলে নিয়ে সফরকারীদের লিড খুব বেশি বাড়তে দেবেন না বাংলাদেশের বোলাররা।
কিন্তু ভেরেইনা-মুল্ডার যেন আজ ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলেন। ক্রিজে আঁকড়ে পড়ে না থেকে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছেন, দুজন সুইপ শট খেলার হিড়িক লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগমুহূর্তে হাসান মাহমুদ টানা দুই বলে মুল্ডার ও কেশব মহারাজকে আউট করলেও পিটের সঙ্গে আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন ভেরেইনা। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসটা লম্বা হয় মধ্যাহ্ন বিরতির পর আরও সোয়া এক ঘণ্টা। প্রোটিয়াদের শেষ দুটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ভেরেইনা শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগেই সফরকারীদের সংগ্রহ ৩০০ আর লিড ২০০ পেরিয়ে যায়।
ইতিহাস বলছে, প্রথম ইনিংসে ২০০ বা তার চেয়ে বেশি রানে পিছিয়ে থাকার পর বাংলাদেশ কোনো টেস্ট জিততে পারেনি। হার এড়াতে পেরেছে মাত্র ৩ বার, যার দুটিতেই ছিল বৃষ্টির আশীর্বাদ। এবার কী হবে, তা আগামীকালই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :